গণমাধ্যমে চতুর্মুখী সংকট, সাংবাদিকেরা টার্গেট, চাকরিহীন, আর নিঃস্ব

41

Published on মে 4, 2025
  • Details Image

বাংলাদেশের সাংবাদিকতা আজ এক ভয়াবহ সংকটে নিমজ্জিত। স্বাধীন সংবাদমাধ্যম এখন আর কেবল রাজনৈতিক শক্তির রোষানলে নয় এবার টার্গেটে রেখেছে উগ্রবাদী মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলো। টেলিভিশন, পত্রিকা, অনলাইন সবখানেই চলছে সাংবাদিক নিপীড়ন, দমন-পীড়ন, এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে কণ্ঠরোধের অপচেষ্টা।

বর্তমান সরকারকে সমালোচনা করা মানেই এখন মিথ্যা মামলায় আসামি হওয়া, রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ পাওয়া কিংবা জঙ্গি হামলার শিকার হওয়া। একদিকে পুলিশ ও প্রশাসনের রোষ, অন্যদিকে মৌলবাদী গোষ্ঠীর হুমকি এই দুই আগুনের মাঝে পড়ে আছে সাংবাদিক সমাজ।

৫ আগস্ট ২০২৪ এর পর থেকে মিডিয়া জগতে এক ভয়াবহ 'শুদ্ধি অভিযান' শুরু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এখন পর্যন্ত অন্তত ২০০০ জন সাংবাদিক টেলিভিশন, পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়া থেকে ছাঁটাই হয়েছেন। সরকারের অনুগত না হওয়া, নিরপেক্ষ থেকে কাজ করা বা অনুসন্ধানী রিপোর্ট করাই তাদের "অপরাধ" হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বেকার হয়ে পড়া সাংবাদিকদের জীবন আজ অনিশ্চয়তায় ভরা।

আর যারা এখনও চাকরিতে টিকে আছেন, তাদেরও অবস্থা শোচনীয়। অধিকাংশ সংবাদপত্র নিয়মিত বেতন দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। অনেক সাংবাদিক ২-৩ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি বাস্তবে উপেক্ষিত। কোন কোন মিডিয়ায় জুনিয়র রিপোর্টারদের ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায় পূর্ণ সময় কাজ করানো হচ্ছে যা স্পষ্ট শ্রমিক শোষণ।

এই চতুর্মুখী বিশৃঙ্খলায় গণমাধ্যম ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। একদিকে রাজনৈতিক দমন, অন্যদিকে মৌলবাদী সন্ত্রাস, তৃতীয়দিকে আর্থিক অনিশ্চয়তা ও মালিক পক্ষের শোষণ এই তিনে পিষ্ট হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের গণমাধ্যম এবং তার প্রাণ সাংবাদিকেরা।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেবল সাংবাদিকদের বিষয় নয়, এটি একটি জাতির বিবেকের প্রশ্ন। যদি সাংবাদিকেরা চুপ করে যান, যদি সত্য চাপা পড়ে যায়, যদি মিথ্যা-ভিত্তিক প্রচার চলে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে তবে জনগণের চোখ বন্ধ থাকবে, গণতন্ত্র নিঃশব্দে হারিয়ে যাবে।

এখন প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত