উদ্যোক্তা তৈরীর পরিবেশ সৃষ্টি করতে শিক্ষা পাঠক্রম বদলানো দরকারঃ জয়

508

Published on জুলাই 4, 2014
  • Details Image

বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে ব্যবসাকে নিন্দার চোখে দেখা হয় মন্তব্য করে সমাজের এ মানসিকতা বদলানোর পাশাপাশি নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত জটিলতা দূর করার আহবান জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে তরুণ উদ্যোক্তা, পেশাজীবী ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ‘পলিসি ক্যাফে’ নামে এক মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রীর ছেলে দেশের শিল্প-বাণিজ্য নিয়ে নিজের পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

‘তরুণ উদ্যোক্তা: প্রবৃদ্ধি ইঞ্জিন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সজীব ওয়াজেদ দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়ন, প্রবাসীদের দেশে বিনিয়োগ সুবিধা, উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান নিয়েও কথা বলেন। নিজের উদ্যোক্তা হওয়ার প্রসঙ্গও টানেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বেশ কয়েকজন জয়কে প্রশ্ন করেন ও বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামতও তুলে ধরেন।

বাংলাদেশে উদ্যোক্তা সৃষ্টির বাধা কাটাতে নতুন প্রজন্মের সহযোগিতা চেয়ে সজীব ওয়াজেদ বলেন, “আপনারাই হচ্ছেন ভবিষ্যত প্রজন্ম। আপনাদেরই ছেলে-মেয়ে যদি বলে তারা ব্যবসা করতে চায় তাহলে প্লিজ নিরুৎসাহিত করবেন না।

“আমাদের ইকনোমিটাকে স্ট্রং করতে হবে, আমাদের র্যােপিড গ্রোথ শুধু পাবলিক সেক্টর বা সার্ভিস সেক্টর থেকে হবে না। র্যাটপিড গ্রোথটা আসেই কিন্তু প্রাইভেট সেক্টর থেকে।”

বর্তমান শিক্ষা পাঠ্যক্রমের বিষয়ে জয় বলেন, “আমি মনে করি, আমাদের স্পেসিফিকলি বিজনেস স্কুলগুলোকে এখন একটু গুরুত্ব দেয়া উচিত, যেটা আমরা দিচ্ছি না। আবারও বলি আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল, মেডিকেল স্কুল। এটা ভালো, কারণ ওইগুলো আমাদের প্রয়োজন। তবে টেকনোলজিক্যালি যে সোসাইটি অ্যাডভান্স করবে, সেই সোসাইটিই কিন্তু দ্রুত অ্যাডভান্স করবে। সেই বেইসটা আমাদের প্রয়োজন। একইসঙ্গে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল বেইসটা বাড়াতে হবে, কমার্সিয়াল বেইসটা বাড়াতে হবে।”


জয় বলেন, “টেকনোলজির সঙ্গে সঙ্গে আপনারাই, উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীরাই ইঞ্জিন ফর গ্রোথ। অভ্যন্তরীণ চাহিদার কারণেই বিভিন্ন অর্থনীতি শক্তিশালী হয়েছে। বাংলাদেশেও সেটা রয়েছে।

“আমাদের সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ যখন হবে ডোমেস্টিক কনজুমার মার্কেটের ওপর তখন আমরা আর কারোর ওপর নির্ভরশীল থাকবো না। তখন আমাদের নিজেদের ইকনমি নিজেদেরই বিনিয়োগেই চলতে থাকবে অটোমেটিক্যালি।

সরকারের উদ্যোগে বিভিন্ন অর্থায়ন প্রকল্পের উল্লেখ করে এক্ষেত্রে পুঁজিবাজার ও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

ক্ষুদ্র পুঁজি নিয়ে শুরু করা উদ্যোক্তারা যেন পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে পারে সে বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান সজীব ওয়াজেদ।

তিনি বলেন, “এখানে আইপিও (প্রাথমিক গণপ্রস্তাব) সিস্টেম চলে আসছে একেবারেই ট্রাডিশনাল পদ্ধতিতে। আপনি একটা ফ্যাক্টরি করবেন, কারখানা বানাবেন, ব্যালেন্স শিট থাকবে বিশাল, সেখান থেকে আপনারা পেইড আপ ক্যাপিটাল দেখিয়ে আইপিও করবেন।”

তবে বিশেষ করে তথ্য-প্রযুক্তি খাতের নতুন শুরু করা (স্টার্ট-আপ) কোম্পানির ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব নয় বলে মনে করেন জয়।

এক্ষেত্রে ক্ষুদ্র পুঁজির স্টার্ট-আপ কোম্পানিগুলোর পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের জন্য উপায় বের করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এসময় জয় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের বিভিন্ন বিষয় নিয়েও কথা বলেন।

“আমাদের স্টক মার্কেটটা কিন্তু সেরকম ম্যাচিউরড ছিল না। অন্যান্য দেশের স্টক মার্কেট অনেক ওয়েল স্ট্যাবলিশড। ওয়েস্টার্ন স্টক মার্কেটে বারবার ক্রাশ হওয়ার পর, তারা স্টক মার্কেটকে শক্তিশালী করে, আইন-কানুন করে। সেকারণেই কিন্তু আজকে তাদের স্টক মার্কেট প্রতিষ্ঠিত।

“আমাদের স্টক মার্কেটটা কিন্তু সেরকম ছিল না। গত টার্মে ও তার আগেও আমাদের ক্রাশ হয়েছে। প্রত্যেকটি দেশেই স্টক মার্কেট সবসময় ক্রাশ হয়। এই কিছুদিন আগেই আমেরিকান স্টক মার্কেট একটা ক্রাশ থেকে রিকভার করেছে।”

জয় বলেন, “গতবার যখন ক্রাশ হলো, তখন আমরা স্টাডি করে দেখেছি কী সমস্যা ছিল এবং সেগুলো কিন্তু আমরা কিছুটা সমাধান করতে পেরেছি। স্টক মার্কেটে আমরা ডিমিউচুয়ালাইজেশন করেছি।

প্রবাসী বাংলাদেশিরা (এনআরবি) ভেঞ্চার ফান্ড গঠন করে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সহায়তা করতে পারে বলে মনে করেন জয়।

তিনি বলেন, “এনআরবিদের বিনিয়োগের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা আছে তবে আরো ডেভেলপ করার সুযোগ আছে।”

ভেঞ্চার ফান্ড গঠনসহ এনআরবিদের বিনিয়োগ করার মতো অনেক সুযোগ বাংলাদেশে রয়েছে বলে জানান জয়।

উদ্যোক্তা সৃষ্টির জন্য গবেষণার ও উন্নয়নের (আরএন্ডডি) প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন সজীব ওয়াজেদ।

তিনি বলেন, “একটা জায়গায় আমরা পিছিয়ে রয়েছি। পৃথিবীতে যারা এগিয়ে গেছে তারা আরএন্ডডি-তে অনেক গুরুত্ব দিয়েছে।

“আমরা খাদ্য উৎপাদনের জন্য কৃষিতে আরএন্ডডির গুরুত্ব দিয়েছি। এখন খাদ্যে সমস্যা নেই। অন্যদিকে জোর দিতে হবে। আরএন্ডডি বাড়ানো উচিৎ, এটা ছাড়া র্যা পিড উন্নয়ন সম্ভব না।”

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত