২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশ গড়ার কাজ অনেক দূর এগিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

497

Published on জুলাই 23, 2014
  • Details Image

তিনি বলেন, ‘আমরা উন্নয়নমূলক যে কাজগুলো করে যাচ্ছি, সেগুলো বাস্তবায়নের একটা সুযোগ পেয়েছি। এখনো আমাদের হাতে চার বছর পাঁচ মাসের মত সময় আছে। এর মধ্যে আমরা যে কাজগুলো হাতে নিয়েছিলাম সেগুলো করে যেতে পারবো।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আমাদের ভিশন-২০২১ এর মধ্য বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ বানানোর স্বপ্নের কথা বলেছিলাম। সেই স্বপ্ন পূরণের পথে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। এখন আমরা স্বপ্ন দেখছি উন্নত দেশের। যা ২০৪১ সালের মধ্যই আমরা অর্জন করতে চাই।’

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লন্ডনের হিলটন হোটেলে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিত ইফতার মাহফিল পূর্বক এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মোহাম্মদ শরীফের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজেদুর রহমান ফারুকের পরিচালনায় আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ইফতারে যোগ দেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব একেএম শামীম চৌধুরী, বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিলসহ প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীরাও ইফতার মাহফিলে অংশ নেন।

ইফতার পূর্বক আলোচনা সভাশেষে যুক্তরাজ্য ছাত্রলীগের একটি ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। যুক্তরাজ্য ছাত্রলীগের সভাপতি তামিম আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক সজীব ভূঁইয়া এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি-জামায়াতের নির্বাচন ঠেকানোর আন্দোলনের ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোন দল যদি নির্বাচনে অংশ না নিয়ে মনে করে, নির্বাচন ঠেকাবে, ঠেকাতেও যদি ব্যর্থ হয়, আন্দোলন করতেও যদি ব্যর্থ হয় সে দায় তো বাংলাদেশের জনগণের না। সে দায় আমাদের না। ব্যর্থতার আগুনে তারা সবাইকে পোড়াতে চাচ্ছে। আল্লাহর রহমতে পারবে না।’

তিনি বলেন, জনগণের সমর্থন না থাকায় নির্বাচন ঠেকাতে তারা যেমন ব্যর্থ হয়েছে, তেমনি বিএনপি আন্দোলনেও ব্যর্থ। এ ব্যর্থতার দায় বিএনপির নিজের। জনগণের ভাষা বুঝতে না পারলে এমনটি হয়। রাজনীতির নামে সহিংসতাকে না বলায় তিনি বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, পহেলা জানুয়ারির মধ্যে আমরা সকল ছাত্র-ছাত্রীদের বই বিতরণ করেছি। কারণ আমাদের সদিচ্ছা ছিল। হরতাল, খুন, বাস পোড়ানো, ট্রেন পোড়ানো, কোরআর শরীফ পোড়ানো, মসজিদে আগুন দেয়া, বাসে আগুন দেয়া, গাছ কাটা, রাস্তা কাটাসহ এমন অপকর্ম নাই, নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপি-জামায়াত করে নাই।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়নের কৌশল আজ বিদেশিরাও জানতে চান।

প্রসঙ্গত ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিট ক্যামেরনের সাথে শেখ হাসিনার বৈঠকে বাংলাদেশে আসার আগ্রহ প্রকাশ করে “তিনি বলেছেন যে, আমি এটা দেখতে চাই নারীর উন্নয়ন, অব্যাহত ৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি এটা আপনারা কিভাবে করলেন আমি সরেজমিনে দেখতে চাই।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম একটি নির্বাচিত সরকার আর একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। আল্লাহ সহায় আছেন, বলেই আমি এত কষ্ট ও ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যও কাজ করে যেতে পারছি।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই। যে শহীদরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন তাদের চেতনায় বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চাই। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে তাঁর কন্যা হিসাবে সে দায়িত্ব পালন করতে চাই।

প্রবাসীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের অর্থনীতিতে তাদের অনেক আবদান রয়েছে। তাই তাদের সুখ ও দুঃখ আমাদের দেখতে হবে। প্রবাসীরা বাংলাদশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি।

শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে তাঁর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনসহ বিভিন্ন সময় প্রবাসীদের ভূমিকা স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমি ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে কথা বলেছি। ভিসার সমস্যা যাতে না হয় তারা সে বিষয়টা দেখবেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে এবং তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে যে সহায়তা তারা দেন সেটা অব্যাহত রাখবেন।

তরুণ সমাজকে আওয়ামী লীগের অদর্শে এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে একমাত্র মানুষের উন্নতি হয়। দেশের জনগণ কিছু পায়। তরুণ সমাজকে বলবো আওয়ামী লীগের আদর্শ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। একমাত্র আওয়ামী লীগই বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণ চায়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নতি হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭৫ এর ১৫ অগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা না হলে বাংলাদেশ এতদিনে একটি উন্নত দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হত। বহু আগেই এই বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্বে মর্যাদা পেত।

ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র জয়ের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এই বিশাল সম্পদ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগবে।

পদ্মা সেতু নিয়ে চড়ম ষড়যন্ত্র হয়েছে দাবী করে শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে একটা চরম ষড়যন্ত্র হয়েছে। আপনারা জানেন যে কারা ষড়যন্ত্র করেছিল। আল্লাহর রহমতে নিজেদের অর্থায়নে আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণ করবো। আমরা তা ইতোমধ্য শুরু করেছি।

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত