অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতায় বাংলাদেশ-আরব আমিরাত চুক্তির অনুমোদন

467

Published on অক্টোবর 20, 2014
  • Details Image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ বাংলাদেশ সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার এবং সংযুক্ত আমিরাত সরকারের মধ্যে নিরাপত্তা বিষয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম মোশাররফ হোসেন ভূূইয়া বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরকালে এই চুক্তি স্বাক্ষর হবে। তিনি আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী এই সফরকালে দু’দেশের মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের হস্তান্তর বিষয়ে আরো একটি চুক্তি স্বাক্ষর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদল এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতে রয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরো বলেন, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সামরিক সহযোগিতা সংক্রান্ত বিষয়ে বাংলাদেশ ও কুয়েতের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরের অপর একটি প্রস্তাবও মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে।

ভুইয়া আরো বলেন, গত ২৭-২৯ আগস্টে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের দক্ষিণ কোরিয়া সফর সম্পর্কে মন্ত্রিসভায় অবহিত করা হয়।

মন্ত্রিসভায় ২০১৩-’১৪ অর্থবছরে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকা- সম্পর্কে বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করা হয়। তিনি জানান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকা- সংক্রান্ত প্রতিবেদনে সভায় সন্তোষ প্রকাশ করা হয়।

ভুইয়া বলেন, বিগত অর্থবছরের তুলনায় ২০১৩-’১৪ অর্থবছরে মাথাপিছু আয়, রাজস্ব আয়, মুদ্রাস্ফীতি ও রিজার্ভে ইতিবাচক চিত্র ফুটে উঠেছে। তিনি বলেন, ২০১৩-’১৪ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ১১৯০ মার্কিন ডলার। ২০১২-’১৩ অর্থবছরে ছিল ১০৪৪ মার্কিন ডলার। তিনি আরো জানান, এ সময়ে রফতানি আয় বেড়েছে ১১.৬৯ শতাংশ।

২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে সার্বিক রাজস্ব আদায় দেখানো হয় ৮ দশমিক ৩৫ ভাগ। অন্যদিকে ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার মোট মজুদ হয় ২১ দশমিক ৫০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বৃদ্ধির হার ৪০ দশমিক ৪৪ ভাগ।

ভূঁইয়া বলেন, গত অর্থবছরে বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকে। অন্যদিকে পর্যায়ক্রমে মূল্যস্ফীতির হার কমে দাঁড়ায় ৬ দশমিক ৯৭ ভাগে। ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে এটি ৮ দশমিক শূন্য ৬ ভাগ।

২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে এডিপি ব্যবহারের হার ছিল ৯৩ দশমিক ১১ ভাগ। এ সময় ব্যয় হয় ৫৯ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। নির্বাচিত ২৪২টির মধ্যে ২৩৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ এ সময় সম্পন্ন হয়।

তিনি বলেন, গত অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২৬ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকা। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।

২০১৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১১ কোটি ৬২ লাখ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেড়ে হয় ৩ কোটি ৮৯ লাখ। অর্থাৎ টেলি-ডেনসিটি হয় ৭৭ দশমিক ৯১ ভাগ।

কেবিনেট সেক্রেটারী আরো বলেন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ খাতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ৬৯টি প্রতিষ্ঠান লাভজনক হয়েছে। অন্যদিকে লোকসান হয়েছে ১৯টি প্রতিষ্ঠানের।

কেবিনেটর্ বৈঠকে বেশ কিছু পরামর্শ উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে নীতি ও কর্মসূচি দ্রুততর করতে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক আরো জোরদার, ব্যাপক মনিটরিংয়ের পাশাপাশি এডিপি ব্যবহার দ্রুততর করতে বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর সামর্থ বৃদ্ধি, শূন্য পদ পূরণে আরো উদ্যোগ গ্রহণ, বিদ্যুতের লোড ব্যবস্থাপনা এবং এর অপব্যবহার রোধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় আরো স্বেচ্ছাসেবীকে প্রক্ষিক্ষণ প্রদান, ভেজাল খাদ্য নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে আরো সচেতনতা সৃষ্টি এবং ই-টেন্ডারিং কার্যক্রম বৃদ্ধি।

তিনি বলেন, এ ছাড়া সাধারণ মানুষের সমস্যা শুনতে উপজেলা পর্যায়ে গণশুনানি অনুষ্ঠানেরও সুপারিশ করেছে কেবিনেট।

মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা বৈঠকে যোগ দেন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

-বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত