ঔষধশিল্পঃ একটি সম্ভাবনাময়, দ্রুত বর্ধনশীল রপ্তানি খাত

535

Published on মে 21, 2014
  • Details Image

 

বিশ্বের দ্বিতীয়-বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক হিসেবে বাংলাদেশের আবির্ভাবের দুই দশক পর, বাংলাদেশ এখন নেতৃস্থানীয় ঔষধ সামগ্রী রপ্তানিকারকে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে৷

ঔষধ শিল্পে ৪ বিলিয়ন টাকা (৫১.৭ মিলিয়ন ডলার) রপ্তানি আয় এদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আসা ২০ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় সামান্য মনে হতে পারে। কিন্তু এই খাতে প্রবৃদ্ধি বিস্ময়কর, ২০ বছর আগেও বাংলাদেশের ঔষধ সামগ্রীর ৭৫% আমদানি করা হতো। এখন, বাংলাদেশের চাহিদার ৯৭% স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়।

“প্রতি বছর আমাদের পণ্যের চাহিদা বাড়ছে এবং এর মূল কারণ হলো আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে আমরা মানসম্মত পণ্য তৈরির দিকে মনোযোগ দিয়েছি,” বলেছেন দেশের একটি অন্যতম ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসকায়েফ বাংলাদেশের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন সরকারের অনুকূল নীতিমালা এবং মানসম্মত পণ্য তৈরির উপর বিশেষভাবে মনোযোগ দেয়ার বিষয়টি এই উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জনে ভূমিকা রেখেছে।

“এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে আমরা সেরা মানের ঔষধ তৈরি করতে সক্ষম এবং এর মূল কারণ হলো আমরা পণ্যের মানের বিষয়ে কোনো আপোস করিনি,” বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের অধ্যাপক এ. বি. এম. ফারুক।

ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং সার্ভিসের (আইএমএস) মতে, ২০১৩ সালে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ঔষধের বাজার প্রায় ১৩% বেড়ে ২৫০ মিলিয়ন ডলারে গিয়ে পৌঁছেছে।

সেইসাথে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) মতে, বাংলাদেশ এখন প্রায় ৮৫টি দেশে রপ্তানি করে থাকে যার মধ্যে রয়েছে অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম,ফিলিপাইন, ব্রাজিল, পাকিস্তান, বার্মা ও ইয়েমেন।

“উচ্চ মানের কারণে দেশে ও বিদেশে আস্থার সাথে আমাদের পণ্যগুলো গৃহীত হয়েছে,” বলেছেন ঔষধ প্রশাসনের মহাপরিচালক (ডিজিডিএ) সেলিম বারামি।

ডিজিডিএ-এর মতে, সরকারিভাবে নিবন্ধিত ২৭৫টি ঔষধ কোম্পানির মধ্যে ১৯৪টি কোম্পানি নিয়মিতভাবে কাশির সিরাপ ও ফ্লু-এর ট্যাবলেটের মত পণ্যগুলো তৈরি করে থাকে। স্কয়ার, ইনসেপ্টা, বেক্সিমকো, একমি, ও এসকায়েফ বাংলাদেশে উৎপাদিত মোট ঔষধের ৪৫% উৎপাদন করে থাকে, এই কোম্পানিগুলো রপ্তানির জন্য অত্যাধুনিক কারখানায় ঔষধ সামগ্রী উৎপাদন করে।

যুক্তরাজ্যের গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন, সুইজারল্যাণ্ডের নোভার্টিস ও ফ্রান্সের সানোফি জীবন-রক্ষাকারী টিকা, ক্যান্সারের ঔষধ ও অন্যান্য উচ্চমানসম্পন্ন পণ্য তৈরি করার জন্য বাংলাদেশে কারখানা স্থাপন করেছে।

এই শিল্পের প্রবৃদ্ধি দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে - যাতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ফার্মাসিস্ট, কেমিস্ট, মাইক্রোবায়োলজিস্ট ও ডাক্তারদের জন্য চাকরির সুযোগ - তারা যথেষ্ট পরিমাণে ভালো বেতন দেয় যাতে পেশাজীবীরা বিদেশে চলে না যায়৷ ঔষধ সামগ্রী উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশ একটি শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে।

“ঢাকার কাছাকাছি অবস্থিত মুন্সিগঞ্জে এই ধরনের একটি শিল্পাঞ্চল তৈরির কাজ প্রায় শেষ হওয়ার পথে রয়েছে এবং ঔষধ সামগ্রী রপ্তানি থেকে আমাদের আয় ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে বলে আমরা আশা করছি,” বলেছেন স্বাস্থ্য সচিব এ. এম. এম. নিয়াজউদ্দীন।

সুত্রঃ খবর দক্ষিন এশিয়া

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত