সুসংগঠিত দল সরকারের জন্য বিরাট শক্তি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

5086

Published on জানুয়ারি 3, 2020
  • Details Image

সফলভাবে সরকার পরিচালনা করতে দল সুসংগঠিত থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সুসংগঠিত দল সরকারের জন্য বিরাট শক্তি।

শুক্রবার (০৩ জানুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম যৌথসভায় তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা সরকার সফলভাবে কাজ করতে পারবে তখনই যখন তার দল সুসংগঠিত থাকে। কারণ দল সুসংগঠিত থাকলে, এটা হচ্ছে সরকারের জন্য বিরাট শক্তি।’

তিনি বলেন, ‘এই শক্তিটাই সব থেকে বেশি কাজে লাগে একটা দেশকে উন্নত করতে। যেটা আমি নিজে উপলব্ধি করি। এবং যে কারণে আমি সবসময় সংগঠনের ওপর গুরুত্ব দেই।’

বিভিন্ন সময় দলের ক্রান্তিলগ্নে তৃণমূল আওয়ামী লীগের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যাঠয়ের নেতা-কর্মীরা সব সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়। নিজেদের জীবন পণ করেই তারা এই সংগঠনকে ধরে রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ একটা শক্তিশালী সংগঠন। এদেশের রাজনীতিতে কেউ যদি কিছু শিখিয়ে থাকে সেটা আওয়ামী লীগই প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সেটা করে যাচ্ছে। এই ঐতিহ্যটা আমাদের ধরে রাখতে হবে। ’

১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মম ভাবে সপরিবারে হত্যার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘উদ্দেশ্য একটা ছিল যে এমন ভাবে আওয়ামী লীগকে শেষ করে দেওয়া কোনদিন যেন এই সংগঠনটা ক্ষমতায় আসতে না পারে। বা রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব নিতে না পারে।’

সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে ৯৬ সালে আওয়ামী লীগের সরকার গঠনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন ‘অনেক ঘাত প্রতিঘাত, চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আমরা ৯৬ সালে সরকার গঠন করি। বাংলাদেশের জনগণ প্রথম আশার আলো দেখতে পান, তারা প্রথম দেখতে পান যে সরকার জনগণের সেবক। মানুষ প্রথম উপলব্ধি করে সরকার জনগণের সেবা করে।’

টানা তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এগারো বছর পূর্ণ হলো এক টানা। এখন অন্তত এইটুকু বলতে পারি। মানুষের যে আস্থা-বিশ্বাস, সমর্থন আমরা পেয়েছি, বাংলাদেশের মানুষ যেটা জানেন একমাত্র আওয়ামী লীগ থাকলে উন্নয়ন হয় সে কথা প্রমাণ করতে পেরেছি।’

‘মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেকে বলেছিল বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে কি হবে, বটমলেস বাস্কেট হবে। আজকে তারা সে কথা বলতে পারবে না। বরং আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমরা যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছি, সেটা শুধু আমাদের এখানেই না সারা বিশ্বব্যাপী খুবই সমাধৃত এবং স্বীকৃত।’

বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগকে নানা অপবাদ দেওয়া হয়েছে মন্তব্য করে ৮১ সাল থেকে টানা দলটির সভাপতির দায়িত্বপালন করে আসা শেখ হাসিনা বলেন, ‘কত রকমের অপবাদ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দেওয়া হয়েছে। আজকে আমরা প্রমাণ করেছি, একমাত্র আওয়ামী লীগই এদেশকে উন্নত করতে পারে, সমৃদ্ধ করতে পারে, এগিয়ে নিতে পারে এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এটা আওয়ামী লীগই করেছে।’
 
ব্যাপক ভাবে মুজিব বর্ষ উদযাপন করার কথা জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘১০ জানুয়ারি জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস থেকে আমরা কাউন্টডাউন শুরু করে ১৭ই মার্চ জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা মুজিব বর্ষ শুরু করবো। বছর ব্যাপী সারা দেশে অনুষ্ঠান করবো।’

মুজিব বর্ষকে সামনে রেখে নবউদ্যোমে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে আমরা আবার নবউদ্যমে জাতির পিতার দেওয়া এই স্বাধীনতাকে- বাংলাদেশকে আরও উন্নত করবো, স্বাধীনতাকে আমরা আরও অর্থবহ করবো ‘

‘যেন বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বে যেন মর্যাদা নিয়ে চলতে পারে। এখন যে মর্যাদা পেয়েছে এর চেয়ে আরও বেশি মর্যাদা নিয়ে আরও উন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যেন গড়ে উঠতে পারে সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাবো।’

বক্তব্যের শুরুতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রয়াত সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুর ইসলামের কথা স্মরণ করেন। এ যৌথ সভা সৈয়দ আশরাফুর ইসলামের প্রতি উৎসর্গ করা হয়।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ যৌথসভায় দলটির কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের প্রায় সব সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে এ সভা শুরু হয়ে কিছুক্ষণ চলার পর মূলতবি ঘোষণা করা হয়।

আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া গণমাধ্যমকে জানান, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম যৌথসভা আগামীকাল শনিবার (০৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬ টায় পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। মূলতবি সভা আগামীকাল ৬টায় গণভবনে শুরু হবে।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত