নারীর ক্ষমতায়নঃ অগ্রগতির পথে এক ধাপ

2313

Published on ডিসেম্বর 8, 2013
  • Details Image

বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। অর্থাৎ দেশে মোট কর্মক্ষম মানুষের একটি বড় অংশ নারী। বর্তমানে পোশাক শিল্প থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত সকল পর্যায়ে নারীদের অংশগ্রহন লক্ষণীয়। এর সবই সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উদার ও নারীবান্ধব নীতিমালা প্রণয়নের ফলে। নারীদের নিরাপদ মাতৃত্ব, উচ্চশিক্ষা ও কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা প্রদান করতে বর্তমান সরকারের উদ্যোগ লক্ষণীয়।

মুক্তিযুদ্ধকালে ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের পুনর্বাসন ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সৃষ্ট ‘নারী পুনর্বাসন বোর্ড’ গঠনের মাধ্যমে দেশে নারী উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। 

২০১০ সালে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা হয়। ২০১১ সালে নারী ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে একটি যুগোপযোগী ‘জাতীয় নারী নীতিমালা’ প্রণয়ন করা হয়। এই নীতিমালার মাধ্যমে নারীদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়। 

নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে মাতৃকালীন ছুটি পুর্ন গড় বেতনে ৪ মাস থেকে ৬ মাসে বর্ধিত করা হয়েছে। মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান কর্মসুচীর আওতায় ৩ লক্ষ ৭০ হাজার ৪০০ জনকে মাসিক ৩৫০ টাকা হারে ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ১৬১ কোটি টাকা ভাতা প্রদান করা হয়েছে।

খাদ্য ও জীবিকা নিরাপত্তা নিশ্চিতে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় ৩৩ লক্ষ দরিদ্র, দুস্থ, বিধবা ও বয়স্ক নারীকে মাসিক ভাতা দেওয়া হচ্ছে। 

নারীদের দারিদ্র্যমুক্ত করা এবং দুস্থ মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হচ্ছে। 

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পীকারসহ সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতি, সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, ব্যাংক, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে নারীরা দায়িত্ব পালন করছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও নারী পুলিশরা শান্তিরক্ষী হিসেবে অবদান রাখছেন। সরকারী চাকরিতে নারীর জন্য কোটা সংরক্ষণ করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে শতকরা ৬০ ভাগ নারী কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। সংসদে নারী আসন ৫০ এ উন্নীত করা হয়েছে। 

সকল উন্নত দেশেই নারীর স্বাধীনতা অনেক গুরুত্ব পেয়ে আসছে, কিন্তু তাদের তুলনায় বাংলাদেশের নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তুলনামুলক ভাবে অনেক বেশি। ঘরে বাইরে সকল ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহন এখনো কাম্য পর্যায়ে পৌঁছায়নি, কিন্তু এই লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের উদ্যোগ এবং প্রচেষ্টা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। নারীমুক্তির সংগ্রামে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের অনেক ক্ষমতাশালী দেশকে ছাড়িয়ে গেছে এবং অদূর ভবিষ্যতে বাংলার নারীসমাজ দেশের উন্নয়ন ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় সুস্পষ্ট ভুমিকা পালন করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত