কোন ধর্মই সংঘর্ষ, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ সমর্থন করে নাঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

421

Published on অক্টোবর 20, 2015
  • Details Image

শেখ হাসিনা বলেন, কোন ধর্মই সংঘর্ষ, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও ধ্বংসাত্মক কর্মকা- সমর্থন করে না। কিছু লোকের মধ্যে খারাপ মনোভাব রয়েছে। ফলে আমরা চাই জনগণ কুপ্রবৃত্তি থেকে মুক্ত থাকবেন। তারা একে অন্যকে সম্মান দেবে। আমরা বিশ্বাস করি, এই বিশ্বাসই সকলের জন্য সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির এবং ঢাকা রামকৃষ্ণ মিশনে দুর্গাপূজা মন্ডপ পরিদর্শনকালে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের উদ্দেশে বক্তৃতাকালে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী প্রথমে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির এবং পরে ঢাকা রামকৃষ্ণ মিশন পরিদর্শন করেন।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কাজল দেবনাথ এবং সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুমার দেব, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ সাহা মনি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জে এল ভৌমিক।

রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দ ঢাকা রামকৃষ্ণ মিশনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।

এর আগে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দ ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে ফুলের তোড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।

ঢাকা রামকৃষ্ণ মিশনের কর্মকর্তারাও সেখানকার অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি ধর্মের লোক এই দেশে ভ্রাতৃত্বের চেতনায় এক সঙ্গে বসবাস করছে। তিনি বলেন,আপনারা সকলে এই মাটির সন্তান। সুতরাং আপনারা আত্মবিশ্বাস ও মর্যাদার সঙ্গে এখানে বসবাস করবেন।

প্রধানমন্ত্রী হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার অনুষ্ঠানে হিন্দু সম্প্রদায়ের সকল সদস্যকে তাঁর শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ধর্ম যার যার উৎসব সকলের।

শেখ হাসিনা বলেন, সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তাঁর সরকার ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন এবং ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে জনগণের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছে। তিনি বলেন, একইভাবে আমরা প্রতিটি ধর্মের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা করেছি।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সংবিধানের চার মৌল নীতির অন্যতম ধর্মনিরপেক্ষতাকে বাদ দেয়া হয়।

তিনি বলেন, একটি পরিবারকে নির্মূল করাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যার লক্ষ্য ছিল না, এ হত্যাকা-ের মূল লক্ষ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করা।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে তাঁর সরকার ক্ষমতায় এসে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে। তিনি বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়।

শেখ হাসিনা বলেন, খুবই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দেশব্যাপী পূজা উদযাপিত হচ্ছে। দুর্গাপূজার এই উৎসবে অন্য ধর্মের লোকরাও যোগ দিচ্ছে। শান্তিপূর্ণভাবে এই উৎসব উদযাপনের সহযোগিতা করার জন্য তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সদস্য ও স্থানীয় জনগণকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সকল ধর্মের মানুষ দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে এবং স্বাধীনতা অর্জনে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়া। আমরা সেই লক্ষ্য অর্জনে আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালাচ্ছি এবং এ ব্যাপারে দেশ অনেকদূর এগিয়ে গেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই দক্ষিণ এশিয়ায় একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের অর্থনীতি দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে।

তিনি দেশের সকল ধর্মের মানুষের সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ জীবন কামনা করেন। তিনি বলেন, আমরা মানবতার বিজয় কামনা করছি।

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত