১৮,৪০৪ কোটি টাকার পাঁচটি প্রকল্পের অন্যমোদন দিয়েছে একনেক

479

Published on জানুয়ারি 13, 2015
  • Details Image

মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এই অনুমোদন দেয়া হয়।

একনেক সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচী(পিইডিপি - ৩)-১ম সংশোধিত প্রকল্প নিয়ে কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘মূল অনুমোদিত প্রকল্পে উপবৃত্তি কর্মসূচী এবং শিক্ষার জন্য খাদ্য কর্মসূচীতে যথাক্রমে ৩ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা ও ১ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। কিন্তু এ দুটো কর্মসূচীর জন্য আলাদা আলাদা প্রকল্প ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে। এজন্যই সংশোধিত প্রকল্প থেকে এ দুটো কর্মসূচী বাদ দেয়া হয়েছে। ফলে প্রকল্প ব্যয় কমে এসেছে।’

প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল এক বছর বাড়িয়ে জুন, ২০১৬ থেকে ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত করা হয়েছে। সময় বাড়ানোর কারণ হিসেবে মন্ত্রী বলেন, ২০১১ সালের জুলাই থেকে প্রকল্পটি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্পটি অনুমোদিত হয় ২০১১ সালের আগস্ট মাসে। এ জন্য ওই অর্থ বছরে প্রকল্পটির অনুকূলে বরাদ্দ দেয়া যায়নি। ফলে প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি কিছুটা পিছিয়ে পড়ে, ফলে কাজ শেষ করতে অতিরিক্ত দেড় বছর প্রয়োজন হয়।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করেছে। এসব বিদ্যালয়ের জন্য অতিরিক্ত ১জন করে প্রি-প্রাইমারী শিক্ষক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ এ প্রকল্প থেকে করায় প্রকল্পে কিছুটা সংশোধনী আনা হয়। এছাড়াও জাতীয়করণকৃত এই ২৬ হাজারের উপরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বাস্তবায়নে শ্রেণীকক্ষ পর্যায়ে ল্যাপটপ, সাউন্ড সিস্টেম ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর এই প্রকল্পের আওতায় সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত হয়। এসব কারনে প্রকল্প সংশোধন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, এই প্রকল্পের মোট প্রকল্প সাহায্যের মধ্যে ২ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা ঋণ এবং বাকি ১ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা অনুদান। এই ঋণ ও অনুদান দেবে দশটি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা। সংস্থাগুলো হলো- এডিবি, আইডিএ, অস্ট্রেলিয়ান এইড, কানাডিয়ান সিডা, ডিএফআইডি, ইইউ, জাইকা, সুইডিস সিডা, জিপিই ও ইউনিসেফ।

প্রকল্পটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করছে।

সংশোধিত এ প্রকল্পটি নিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল আরো বলেন, মূল প্রকল্পে মোট ৪৮ হাজার ৮৪ জন জনবলের উল্লেখ ছিল। সংশোধিত প্রকল্পে অতিরিক্ত ৩৩ হাজার ৪৪৮ জন বাড়িয়ে সর্বমোট ৮১ হাজার ৫৩২ জন জনবল নেয়া হবে। এর মধ্যে ৮০হাজার ৬০৫জন শিক্ষকের পদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে রাজস্ব খাতে চলে যাবে। এছাড়া, ৫৫০ টি অন্যান্য পদও প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে রাজস্ব বাজেটে স্থানান্তরিত হবে।

একনেক সভায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত নতুন ৩টি প্রকল্পেরও অনুমোদন দেয় হয়। রংপুরে অবস্থিত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ছাত্রী হল নির্মাণ করতে যাচ্ছে সরকার । এজন্যবেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প নামক ৭৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেক।

সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় জানুয়ারি, ২০১৫ থেকে জুন, ২০১৮ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। ১০০০ আসনের ছাত্রী হল, ড.ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা ইনস্টিটিউট স্থাপন এবং কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এবং ইলেকট্রনিক্স ও টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে গবেষণা ল্যাবরেটরিও এ প্রকল্পের আওতায় স্থাপিত হবে।

এদিকে, ভোলায় একটি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট তৈরি করবে সরকার। এ জন্য একনেকে আজ একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। প্রকল্পটির নাম ভোলা টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট স্থাপন প্রকল্প। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বস্ত্র পরিদপ্তর। এর বাস্তবায়ন কাল ধরা হয়েছে জুলাই, ২০১৪ থেকে জুন, ২০১৭ পর্যন্ত। সভায় জানানো হয়, ভোলায় এ টেক্সটাইল ইন্সটিটিউটটি স্থাপিত হলে প্রতি বছর ৮০ জন বস্ত্র প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদ তৈরী হবে।

রাজশাহী ও চট্টগ্রামে আধুনিক প্রশিক্ষণ সুবিধাদিসহ দুটি ক্রীড়া স্কুল প্রতিষ্ঠা করবে সরকার। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ৭৯ কোটি টাকায় বিকেএসপি এটি বাস্তবায়ন করবে। এর বাস্তবায়ন কাল ধরা হয়েছে জুলাই, ২০১৪ থেকে জুন, ২০১৭ পর্যন্ত।

একনেকে অনুমোদন পাওয়া অপর প্রকল্পটি হলো-চুয়াডাঙ্গায় একটি শিল্পনগরী স্থাপন করতে যাচ্ছে সরকার। অনুমোদিত প্রকল্পটির নাম বিসিক শিল্পনগরী, চুয়াডাঙ্গা। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন(বিসিক) সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ৩২ কোটি টাকায় জুলাই, ২০১৪ থেকে জুন, ২০১৭ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করবে।

সভায় জানানো হয়, এ প্রকল্পের আওতায় ১৬৯টি ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্প ইউনিট স্থাপন করা হবে। এর মধ্যে ৬০০০ বর্গফুটের এ টাইপ প্লট থাকবে ৬২টি। ৪৫০০ বর্গফুটের বি টাইপ প্লট ৪৩টি। ৩০০০ বর্গফুটের সি টাইপ প্লট রয়েছে ৪৬টি। বাকি ১৮টি বিভিন্ন সাইজের এস টাইপ প্লট স্থাপিত হবে।

একনেক সভায় মন্ত্রীপরিষদের বিভিন্ন সদস্যসহ উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

 

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত