বাসা-বাড়ী, সার উৎপাদন কিংবা সিএনজির ক্ষেত্রে কোন মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে না

313

Published on ফেব্রুয়ারি 28, 2024
  • Details Image

বাংলাদেশে গ্যাসের ব্যবহারকারিদের ০৮টি গ্রাহকশ্রেণি রয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩৭%, শিল্পে ২৩%, ক্যাপটিভ বিদ্যুতে ১৮%, গৃহস্থালিতে ১০%, সার উৎপাদনে ৭%, সিএনজিতে ৪% এবং বাণিজ্যিক ও চা শিল্পে ১% গ্যাস ব্যবহৃত হয়। প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন, আমদানি, সরবরাহ মূল্যের সাথে বিক্রয়মূল্যের পার্থক্যের কারণে সরকারকে এ খাতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি প্রদান করতে হয়।

দেশের স্থানীয় উৎপাদন গড়ে প্রায় ২,০৫১ এমএমসিএফডি (মিলিয়ন ঘনফুট দৈনিক) ও দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে কাতার ও ওমান থেকে বাৎসরিক ৫৬টি কার্গো ও স্পট হতে ২৫টি সহ মোট ৮১টি কার্গো হিসেবে আমদানিকৃত এলএনজি হতে গড়ে ৬৮৫ এমএমসিএফডি রিগ্যাসিফাইড এলএনজিসহ দৈনিক গড়ে ২,৭৩৬ এমএমসিএফ (মিলিয়ন ঘনফুট) গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হয়। ফলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আর্থিক ক্ষতি/ ভর্তুকি দিতে হবে প্রায় ৬,৫৭০.৫৪ কোটি টাকা। কৃষি সেচ মৌসুমে, রমজান মাসে ও গ্রীষ্মকালে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের বর্ধিত চাহিদা থাকে।

গ্যাস-ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চাহিদা অনুযায়ী আগামী এপ্রিল, ২০২৪ হতে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখার জন্য গড়ে ১৩০০ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। বর্তমানে গ্যাস ভিত্তিক গ্রিড-কানেক্টেড বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য গড়ে ৮৫০ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ শ্রেণিতে গ্যাসের বর্ধিত চাহিদার আলোকে সরবরাহ নিশ্চিত করতে পেট্রোবাংলা দেশীয় গ্যাসের সরবরাহের পাশাপাশি স্পট মার্কেট হতে বর্ধিত সংখ্যক কার্গো আমদানি ও এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থানের জন্য অনুরোধ করেছে ।

চলমান কৃষি সেচ মৌসুম, আসন্ন রমজান মাস ও গ্রীষ্মকালে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের বর্ধিত চাহিদা মেটাতে ১ এপ্রিল, ২০২৪ হতে দুইটি Floating Storage and Regasification Unit (FSRU) এর সর্বোচ্চ রিগ্যাসিফিকেশন ক্ষমতা ব্যবহার করে দৈনিক ১০০০-১১০০ এমএমসিএফ গ্যাস সরবরাহ করতে হলে জানুয়ারি, ২০২৪ হতে জুন, ২০২৪ পর্যন্ত অতিরিক্ত ১০টি স্পট কার্গো আমদানি করার প্রয়োজন হবে।

বিদ্যুৎ খাতে গ্যাসের বর্ধিত চাহিদার বিপরীতে আমদানিকৃত এলএনজি’র মূল্য ও ভর্তুকি সমন্বয়ের বিষয়ে অর্থ বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং পেট্রোবাংলার অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত সভায় একাধিক বিকল্প প্রস্তাব পর্যালোচনা করা হয়। বিদ্যুৎ উৎপাদনে অন্যান্য বিকল্প জ্বালানি (ডিজেল, ফার্নেস অয়েল ইত্যাদি) গ্যাসের তুলনায় ব্যয়বহুল হওয়ায় এবং ডলার ঘাটতির কারণে ফার্নেস অয়েল আমদানি এলসি খুলতে সমস্যা হওয়ায় গ্যাস-ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অধিক সময় চালু রাখাসহ বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিতকরণের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ অনুরোধ জানায়।

সার্বিক বিবেচনায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের বিক্রয়মূল্য ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিলিং মাস হতে প্রতি ঘনমিটার ১৪.৭৫ টাকা (বৃদ্ধির হার ৫.৩৬%) এবং ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য প্রতি ঘনমিটার ৩০ টাকা হতে ৩০.৭৫ টাকা (বৃদ্ধির হার ২.৫০%) নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্ধিত মূল্য বাবদ প্রতি মাসে প্রায় ৮৬.২৫ কোটি টাকা আয় বৃদ্ধি হবে এবং অর্জিত অতিরিক্ত অর্থ এলএনজি ক্রয় খাতে ব্যবহার/ ভর্তুকি হ্রাসে সাহায্য করবে।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত