করোনার বিরুদ্ধে সভ্যতা বাঁচাতে নতুন হাতিয়ার ভার্চুয়াল সংস্কৃতি

1219

Published on আগস্ট 22, 2020
  • Details Image

সাদিকুর রহমান পরাগ:

বিশ্বজুড়ে নেমে এসেছে এক অদ্ভুত আঁধার। বড় ধরনের একটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে জ্ঞান-বিজ্ঞানে অগ্রসর মানবজাতি। অদৃশ্য এক অণুজীবের কারণে বিপর্যয়ের মুখোমুখি সভ্যতা। কোভিড-১৯ ভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে চলছে মহামারি। ইতোমধ্যে লাখ লাখ লোক এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। যদিও বেশির ভাগ মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছে, তারপরও মারা গেছে অসংখ্য মানুষ। বিশ্ব আজ প্রত্যক্ষ করছে আপাত চিকিৎসাবিহীন এই রোগের কাছে মানুষের অসহায় সমর্পণ। করোনার সর্বগ্রাসী আঘাতে আজ বিশ্বব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম। প্রতিটি দেশের কাছে এটি এক নতুন অভিজ্ঞতা। একদিকে চিকিৎসা নেই, অন্যদিকে রোগটির দ্রুত বিস্তার। স্বাভাবিকভাবে অদৃশ্য এই শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কৌশল ঠিক করতে গিয়ে প্রতিটি দেশকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

মহামারির এই করাল ছোবল থেকে মুক্ত নয় আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিও। প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে তাই প্রথম থেকেই এ বিষয়টিতে সজাগ থাকতে হয়েছে। অদৃশ্য এই শত্রুর সঙ্গে লড়াই করার জন্য কৌশল ও নীতি প্রণয়ন এবং এর যথাযথ বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কতগুলো বাস্তবতাকে বিবেচনায় রাখতে হয়েছে-

১. কোভিড-১৯ ভাইরাসের আক্রমণ বাংলাদেশের জন্য নতুন একটি অভিজ্ঞতা।
২. এই রোগটির কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই।
৩. বাংলাদেশ একটি ঘন জনবহুল দেশ। ফলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রেও জনসংখ্যাগত একটি প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।
৪. রোগটি সম্পর্কে জানা থাকা সত্ত্বেও করোনা থেকে সুরক্ষা পেতে সুনির্দিষ্ট নিয়ম ও শিষ্টাচার মানতে মানুষের মধ্যে অনীহা।
৫. আমাদের অর্থনৈতিক ভিত্তি উন্নত দেশের সমপর্যায়ের নয়। ফরেন রেমিট্যান্স, গার্মেন্ট শিল্প, ইত্যাদি খাতের ওপর নির্ভরশীল অর্থনীতির চাকাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ করে রাখা সম্ভব নয়।
৬. নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য দীর্ঘকাল উপার্জনবিহীন থাকা সম্ভব নয়। তাই মহামারিজনিত বিশ্ব অচলাবস্থার মধ্যে মানবিক বিপর্যয় রোধে উপার্জনবিহীন বিশাল এই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ।
৭. মানুষের শঙ্কা, হতাশা ও ভয় দূর করে সাহসের সঙ্গে চলমান পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রাখা।
৮. কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ ও বিশৃঙ্খলা তৈরির অপচেষ্টাকে রুখে দিয়ে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করা।

উপরোক্ত বিষয়গুলোকে বিবেচনায় রেখে পূর্ব অভিজ্ঞতাবিহীন এই লড়াই করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার একটি সামগ্রিক বা হোলিস্টিক অ্যাপ্রোচ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। শুধু কৌশল ও নীতি প্রণয়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে এর যথাযথ প্রয়োগ এবং বাস্তবায়নের দিকেও সরকারকে নজর রাখতে হচ্ছে। প্রতিনিয়ত মনিটর করতে হচ্ছে। তবে কোথাও কখনও ভুল হলে তাৎক্ষণিকভাবে দ্রুত সেটি সংশোধন করা হচ্ছে।
সরকার প্রথম থেকেই আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ-খাইয়ে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখে, জীবনযাত্রাকে স্বাভাবিক রেখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশাবলি মেনে আক্রান্ত এবং প্রাণহানির সংখ্যা যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা যায়।
করোনার বিরুদ্ধে সার্বক্ষণিক এই যুদ্ধে সম্মুখসারির অনেক যোদ্ধাকে আমরা হারিয়েছি। যে ক্ষতি অপূরণীয়। তারপরও আমরা সাহসের সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছি। অতিমারি বা মহামারির এই সময়ে আমাদের লড়াইয়ের অন্যতম বাহন হয়ে দাঁড়িয়েছে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম। করোনা-উত্তর পৃথিবী এখন নিও-নরমাল বা নয়া-বাস্তব যুগে প্রবেশ করেছে। এই নিও-নরমাল যুগে উত্তরণে আমাদের জন্য সহায়ক হয়েছে দেশরতœ শেখ হাসিনার ‘ভিশনারি’ নেতৃত্ব। যে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন, যে ডিজিটাল বাংলাদেশ তার হাত ধরে বাস্তব রূপ লাভ করেছে, সেই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ হয়ে উঠেছে লড়াই এবং উত্তরণের অন্যতম শক্তি। ডিজিটাল মাধ্যম আমাদের জীবনযাত্রার কতটা অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে, তার একটি সংক্ষেপিত চিত্র এখানে তুলে ধরা হলো :

১. সরকার পরিচালনা
ক. বিভাগীয় এবং জেলাভিত্তিক ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সারাদেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সার্বক্ষণিক মনিটর করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে।
খ. করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকার ঘোষিত ছুটির সময় কতিপয় মন্ত্রণালয় সীমিত আকারে কার্যক্রম পরিচালনা করে। ক্ষেত্রবিশেষে অনলাইনে হোম অফিস চালু করা হয়।
গ. সুষ্ঠুভাবে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে ডিজিটাল মাধ্যমকে ব্যবহার করা হয়। নগদ, বিকাশসহ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে অর্থ সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়।

২. হোম অফিস
ক. করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সরকারি দপ্তরের পাশাপাশি অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও কোভিডজনিত ছুটিকালীন সময়ে অনলাইনভিত্তিক হোম অফিস চালু রেখেছে।
খ. ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিভিন্ন অফিসের অভ্যন্তরীণ মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং হচ্ছে।

৩. ব্যাংকিং কর্মকা-
ক. ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান কোভিডজনিত ছুটিকালীন সময়ে গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করতে অনলাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রেখেছে এবং বাসায় থেকেই অনলাইন ব্যাংকিংয়ে গ্রাহকদের উৎসাহিত করেছে।
খ. ঘরে বসেই মানুষ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা-পয়সা লেনদেন করেছে। ফলে সার্বিক মুদ্রাব্যবস্থায় কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়েনি।

৪. অনলাইন স্কুল
ক. করোনার বিস্তার রোধে স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এই অবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রম যেন ব্যাহত না হয় সেজন্য বিটিভি’র সংসদ টিভির মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।
খ. পাশাপাশি অনেক স্কুল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জুম, গুগল মিডিয়া, টিম ইত্যাদি অ্যাপস ব্যবহার করে অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষা নিচ্ছে। এটিও বাংলাদেশের জন্য একটি যুগান্তকারী ঘটনা।

৫. বিকল্প শিক্ষার মাধ্যম ও সুকুমার প্রবৃত্তির বিকাশ
মানুষের এক্সপার্টিজ শেয়ারিং বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষ এখন ঘরে বসেই অনলাইনে বিভিন্ন রকম জিনিস শিখতে পারছে। বিভিন্ন বিষয়ে যারা পারদর্শী তারা অনলাইনে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করেছে। সংগীত, নৃত্য, আবৃত্তি, রান্না, বিভিন্ন ধরনের ক্র্যাফটস, সূচিশৈলী, ভাষাসহ অনলাইনে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এসব প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে অনেকেই বাসায় বসে এ সময়টাকে গঠনমূলক কাজে লাগাচ্ছে।

৬. আইকিউ বৃদ্ধি
মানুষ বাসায় বসে অনলাইনে বিভিন্ন রকমের কুইজ প্রতিযোগিতা, আইকিউ চ্যালেঞ্জে অংশ নিচ্ছে। ফলে মানুষের সামগ্রিক আইকিউ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

৭. সাংস্কৃতিক কর্মকা-
কোভিডজনিত ছুটিকালীন সময়ে থেমে নেই আমাদের সাংস্কৃতিক কর্মকা-। বরং সংস্কৃতি চর্চা অনেক বেড়ে গেছে। ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে ভিডিওসহকারে গান এবং আবৃত্তির উপস্থাপন করা হচ্ছে। লাইভ গান, আবৃত্তি, গল্প পাঠ, কবিকণ্ঠে পাঠ, সেলিব্রেটি শো, বিষয়ভিত্তিক ওয়েবিনার (অনলাইন সেমিনার) আয়োজন করা হচ্ছে। এসব অংশগ্রহণকারীরা যে যার বাসায় অবস্থান করে অনলাইনের মাধ্যমে সেসব লাইভ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছেন। মানুষ বাসায় বসে অনলাইনে সেসব অনুষ্ঠান দেখে ‘কোয়ালিটি’ সময় কাটাচ্ছে এবং অনুষ্ঠান সম্পর্কে তাদের মতামত প্রকাশ করছে।

৮. সামাজিক নৈকট্য বৃদ্ধি
কোভিড-১৯ থেকে রক্ষা পেতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখলেও সামাজিক নৈকট্য অনেকাংশেই বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষ এখন দেশে এবং দেশের বাইরে অবস্থিত আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। আর এটি সম্ভব হয়েছে অনলাইনের কারণে। ঘরে বসেই তারা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে পরস্পর পরস্পরের খবর নিচ্ছে।

৯. মানবিকতা মূল্যবোধের বিকাশ
বৃহত্তর স্বার্থে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে গিয়ে প্রান্তিক মানুষের আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে যায়। সেসব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সবাই যে যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসে। অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে বিভিন্ন ফান্ড রেইজিং প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয় এবং মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

১০. রাজনৈতিক কর্মকা-
কোভিডকালীন সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রথমবারের মতো ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে একাধিক ওয়েবিনার (ইন্টারনেটভিত্তিক সেমিনার) আয়োজন করা হয়েছে।

১১. জনগণের ক্ষমতায়ন
সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হয়ে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় ওয়াচডগ। করোনাকালীন সময়ে এটি আবারও প্রমাণিত হয়েছে। যদিও দুষ্টচক্র এর অপব্যবহার করে এবং গুজব ছড়ানোর কাজে ব্যবহার করে জনগণকে ভুল বোঝানোর অপপ্রয়াস চালায়। তারপরও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনগণের সচেতন অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনমত গঠন সরকারের জন্য সহায়ক হয়ে ওঠে। তৃণমূল পর্যায়ের যে কোনো অনিয়ম দ্রুতই সরকারের দৃষ্টিগোচর হয় এবং সে-অনুসারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে জনগণের ক্ষমতায়ন একদিকে যেমন বেড়েছে, তেমনি সরকারের গৃহীত জনকল্যাণমুখী কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়নে সহায়ক হয়েছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক দুবর্ৃৃত্তায়ন প্রতিহতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।
১২. করোনা টেস্ট
ক. সম্ভাব্য আক্রান্তরা যাতে হটলাইনের মাধ্যমে পরামর্শ নিতে পারে সে-ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
খ. করোনা পরীক্ষার জন্য অনলাইনে সিরিয়াল নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গ. ঘরে বসেই এসএমএস-এর মাধ্যমে করোনা পরীক্ষার ফলাফল জানতে পারছে।

১৩. টেলিমেডিসিন
কোভিড আক্রান্ত হয়ে সম্মুখসারির যোদ্ধা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের অনেককেই ইতোমধ্যে আমরা হারিয়েছি। ফলে অন্যান্য রোগের সেবা প্রদান কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এই অবস্থায় টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসকরা রোগীদের সঙ্গে কথা বলছেন, তাদের সমস্যা শুনছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপত্র প্রদান করছেন।

১৪. নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র
করোনাজনিত ছুটির কারণে বিভিন্ন মার্কেট, সুপার মার্কেট, শপিংমল, দোকান-পাট বন্ধ ছিল। উপরন্তু মানুষের বাইরে যাওয়াকেও নিরুৎসাহিত করা হয়। এ প্রেক্ষিতে বাজার-সদাই, ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য মানুষ অনলাইনের দ্বারস্থ হয়। ঘরে বসেই প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সেরে নেয় মানুষ।

১৫. ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা
কোভিড পরিস্থিতির কারণে পণ্য বিপণন ব্যবস্থার সাময়িক বিঘ্ন ঘটলেও সে-পরিস্থিতি দ্রুত কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয় অনলাইনের মাধ্যমে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে তুলে ধরে, অর্ডার গ্রহণ করে এবং গ্রাহককে তার বাড়িতেই পণ্য পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে।

১৬. জরুরি সেবা
নাগরিকদের জরুরি সেবা নিশ্চিত করতে অনলাইনে সেবা প্রদান করা হচ্ছে। অনলাইনে অভিযোগ গ্রহণ করে সেই আলোকে সমাধান প্রদান করা হচ্ছে। বাসায় বসেই মানুষ অ্যাপসের মাধ্যমে ইউটিলিটি বিল প্রদান করতে পারছে।

এ-কথা নির্দ্ধিধায় বলা যায় যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ফলে করোনাকালীন পরিস্থিতিতে আমরা মানুষের শঙ্কা দূর করে সামগ্রিক বিপর্যয় রুখতে পেরেছি।
অক্সিজেনের অভাব হলে যেমন একজন মানুষ অক্সিজেনের গুরুত্ব বুঝতে পারে, জল ছাড়া থাকলে মাছ যেমন জলের গুরুত্ব বুঝতে পারেÑ তেমনি কোভিড-১৯ আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ডিজিটাল বাংলাদেশ আমাদের জন্য কতটা গুরুত্ব বহন করে। আক্রান্ত না হলে আমরা হয়তো উপলব্ধি করতে পারতাম না ডিজিটাল বাংলাদেশের বিস্তৃতি কতটা ব্যাপক, কতটা ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে আমাদের জীবনযাত্রায়।

লেখক : সাংস্কৃতিক সংগঠক ও লেখক

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত