ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়ঃ বিপ্রেশ রায়

2653

Published on এপ্রিল 1, 2018
  • Details Image

স্বামী বিবেকানন্দের একটি উক্তি আছে— "এই পৃথিবীতে এলি যখন, দাগ কেটে যা।" আর এই দাগটি যখন কোনো যুবক কাটে, এই যুবকটি যখন লাখো লাখো যুবককে পথ দেখায় তখন আমি কিন্তু ঠিকই আলোড়িত হই, কারণ আমি যুবক। যৌবন আমার ধর্ম। তাই যুবকের ভালো কাজগুলো আমায় আলোড়িত করে, ঠিক তেমনি খারাপ কাজগুলো আমায় তাড়িত করে। আমি না চাইলেও এর দায়ভার আমার উপর বর্তায়। কারণ আমি যে বিশাল যুব সমাজের একজন সদস্য। বাঙালির বায়ান্ন, বাষট্টি, ঊনসত্তর, সত্তর, একাত্তর, নব্বই প্রতিটি ক্ষেত্রেই যুবকরা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। আবার আজকের সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ ধ্বংসের জন্য নেতিবাচক কাজে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে তারাও এদেশেরই যুব সমাজের অংশ। ধর্ষণ, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতন, শিক্ষক পেটানো, বোমাবাজি সব বিষয়ে তারা আজ ডক্টরেট ডিগ্রিধারী! তবে তাদের সংখ্যাটা খুব কম, আর সেটাই হচ্ছে আশার কথা। কিন্তু তারা সংখ্যায় কম হলেও তাদের প্রভাব বিশাল। আর এই বিপদগ্রস্ত যুব সমাজকে উদ্ধারের জন্য, সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল তাদের সামনে নেতৃত্ব দানকারী একজন রোল মডেল। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। এদের সামনে যদি একজন পথপ্রদর্শক দাঁড়িয়ে যায়, তবে এদেশের যুবকরা আবার ফিরে পাবে তার হারানো ঐতিহ্য।

মূসা ইব্রাহীমের এভারেষ্ট জয় কিংবা সাকিব আল হাসানের বিশ্ব সেরা অল রাউন্ডারের খেতাবগুলো যুব সমাজের জন্য রোল মডেল হলেও যুব সমাজের গতিপ্রকৃতি পরিবর্তনের জন্য যথেষ্ট ছিল না।

যুব সমাজের পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন ছিল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যুব সমাজের মধ্যে একটি সামগ্রিক পরিবর্তন আনা। অর্থাত্ জীবন প্রকৃতির পরিবর্তন। আর বর্তমান বিশ্ব হচ্ছে গতিশীল বিশ্ব, তথ্য প্রযুক্তিময় বিশ্ব। জীবন প্রকৃতির পরিবর্তন বলতে বুঝায়— তথ্য প্রযুক্তিময় বিশ্বের দিকে ধাবিত হওয়া। আর এই তথ্য প্রযুক্তিময় বিশ্ব থেকে গত কয়েক বছর পূর্বেও বাংলাদেশ ছিল যোজন যোজন দূরত্বে। কয়েক বছর পূর্বে বর্তমান সরকার তার নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলেন। তখন এ শব্দটি ছিল সকলের কাছে অপরিচিত। কিন্তু আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ তরুণ প্রজন্মের কাছে সবচেয়ে আপন শব্দ। তাদের চলনে, বলনে, অস্থিমজ্জায় এই শব্দটি মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। এখন ডিজিটাল বাংলাদেশের অর্থ অজপাড়াগাঁয়ের কৃষকও বোঝেন। ডিজিটাল শব্দটি বহুজনের কাছে বহুমাত্রিকতা পেয়েছে। একজন কৃষকের কাছে ডিজিটাল মানে কৃষি সম্পর্কিত তথ্য, একজন ছাত্রের কাছে ডিজিটাল মানে শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়াদি, একজন রোগীর কাছে ডিজিটাল মানে চিকিত্সা সংক্রান্ত সেবা, একজন বিপ্লবীর কাছে ডিজিটাল মানে বিপ্লবের মূল মন্ত্র। কাদের মোল্লার রায়ের পর সকল প্রতিবাদ এক হয়ে শাহবাগের জন্ম দিয়েছিল, তা এই ডিজিটালেরই ফসল। ফেসবুকের মাধ্যমে লাখ লাখ তরুণ এসে মিশে শাহবাগের জন্ম হয়েছিল। পরে সমাজের সকল শ্রেণির মানুষ এ আন্দোলনে একীভূত হয়েছিল।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে ডিজিটাল শব্দটির ব্যাপকতা এতো বেশি যে তা বলে শেষ করা যাবে না। এক কথায় ডিজিটাল ছাড়া চলেই না। আর এই ‘ডিজিটাল’ শব্দটির যিনি রূপকার তিনি হলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা, আইটি বিশেষজ্ঞ সজীব ওয়াজেদ জয়। যার কারণে আজ বাংলাদেশ তথ্য প্রযুক্তিময় বিশ্বের শুধু সদস্য নয়, বরং তথ্য প্রযুক্তিময় বিশ্বে নেতৃত্ব দেওয়ার স্বপ্ন দেখছে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ সৃষ্টিতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাঁর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমুদ্র বিজয়ের মাধ্যমে দ্বিতীয় বাংলাদেশের সৃষ্টিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এখন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করার লক্ষ্যে। তাঁদের এই উত্তরসূরী সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি আজ লাখো বাঙালি তরুণের রোল মডেল। এদেশের তরুণদের তিনি যেভাবে পথ দেখিয়েছেন, ডিজিটালের আলোয় আলোকিত করেছেন তা দেশের ভবিষ্যত্ অগ্রযাত্রায় তাৎপর্যপুর্ন অবদান রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।

লেখক : কর্মকর্তা, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সিলেট

সৌজন্যেঃ দৈনিক ইত্তেফাক

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত