বিদেশী খুনিদের দিয়ে হত্যার অপচেষ্টা করা হয় শেখ হাসিনাকে

1420

Published on 2nd ফেব্রুয়ারি 2023 20:20

১৯৯৬ সালের জুন থেকে ২০০১ সালের জুলাই পর্যন্ত সরকারে থাকার পর নতুন নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এভাবে স্বেচ্ছায় সুন্দরভাবে আর কেউ মেয়াদ শেষের পর ক্ষমতা ছাড়েনি বাংলাদেশে। কিন্তু এরপরেই সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য বিদেশি খুনিদের সক্রিয় করে তোলে উগ্রবাদী গোষ্ঠী। আন্তর্জাতিক গোয়েন্দাদের মাধ্যমে এই তথ্য পেয়ে নড়েচড়ে ওঠে দেশের পুলিশ। সরেজমিনে তদন্ত চালিয়ে ৫ তামিল আত্মঘাতী খুনিচক্রের সন্ধান পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং গণমাধ্যম। এই সংবাদ বিবিসিতে প্রকাশের পর আলোড়ন শুরু হয় দেশজুড়ে।

২০০১ সালের ১ সেপ্টেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে এসব তথ্য জানা যায়। বিবিসির অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক আগে থেকেই নাম পরিচয় বদল করে তামিল সুইসাইড স্কোয়াডের ৫ কিলারকে বাংলাদেশে পাঠায় বঙ্গবন্ধুর ঘাতকচক্র এবং বিএনপি-জামায়াতের উগ্রবাদী গোষ্ঠী। তারা বিভিন্ন পরিচয়ে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, খুলনায় বসবাস করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত উগ্রবাদী চক্র এবং বঙ্গবন্ধুর ঘাকতদের ঘনিষ্ঠ স্বজনদের সহায়তায় তারা বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশিদের নাম ব্যবহার করে বাড়ি ভাড়া নিয়ে ছিল। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদ শেষের পর সদ্যসাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন গণভবন ছেড়ে সুধাসদনে অবস্থান নেন, তখনই সুধাসদনে হামলা করে তাকে হত্যার চূড়ান্ত ছক করে এই খুনিরা।

স্থানীয়রা গণমাধ্যমকে জানান, জিন্স পরা তামিল নারীসহ আরো ৪ জন তামিল ব্যক্তিকে সুধাসদনের আশেপাশে কয়েকদিন ঘোরাঘুরি করতে দেখেছেন তারা। ধানমন্ডি এলাকায় ওই বিদেশিদের সন্দেহজনক আচরণের বিষয়ে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকেও অভিযোগ জানান এলাকাবাসী। এদের মধ্যে ৩ জন প্রায় দেড় বছর আগে থেকেই ছদ্মবেশে বাংলাদেশে অবস্থান করে সুধাসদনের চারপাশে রেকি করা এবং শেখ হাসিনার চলাফেরা ফলো করছিল। আর প্রধানমন্ত্রিত্ব শেষের দুই সপ্তাহ পরেই, আগস্ট মাসে, বাকি দুই শার্প শ্যুটার বাংলাদেশে প্রবেশ করে। খুনের চূড়ান্ত নকশা নিয়ে তারা সুধাসদনের চারপাশে অবস্থান নেয়। কিন্তু স্থানীয়দের সন্দেহ এবং গোয়েন্দাদের পর্যবেক্ষণের কারণে শেষ পর্যন্ত গা ঢাকা দেয় খুনিরা।

স্থানীয়রা জানান, প্রথম দিকে নারী তামিল সদস্যকে পর্যটক ভেবে কেউ সন্দেহ করেনি। আগস্টের শেষের কয়েকদিন তারা বিভিন্ন শপিংমলে দলবদ্ধভাবে ঘুরেছে এবং সুধাসদনের চারপাশে অবস্থান নিয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহুর্ত্বে বিবিসিতে এই বিদেশি ভাড়াটে খুনিদের বিষয়ে খবর প্রকাশের পর রাতারাতি গা ঢাকা দেয় তারা। ছদ্মবেশে ঢাকা ত্যাগ করে। সীমান্তগুলোয় কড়াকড়ি আরোপ করা হলেও তাদের আর ধরা যায়নি। পুলিশের ধারণা, তারা বাংলাদেশী উগ্রবাদী চক্রের সহায়তায় চোরাইপথে সীমান্ত অতিক্রম করে সটকে পড়েছে।