বিয়ন্ড দ্যা প্যানডেমিকঃ আওয়ামী লীগের আলোচনায় সংকট সমাধান ও ভবিষ্যত বাংলাদেশ

1994

Published on জুলাই 9, 2020
  • Details Image

করোনাভাইরাসের সংক্রমনের শুরুতেই দেশব্যাপি ‘সাধারণ ছুটি’ ঘোষণা করে সরকার। সব ধরনের সমাবেশ, মিটিং এ নিষেধাজ্ঞা জারি করার পাশাপাশি সীমিত হয়ে যায় দৈনন্দিন জীবনের সকল কর্মকাণ্ড। রাজনৈতিক দলগুলোর নিয়মিত কর্মসূচীতেও ছেদ পড়ে। কিন্তু থেমে থাকেনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। একদল কর্মঠ তরুনের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফর্মেশন নিয়মিতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দলের কর্মকান্ড পরিচালনার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।

করোনাভাইরাস সম্পর্কিত সকল তথ্য অনলাইনে প্রচার করা ছাড়াও সাধারণ মানুষের ভাবনার কথা, আশংকার কথা শুনে তার সমাধান বের করা, করোনা মোকাবেলায় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরার পাশাপাশি করোনা-পরবর্তী ভবিষ্যত বাংলাদেশ গঠন নিয়ে আলোচনা করছে বিশেষ ওয়েবিনার ‘বিয়ন্ড দ্যা প্যানডেমিক’। গত মে মাস থেকে নিয়মিত আয়োজন করা হচ্ছে এই ওয়েবিনার। প্রতিটি পর্বের সঞ্চালনা করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলি ফরহাদ।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ (https://www.facebook.com/awamileague.1949 ) এবং ইউটিউব চ্যানেলে (https://www.youtube.com/user/myalbd ) সরাসরি প্রচারিত হয় এই অনুষ্ঠান। এ পর্যন্ত ১০টি পর্বের প্রচারিত হয়েছে। এসকল পর্বে আলোচনা করা হয়েছে জনসচেতনতা তৈরি, সংকট মোকাবেলায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের প্রচেষ্টা, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম, তরুণদের ভূমিকা, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, করোনা-পরবর্তী সময়ে নতুন কর্মসৃজন ইত্যাদি বিষয়ে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তার পাশাপাশি এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পর্বে যুক্ত হয়েছেন তরুণ উদ্যোক্তা, সংগঠক, সাংবাদিক, স্বেচ্ছাসেবীরাও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন আলোচনায় উঠে আসা সাধারণ মানুষের প্রশ্ন নিয়েই সাজানো হয় প্রতিটি পর্ব। তাই এখানে অনেক যুক্তিতর্কেরও সৃষ্টি হয় যার ফলে একটি জবাবদিহিতার জায়গাও সৃষ্টি করেছে এই বিশেষ ওয়েবিনার ‘বিয়ন্ড দ্যা প্যানডেমিক’।

প্রথম পর্বঃ

বিয়ন্ড দ্যা প্যানডেমিক-এর প্রথম পর্ব প্রচারিত হয় ১৫ই মে। এই পর্বের বিষয় ছিল ‘করোনা মোকাবেলায় জনসচেতনতা’ যেখানে অন্যতম অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ডঃ হাছান মাহমুদ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কি কি জনসচেতনতামূলক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে উপস্থাপকের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী ডঃ হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ টেলিভিশনে আমরা বিভিন্ন সচেতনতামূলক ভিডিও নির্মাণ করে প্রচার করি এবং বিভিন্ন ডাক্তারদের নিয়ে করোনা সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করি যা এখনো চলমান রয়েছে। বাংলাদেশ বেতারেও আমরা সমানতালে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান প্রচার করেছি।

ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচারণার জন্য তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে সেই ব্যাপারে উপস্থাপক জানতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ভাবনার কারণেই করোনা ভাইরাসের এই সময়ে দেশের ১৭ কোটি মানুষ এতো অল্প সময়ে স্বাস্থ্য সেবা, নিত্য খাদ্য সহায়তা, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নগদ অর্থ এতো সহজে মানুষের কাছে পৌছানো যেতোনা”।

দ্বিতীয় পর্বঃ

১৯ মে প্রচারিত দ্বিতীয় পর্বের বিষয় ছিল করোনাভাইরাস সংকটে মানবিক সহায়তা’ যেখানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন এবং ভাতৃপ্রতিম সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ। সারাদেশে করোনাসংকট মোকাবেলায় দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীদের প্রয়াসের কথা বর্ননা করেন তারা।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি বলেন, 'শুধু সরকার নয়, আমাদের জনগণকেও, যেমন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ব্যক্তি বিশেষ... আমরা যেন সমাজের একজন আরেক জনের পাশে দাঁড়াই। সরকারের পাশাপাশি আমাদের যার যতটুকু আছে, আমরা আমাদের পাশের মানুষটির পাশে দাঁড়াব।'

আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আমরা যখন বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস নিয়ে কাজ করছি তখন আম্ফান নামে আরো একটি দুর্যোগ আমাদের সামনে। দেশের ১৯টি কোস্টাল এরিয়ার মানুষ এখন উদ্বিগ্ন। আর এই দুর্যোগের প্রস্তুতিও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিয়েছে।

ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন ‘সারাদেশ ব্যাপী প্রায় ৬০টি সাংগঠনিক জেলা ও ২০০ উপজেলায় করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ছিলো ৫০ হাজার উন্নত মানের মাস্ক, ২০ হাজার হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ৫ লক্ষ এন্টিসেপটিক সোপ, ২৫০০ পিপিই ও ১০০ থার্মাল থার্মোমিটার। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক দল ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে এসব সামগ্রী প্রদান করে হয়েছে’।

আওয়ামী কৃষকলীগের সভাপতি সমীর চন্দ বলেন, ‘কৃষকের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে, মহামারি করোনা ভাইরাস মোকাবেলার জন্য কৃষকের সচেতন করার লক্ষ্যে গনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়েছে’।

আওয়ামী যুবলীগের সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল জানান, ‘করোনা ভাইরাসের শুরুর থেকে সারাদেশে জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরন, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরন করা হয়। এছাড়া জনসচেতনতামূলক একটি রেকর্ডিং মাইকিং করার জন্য সারাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয় জনগনকে সচেতন করতে’।

আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের শুরুর থেকে সারাদেশে জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরন, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরন, এছাড়া জনসচেতনতামূলক একটি রেকর্ডিং সারাদেশে মাইকিং করার জন্য পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া করোনাকালীন সময়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা কর্মীরা সারাদেশে ত্রান বিতরন করে।

তৃতীয় পর্বঃ

‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালুঃ বাস্তবতা ও চ্যালেঞ্জ’ এই বিষয়কে সামনে রেখে আয়োজন করা হয় বিয়ন্ড দ্যা প্যানডেমিকের চতুর্থ পর্বের। ৩০ মে প্রচারিত এই পর্বে আলোচকদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি, আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান এবং উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বিক বিবেচনায় জীবন এবং জীবিকার দুটো পথই খুলে দিয়েছেন। কারণ আমরা দেখেছি, লাখ লাখ মানুষ জীবিকার জন্য কর্মে যোগ দিতে চলে আসে তখন তাদের সুযোগ দিতে হবে। এতে বাধা দিলে উন্নয়নশীল একটি দেশ মুখ থুবড়ে পড়বে।”

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, সারা বিশ্ব যখন ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করতে যাচ্ছে তখন ‘গ্লোবাল ভিলেজের’ অংশ হিসেবে বাংলাদেশকেও ‘সঠিক সিদ্ধান্ত’ নিতে হত।

“এ রকম একটি বিষয় যে শুরু হয়েছে সেক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলো ইউরোপ, আমেরিকা, জার্মানি, স্পেন, এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ধাপে ধাপে চালু করে দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ যেহেতু সারা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন দেশ নয়, তার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সারা বিশ্বের সাথে, গ্লোবাল ভিলেজের পার্ট কিন্তু বাংলাদেশ। বাংলাদেশকেও কিন্তু এখন সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।

“সরকার ত্রাণ সহায়তা প্রদান শুরু করলেও জনসাধারণ তার প্রয়োজনের তাগিদেই যখন ঘর থেকে বের হয়ে আসছিলেন, সে প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড সচল করতে প্রধানমন্ত্রী সব দিক বিবেচনা করেই লকডাউন তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”

এই সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানুষ কাজ করতে পারবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, “জীবন ও জীবিকা একটা আরেকটার পরিপূরক, জীবন না থাকলে জীবিকা অর্থহীন হয়ে পড়ে। তেমনি জীবিকা না থাকলে জীবন অর্থহীন হয়ে পড়ে।”

আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, “এ বছর তৈরি পোশাক শিল্পে ২৩ বিলিয়ন ডলারের মতো রপ্তানি হতে পারে। এটা আমাদের রপ্তানির প্রায় অর্ধেক। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে আমাদের অর্থনীতির ওপর কোভিড-১৯ এর প্রভাব কী পরিমাণ হয়েছে। জীবন ও জীবিকা উভয়কেই আমাদের চালু রাখতে হবে।

চতুর্থ পর্বঃ

করোনা সংকটে জনপ্রতিনিধিদের করণীয় শীর্ষক এই পর্ব প্রচারিত হয় ২ জুন। আলোচক হিসেবে যুক্ত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি।

আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিদের কর্মকান্ড মুল্যায়ন করতে গিয়ে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ এমপি বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর পরই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের নীতি-নির্ধারণী ফোরামের সাথে আলোচনা করে জনপ্রতিনিধি, চিকিৎসক ও দেশবাসীকে কিছু নির্দেশনা দেন। এই রোগ যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে জন্যে সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন। এবং সারা দেশে কর্মহীন প্রায় ৬ কোটি মানুষের মাঝে আওয়ামী লীগ সভাপতি খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন এবং প্রতিটি এলাকার সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা যার যার জায়গা থেকে সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায়।

ত্রাণে অনিয়ম বিষয়ক প্রশ্নের জবাবে এস. এম কামাল হোসেন বলেন, ৬১৫৭৯ জন জনপ্রতিনিধির মাঝে ৭২ জন জনপ্রতিনিধি ত্রাণে অনিময় করেছে। মাত্র ০.১৩ ভাগ জনপ্রতিনিধি এ অনিয়মের সাথে জড়িত ছিলো। স্থানীয় সরকার তাদেরকে যেমন বহিষ্কার করেছে তেমন আওয়ামী লীগ দল থেকেও তাদের বহিষ্কার করেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন ভিত্তিহীন সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে তা যাচাই করে আসতে আসতে যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে যায় এক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিরা কি ভূমিকা রাখতে পারেন এমন প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, অনেক জনপ্রতিনিধি নিজের টাকা দিয়ে চাল কিনে এনে বিতরণ করেছেন কিন্তু সরকারী চাল বলে অনেকের নামে অভিযোগ করা হলো। দুই একজন জনপ্রতিনিধি যে আত্মহত্যা করেননি এইটা আমার কাছে অবাক করা বিষয় মনে হয়। ত্রাণ বিতরণের প্রথম দিকে কিছু গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক দলের উস্কানিতে ৭০- এর দশকে বঙ্গবন্ধুর সময়ের একটি ঘটনা পুনরাবৃত্তির অপচেষ্টা চালানো হয়েছিলো। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের আত্মাহুতি দেয়ার মাধ্যমে জননেত্রী শেখ হাসিনার ত্রাণ কার্যক্রমকে তারা সফলতায় পরিণত করেছে।

পঞ্চম পর্বঃ

করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে ৬ই জুন আয়োজিত হয় পঞ্চম পর্ব। এই পর্বে আলোচকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আ ফ ম রুহুল হক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা।

অনুষ্ঠানে করোনা মোকাবেলায় সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে আ ফ ম রুহুল হক বলেন, “করোনাসংকটের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর অবস্থান এবং দুরদর্শী নীতি নির্ধারনের কারনে আমরা এখনও এই ভাইরাসের কাছে হেরে যাই নি। তিনি বিভিন্ন সেক্টরের মানুষের কথা ভেবে যেসকল প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন তা বিশ্বের অনেক দেশেই করেনি।“

র‍্যাপিড টেস্ট কিট বাংলাদেশে ব্যবহার করা উচিত কিনা এমন এক প্রশ্নের উত্তরে আলোচনায় উপস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল জানান, এখনো পৃথিবীতে এমন কোন কিট নেই, যেটা দিয়ে আস্থার সঙ্গে বলা যায় কোভিড-১৯ পজিটিভ, নাকি নেগেটিভ। এটা বিশ্বের অন্য যে কোন দেশ থেকে এনেও যদি আমরা ব্যবহার করি তাহলে ঝুঁকি থেকে যাবে। যে মানুষগুলো সংক্রামিত, তারা মনে করবেন সংক্রামিত নন। ফলে রেড জোনগুলো গ্রিন জোন হয়ে যাবে। এই মানুষগুলো ঘুরে বেড়াবে। ফলে সংক্রমণ বাড়বে।

ষষ্ঠ পর্বঃ

করোনাসংকটের মধ্যেই ২০২০-২১ সালের বাজেট ঘোষণা করে সরকার। জীবন-জীবিকার এই বাজেট নিয়ে আয়োজন করা হয় ১৬ই জুন প্রচারিত ষষ্ঠ পর্বের। এই পর্বে আলোচকের মধ্যে ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।

এবারের বাজেটের পরিকল্পনা নিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমাদের সরকার প্রধানের প্রথম চিন্তা ছিলো করোনা ভাইরাস ঠেকানো। তাই প্রথমেই তিনি স্বাস্থ্যখাতে নজর দিলেন। দ্রুততম সময়ের মাঝে ডাক্তার নিয়োগ, পিপিই, মাস্ক আমদানিসহ স্বাস্থ্যখাতে যারা জড়িত যেমন ডাক্তার, নার্সদের কল্যাণে প্রণোদনার ব্যবস্থা করেন তিনি। পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করোনা ভাইরাসে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের খাদ্য সহায়তা নিশ্চিতে কাজ শুরু করেন। সর্বোপরি দেশের ব্যবসা বাণিজ্য স্থিতিশীল রাখতে ১ লাখ ২ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকার ১৯টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন।

শ্রমিক ছাঁটাই নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করোনা শুরুর প্রথম থেকেই তিনি বলেছেন, কোন শ্রমিক যাতে কষ্ট না পায়। সে জন্যেই তিনি করোনা শুরুর একেবারেই প্রথম থেকে শ্রমিকদের বেতন ভাতা নিশ্চিতের জন্য ৫০০০ কোটি টাকা প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। আগস্টের মাঝামাঝিতেই এই খাত ঘুরে দাঁড়াবে। তাই কোনভাবেই শ্রমিক ছাটাই আমরা এক্সেপ্ট করিনা।

জ্বালানী খাতের কার্যক্রম নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, “আমাদের টার্গেট হচ্ছে স্বল্পমূল্যে জ্বালানী সকলের নিকট বিতরণ করার পাশাপাশি আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ করা। এবং এই পরিস্থিতির মাঝেও আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সফলভাবে কাজ পরিচালনা করে যাচ্ছে। এই সিচুয়েশনেকে আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। আশা করি আমরা ভালো করতে পারবো।

সপ্তম পর্বঃ

২৭ জুন প্রচারিত এই পর্বের বিষয় ছিল ‘জনস্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকার’ যেখানে আলোচকদের মধ্যে ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এমপি এবং সারাদেশের পাঁচটি সিটি কর্পোরেশনের মেয়র।  

এলজিআরডি মন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, “সামাজিক পরিবর্তনের জন্য এবং মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরনের জন্য যে প্রতিষ্ঠানটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ন দ্বায়িত্ব পালন করতে পারে সেটা স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনা। যদি জনপ্রতিনিধিদের কে তাদের স্বীয় দ্বায়িত্বটি পালনের জন্য আমরা সক্ষম করে গড়ে তুলতে পারি তাহলে সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশকে ব্যপক উন্নতি করা অসম্ভব কিছু না।“

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা আমাদের দ্বায়িত্ব পালন করতে সর্বদা চেষ্টা করবো, সেই সাথে জনগনকেও সচেতন হতে হবে”।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ডেঙ্গু প্রকোপ কমাতে এবং মশকের প্রজনন ক্ষেত্রগুলোকে নিধন করার জন্য সকল জলাবদ্ধ লেক ও জলাশয় গুলোকে পরিষ্কার করছি সেই সাথে তেলাপিয়া মাছ এবং হাস চাষ শুরু করেছি যাতে ডেঙ্গুর লাভা বংশবিস্তার না করতে পারে।

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন মেয়র এ.এইচ.এম. খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, করোনার শুরুতে আমরা রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আমরা পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়। ক্রমান্বয়ে স্বেচ্ছাসেবী সহ কর্মকর্তারা প্রতিওয়ার্ডে সচেতনামূলক কাজ করা হয়। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার পরে শহয়ে ইতিমধ্যে বেসরকারিভাবে একটি হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে, যা সিটি কর্পোরেশন এর সাথে এক যোগে কাজ করবে।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন মেয়র সেলিনা হায়াত আইভি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫ সদস্যের টিম করে কাজ করা হচ্ছে। করোনা সংক্রমণ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ হটস্পট হিসেবে ধরা হয়। এর পরে নারায়নগঞ্জে পিসিআর ল্যাবে নিয়মিত টেস্ট করানো হচ্ছে। মার্চের পর থেকে ২৭ টি ওয়ার্ডের ৩৬ জন কাউন্সিলর এর উদ্যোগে করোনা সংক্রমণ রোধে কাজ করা হয়। নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফনে কাজ করে যাচ্ছে কর্মকর্তারা।

ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আমরা মার্চের শুরু থেকে মানুষকে নিরাপদ রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। শহরের বিভিন্ন স্থানে আমরা হাত ধোয়া, হ্যান্ড সেনিটাইজার এর ব্যবস্থা করা হয়। এরপরে কর্মহীন মানুষদেরকে প্রতি ওয়ার্ডে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি চালু করা হয়। এখনো পর্যন্ত আমরা ত্রাণ বিতরণ ও আর্থিক সহয়তা প্রদান করা হয়। বিভিন্ন নেতাকর্মী ও ব্যক্তি উদ্যোগে গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ায় সবাই।

অষ্টম পর্বঃ

“তরুণদের শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধি: আগামীর কৌশল নির্ধারণ” শীর্ষক এই পর্ব প্রচারিত হয় ৩০ জুন। আলোচকদের মধ্যে এই পর্বে যুক্ত হয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর।

আলোচনার শুরুতে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দিপু মনি বলেন, গত ১৭ মার্চ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পর ২৯ মার্চ থেকে সংসদ টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিকের ক্লাশ চালু করেছি। যেখানে সাধারন শিক্ষা, মাদ্রাসা শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা সমান তালে চলছে। এছাড়াও অনলাইনে মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলো তাদের শিক্ষাথীদের ক্লাশ নিচ্ছেন। আমরা দেশব্যাপি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জরিপ করে দেখেছি ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রায় ৯২ শতাংশ শিক্ষাথীদের কাছে পৌছাতে পারছি। তিনি আরো বলেন, আমাদের ইশতেহারে আমরা সবসময় তরুনদেরকে গুরুত্ব দিয়েছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা এই তরুনদের কে যুক্ত করেছেন আমাদের স্বপ্নের সঙ্গে, জাতীয় স্বপ্নের সঙ্গে, এই জাতীয় স্বপ্ন অর্জনের পথে তরুনরাই আমাদের ভবিষৎ, তরুনরাই হচ্ছে মূল যোদ্ধা।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসান রাসেল বলেন, করোনার প্রভাবে সারাবিশ্বের মত আমাদের যুব সম্প্রদায় যারা বিভিন্ন কর্মস্থানে আছেন তারা অনেকেই আংশিক বা পুরোপুরি বেকার হয়ে যাবে, এই হঠাৎ বেকার হয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে যারা গ্রামে চলে গেছেন বা যাবেন ভাবছেন তাদের সেখানেই আত্মকর্মসংস্থান স্মৃষ্টির জন্য এবং তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষন দেয়া এবং তাদের জন্য লোনের ব্যবস্থা করে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি।“ তিনি আরো বলেন, “ই মুজিব বর্ষে কেউ যাতে বেকার না থেকে সেই উপলক্ষে কর্মসংস্থান ব্যাংকের সাথে চুক্তি করে “বঙ্গবন্ধু যুব ঋণ” নামে একটি প্রকল্প চালুর ব্যবস্থা করেছি- যেখানে নিম্নে ২০ হাজার টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনা জামানতে ঋন সুবিধা দেয়া হবে”।

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ডিজিটাল যুগের সুফল হিসেবে আমরা এখন অনলাইনে আনুষ্ঠানিকতার বাইরে গিয়ে হাত তালির চিন্তা বাদ দিয়ে আলোচনা করতে পারছি, এতে আমাদের মনজগতের একটা পরিবর্তন এসেছে। তথ্য প্রযুক্তি অবকাঠামো এখন আগের থেকে অনেক শক্তিশালি, ডিজিটাল বাংলাদেশের যে স্বপ্ন আমাদের দেখিয়েছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তার সন্তান জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়, সেটা আজ বাস্তবতা। আমরা এখন ঘরে বসে থেকেই মন্ত্রনালয়ের কাজ করছি, অনলাইনে শিক্ষকরা ক্লাশ নিচ্ছেন, জরুরি মিটিং করছি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি উপাচার্য অধ্যাপক ডঃ মুনাজ আহমেদ নূর বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশের কথা চিন্তা করে, ২১ বছরের মধ্যেই আমাদের সকল ছাত্রছাত্রীদের মাঠে ছেড়ে দিতে হবে। এর জন্য লেগো কনসেপট নিয়ে কাজ করতে হবে। মার্কেটের সাথে আর ডিমাণ্ডের সাথে মিল রেখে শিক্ষা ব্যবস্থা নিতে হবে।

নবম পর্বঃ

৪ জুলাই শনিবার প্রচারিত হয় বিয়ন্ড দ্যা প্যানডেমিকের নবম পর্ব। ‘করোনা সংকট মোকাবিলায় তৃণমূলের ভূমিকা’নিয়ে আলোচনা করতে এই পর্বে আলোচকদের মধ্যে ছিলেন  বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, "দেশ ও দলের দুর্দিনে আওয়ামী লীগের তৃনমূল কর্মীরা বারবার ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন। সমগ্র আন্দোলন সংগ্রামে আমাদের এই দুর্দিনের নেতা কর্মীরাই সবার আগে এগিয়ে এসেছেন। এবং আমাদের দলীয় জনপ্রতিনিধিরা তৃনমূলের নেতা কর্মীদের সাথে সমন্বয় করে জনগণের পাশে থেকেছে, এখনও আছে। করোনামুক্ত বাংলাদেশ হওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের তৃনমূলের নেতা কর্মীরা ও জনপ্রতিনিধিরা যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে"।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন বলেন, "আমাদের দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী সারাদেশের তৃনমূলের নেতা কর্মীরা এখন পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ মানুষের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌছে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতিই হলো অসহায় মানুষের পাশে থাকা, পাশে দাঁড়ানো, মানুষকে সহায়তা করা। আওয়ামী লীগের জন্মলগ্ন থেকে তৃনমূলের নেতা-কর্মীরা সব সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।"

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, "চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে স্বাভাবিক কারণে আমার উপর নির্ভর করে দলের ভাবমূর্তি, দলের গ্রহণযোগ্যতা এবং পাশাপাশি সরকারের একটা ভাবমুর্তি নির্ভর করে। সেই কারণে আমি প্রথম থেকেই গুরুত্ব দিয়ে, অগ্রাধিকার দিয়ে, আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একদম শুরু থেকে চট্টগ্রামের রাজপথে, চট্টগ্রামে ৪১টি ওয়ার্ডে এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছুঁটে গিয়েছি।'

দশম পর্বঃ

‘বিয়ন্ড দ্যা প্যানডেমিক’-এর অতিসাম্প্রতিক পর্বটি প্রচারিত হয় গত ৭ জুলাই। ‘করোনাসংকট মোকাবেলায় তরুণদের ভূমিকা’ শীর্ষক এই পর্বে আলোচকদের মধ্যে ছিলেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়।

পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, যুগে যুগে সংকটকালে সবসময় তরুনরাই গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেছে। ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে বর্তমান করোনা সংকটকালে সহায় দুস্থ মানুষের পাশে সবার আগে গিয়ে দাড়িয়েছে আমাদের তরুণ সমাজ।

উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান বলেন, সামগ্রিক ভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তারুন্যের সংস্কৃতিকে ধারন করে। যদি দেখা যায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটি পর্যন্ত সবজায়গাতে তারুন্যের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। করোনা সংকট কালীন সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সমস্ত নেতা কর্মী মৃত্যুভয় অপেক্ষা করে অসহায় দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমাদের দুর্যোগ মহামরি মোকাবেলার অভিজ্ঞতা ছিলো বলেই দুর্যোগ শুরুর পর থেকে দল ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিটি নেতা কর্মী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এর সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ দেশরত্ন শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড হয়ে কাজ করে যাচ্ছি। স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময় থেকে এখন পর্যন্ত দেশের প্রতিটি ক্রান্তিকালে কিন্তু বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কাজ করে যাচ্ছে। ছাত্রলীগ যে তারুণ্যনির্ভর সংগঠন তা কিন্তু এই করোনার সময়ে দেখিয়ে দিয়েছে।

আওয়ামী লীগের এই ওয়েবিনার দেশের স্বনামধন্য গণমাধ্যমগুলোর ফেসবুক পাতায়ও সরাসরি প্রচারিত হয়। দলের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআই এর সুত্র জানায় করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই উদ্যোগ চলমান থাকবে।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত