২১ আগস্টে হামলাকারীদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে জনগণের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহবান

1107

Published on আগস্ট 21, 2014
  • Details Image

<p style="text-align: justify;">&nbsp;</p>
<p style="text-align: justify;">প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলাকারী ব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তারা নিজেদের হীনস্বার্থে দেশ ও জাতির ওপর যে কোন ধরনের আঘাত হানতে পারে।</p>
<p style="text-align: justify;">তিনি বলেন, ‘এটি সুস্পষ্টভাবে পরিষ্কার যে আমাকে এবং আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদেরকে হত্যার জন্য এই জঘণ্য অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে বিএনপির সরকারের মন্ত্রী তারেক জিয়া এবং স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি জড়িত ছিল।’</p>
<p style="text-align: justify;">খুনীরা যাতে আবার ক্ষমতায় ফিরে আসতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের উস্কানিতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। আর স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তিকে ধ্বংস করার তাদের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারেক জিয়ার সেদিন আমাকে হত্যার করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল।</p>
<p style="text-align: justify;">প্রধানমন্ত্রী আজ বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গ্রেনেড হামলাস্থলে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর এ কথা বলেন। ২০০৪ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর সামনে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে ঘাতকরা ১৩টি গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।</p>
<p style="text-align: justify;">শেখ হাসিনা প্রথমে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে একটি এবং পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসাবে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।</p>
<p style="text-align: justify;">এসময় মন্ত্রীবর্গ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোটের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং গ্রেনেড হামলায় নিহতদের পরিবারের সদস্য ও আহতরা উপস্থিত ছিলেন।</p>
<p style="text-align: justify;">সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামও বক্তৃতা করেন।</p>
<p style="text-align: justify;">অনুষ্ঠানে গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং তাদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া করা হয়। ভাষণ শেষে প্রধানমন্ত্রী গ্রেনেড হামলায় হতাহতদের স্বজনদের সঙ্গে মিলিত হন।</p>
<p style="text-align: justify;">প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিলেটে ব্রিটিশ হাইকমিশনার ও শাহজালালের দরগায় হামলাসহ দেশব্যাপী জঙ্গিদের সন্ত্রাসী কর্মকা-ের প্রতিবাদে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশের আয়োজন করে। কিন্তু ঘাতকরা প্রকাশ্য দিবালোকে এ ধরনের জঘণ্য হত্যাকান্ডে লিপ্ত হয়। যা এর আগে দেশের জনগণ কখনো দেখেনি। খুনীরা সমাবেশের ওপর ১৩টি গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর ছত্রছায়ায় তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।</p>
<p style="text-align: justify;">সেদিনের দুঃসহ ঘটনার স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটার পর একটা গ্রেনেড বিস্ফোরণ হচ্ছে। আমাদের নিজেদের রক্ষা করার কোনো উপায় ছিল না। আমি আমার চশমা হারিয়ে ফেলি। ফলে কোথাও গিয়ে আশ্রয় নেয়া আমার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। তবে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ আমার চারদিকে মানবদেয়াল রচনা করে আমার জীবন রক্ষা করেন।’</p>
<p style="text-align: justify;">শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঘটনাস্থল ছেড়ে যাওয়ার জন্য আমি যখন গাড়িতে উঠি তখন খুনীরা আমার ওপর গুলিও ছোড়ে। গুলিতে আমার দেহরক্ষী ঘটনাস্থলে নিহত হয়। সর্বশক্তিমান আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি বেঁচে যাই।’</p>
<p style="text-align: justify;">তিনি বলেন, এই জঘণ্য হামলায় মহিলা আওয়ামী লীগের তদানিন্তন সভাপতি আইভি রহমান, একনিষ্ঠ আওয়ামী লীগ কর্মী আদা চাচাসহ ২৪ জন নিহত এবং প্রায় ১ হাজার নেতা-কর্মী আহত হয়। <br />প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের ঘটনায় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর দায়িত্ব হচ্ছে জনগণকে উদ্ধার করা। কিন্তু উদ্ধারের পরিবর্তে সেদিন পুলিশ যারা আহতদের সাহায্যার্থে এগিয়ে এসেছিল তাদের উপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।</p>
<p style="text-align: justify;">তিনি বলেন, অপরাধীদের গ্রেনেড হামলার সকল আয়োজন সম্পন্ন করে বিএনপি সরকার ২১ আগস্ট ভোরে আমাদেরকে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়। ঘাতকদের রক্ষার জন্য সরকার ঘটনার সকল আলামত নষ্ট করে দেয়। তারা একটি অবিস্ফোরিত গ্রেনেডও ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে যায়।</p>
<p style="text-align: justify;">শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি সরকার আহতদের চিকিৎসা সেবা না দিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়। বিএসএমএমইউ (তদানীন্তন পিজি হাসপাতাল) কর্তৃপক্ষ গুরুতর আহতদের ভর্তি করতে অস্বীকৃতি জানায়।</p>
<p style="text-align: justify;">শেখ হাসিনা আরো বলেন, শুধু তাই নয়, বিএনপি সরকার বিষয়টি সংসদে উত্থাপন করতেও দেয়নি আমাদেরকে। তারা উল্টো বলেছে, আমি আমার ভেনিটি ব্যাগে গ্রেনেড বহন করেছি।</p>
<p style="text-align: justify;">প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্বোরোচিত গ্রেনেড হামলার কিছুদিন আগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বর্বোরোচিত গ্রেনেড হামলার কিছুদিন আগে বলেছিলেন যে, ভবিষ্যতে আমি কখনো প্রধানমন্ত্রী এমনকি বিরোধী দলীয় নেতাও হতে পারবো না।</p>
<p style="text-align: justify;">শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মনে করি বেগম জিয়া খুব সচেতনভাবেই এ কথা বলেছেন। কেননা তিনি আগামী নির্বাচনের আগেই আমাকে হত্যা করার পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছেন।’</p>
<p style="text-align: justify;">প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে এবং দেশের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করতে তারা আমাকে টার্গেট করে। তারা ১৯৭১ সালের বিজয়কে মেনে নিতে পারেনি এবং তারা কখনো জাতির অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি চায় না।</p>
<p style="text-align: justify;">শেখ হাসিনা বলেন, অনেক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ একটি বিপুল সম্ভাবনাময় দেশ। উন্নয়নের রোল মডেল হিসাবে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণকে যে কোন চক্রান্তের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে।</p>
<p style="text-align: justify;">-বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)</p>

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত