আগামী পাঁচ বছরে মুল গুরুত্ব হবে আইটি শিল্পের উন্নয়ন ও রপ্তানি বৃদ্ধিঃ জয়

462

Published on মার্চ 19, 2014
  • Details Image

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শতাধিক তরুণ উদ্যোক্তা, আইসিটি বিশেষজ্ঞ এবং পেশাজীবীর অংশগ্রহণে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আগামী পাঁচ বছর পর তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে রপ্তানি আয় ১০০ কোটি ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য ঠিক করেছেন । আর এই ধারা অব্যাহত থাকলে এই খাতে রপ্তানি আয় পোশাক খাতকেও ছাড়িয়ে যাওয়াটা কঠিন হবে না বলে মনে করেন তিনি।
তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের বিকাশে আগামী ৫ বছরে কী উদ্যোগ নেয়া হবে- জানতে চাইলে জয় বলেন, গত ৫ বছরে সরকারের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষার একটি ভিত গড়ে তোলা। এখন লক্ষ্য সেই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে এগিয়ে চলাই এখন তাঁর লক্ষ্য বলে উল্লেখ করেন জয়।
“পাঁচ বছর আগে আমরা যখন শুরু করি ২৩ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি ছিল, তা এখন ২০০ মিলিয়ন হয়েছে। এই গ্রোথ রেট ধরে রাখব, আগামী ৫ বছরের মধ্যে এক বিলিয়ন ডলার হবে বলে আশা করি।”
গত ৫ বছরে এগিয়ে গেলেও কোনো হতাশা আছে কি না- এক তরুন উদ্যোক্তার এমন প্রশ্নের উত্তরে জয় বলেন, “হতাশা অবশ্যই আছে, সার্ভিস ও ডিজিটালাইজেশনের দিক থেকে চমৎকারভাবে এগিয়ে গেছি। তবে গত ৫ বছরে ইউনিয়ন পর্যন্ত ফাইবার অপটিক কেবল নিয়ে যাবার পরিকল্পনা ছিল, তার ধারে কাছেও যাইনি। আগামী ৫ বছরে তা করা হবে।”
জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা ২০০৯ সংশোধন নিয়ে জয় বলেন, ‘নীতিমালা তৈরী করার চাইতে নীতি বাস্তবায়ন যেন দ্রুত হয় সেখানেই গুরুত্ব দিচ্ছি। পলিসি রিভাইজ হতে থাকবে, প্রয়োজনে বারবার হবে।” তিনি আরও বলেন, “যখন আইসিটি পলিসি বানাই, সরকারি অফিসে টাইপরাইটারের পরিবর্তে কম্পিউটার ব্যবহার শুরু হয়, তখন হাইলেভেল পলিসি করতে চাইনি। আমরা আইসিটি পলিসি করেছি, তা যেন বাস্তবায়ন করা যায়।”

জয় বলেন, “সামনে এগোনোটাই আমাদের উদ্দেশ্য। আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, ততদিন বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।”
জয় জানান, তার প্রথম ৫ বছরের লক্ষ্য ছিল সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডিজিটালাইজড করা, দ্বিতীয় পাঁচ বছরের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের দিকে নজর রাখার পরিকল্পনা ঠিক করেন তিনি।
“দেশব্যাপী উদ্যোক্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে, কী প্রশিক্ষণ নিলে ভালো হবে তা জেনেছি, বর্তমানে মোবাইল অ্যাপ ট্রেনিং চলছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ফ্রি ল্যান্সিংয়ে ৩ নম্বরে রয়েছে। বেশিরভাব ফি ল্যান্সারদের মার্কেট করার পলিসি নেই, তাদের বর্তমানে বিজনেস কেইস দেখানো হচ্ছে যাতে তারা ব্যবসায় এগিয়ে যেতে পারে।”
বিদেশের সাথে লেনদেনে পেপ্যাল চালুর প্রসঙ্গে জয় বলেন, “যত যোগ্যতা ছিল পেপাল পেতে, তার সব যোগ্যতা বাংলাদেশের রয়েছে, পেপালের প্রতিটি দেশের জন্য একটি মডিউল করে, তবে বাংলাদেশ নিয়ে তাদের আগ্রহ নেই, তাদের চাপ দেয়া হচ্ছে, এখনো পেপালের জন্য অপেক্ষা করে আছি।” তবে পেপালের জন্য অপেক্ষা না করে মাস্টারকার্ড কিংবা ভিসাকার্ডের সঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।
অবকাঠামো উন্নয়নে আরো কী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন,এখন পরিকল্পনা দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলের। বিটিসিএল ও মোবাইল অপারেটর ছাড়াও এখন দুটি এনটিটিএন কোম্পানি ফাইবার অপটিক লাইন স্থাপনে কাজ করছে। “আরো তিনটি এনটিটিএন কোম্পানি এ লাইসেন্স নিতে আগ্রহী, আমরা আরো লাইসেন্স দেব।”
গুগলের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটিটিভ কাজী মনিরুল কবির বলেন, “শুধু এই পলিসি নয়, এর সঙ্গে যেগুলো জড়িত রয়েছে, যেমন এ সংক্রান্ত আইন, ব্যাংকিং সিস্টেমে রিফর্মসহ অন্যান্য বিষয়গুলোও রিফর্ম করতে হবে।”
এই প্রসঙ্গে জয় বলেন, “আমাদের অনেকগুলো আইন আছে সব কিছু রিফর্ম করতে হবে তা নয়। অনেক ভালো আইন আছে, বিটিআরসির লোকবল কম, ইনফোর্সমেন্ট কম।”
ভ্যালু এডেড সার্ভিস নীতিমালা হলেও তা চূড়ান্ত কেন করা হল না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আইপি (ইন্টেলেকচুয়াল প্রপাটি) আইন ঠিকঠাকভাবে চললে ভ্যাস দরকার নেই, আপাতত প্রয়োজন নেই বলে বাদ দেয়া হয়েছে, আগামীতে যে হবে না, তা নয়।”
অনুষ্ঠানের শুরুতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এই সভার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
“সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে তরুণরা বলে, তারা রাজনীতি পছন্দ করে না, রাজনীতিবিদদের কর্মকাণ্ড পছন্দ করে না, কিন্তু বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী জায়গায় তারা তাদের মতামত দিতে চায়। আজ এই সভার মাধ্যমে তরুণরা সেই সুযোগ পেয়েছে।”
২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন সফল করার দৃঢ় প্রত্যয়ের কথা জানান তরুণ এই প্রতিমন্ত্রী।

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত