386
Published on ডিসেম্বর 6, 2015এ বছরের শুধু নভেম্বর মাসেই গত বছরের একই মাসের তুলনায় রফতানি বেড়েছে ১৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশিষ বসু ও নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান মনে করছেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশ কিছুদিন ধরে স্থিতিশীল থাকায় রফতানি বাণিজ্যে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
অর্থবছরের বাকি মাসগুলোতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তারা।
ইপিবি রবিবার হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে এক হাজার ২৮৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বাংলাদেশ এক হাজার ২৮৭ কোটি ৯৮ লাখ ৩০ হাজার ডলারের পণ্য রফতানি করেছে।
গত অর্থবছরের এই পাঁচ মাসে রফতানি থেকে আয় হয়েছিল এক হাজার ২০৭ কোটি ডলার। এই হিসেবে পাঁচ মাসের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে শূন্য দশমিক ০১ শতাংশ বেশি আয় এসেছে দেশে।
এই সময়ে সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে নিট পোশাক রপ্তানি থেকে- ৫২৩ কোটি ৬৭ লাখ ৩০ হাজার ডলার। উভেন পোশাক থেকে এসেছে ৫২২ কোটি ৬০ লাখ ৩০ হাজার ডলার।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই সময়ে নিট পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ। উভেনে প্রবৃদ্ধি আরও বেশি, ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
নিট পোশাক রফতানিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেশি আয় হয়েছে। তবে উভেনের আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি।
চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে অর্থ্যাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রফতানি আয় গত বছরের প্রায় সমান ছিল। কিন্তু পাঁচ মাস পরে এসে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মূলত অক্টোবর ও নভেম্বরের রফতানির ওপর ভর করে।
অক্টোবর মাসে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২১ দশমিক ১৫ শতাংশ।
বছরের শুরুতে বিএনপি-জামায়াতের তিন মাসের হরতাল-অবরোধের মধ্যে ব্যাপক সহিংসতায় দেশের অর্থনীতি ও ভাবমূর্তির ক্ষতির বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশিষ বসু বলেন, ‘অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এক সময় যেসব ক্রেতা বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন বলে চিন্তা করছিলেন, তারা সবাই এখন আমাদের এখান থেকে পণ্য কিনছেন’।
পাশাপাশি বাংলাদেশের গার্মেন্টস মালিকরা ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী ‘কমপ্লায়েন্স’ বাস্তবায়ন করায় রফতানি আয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে ইপিবি প্রধান মনে করেন।
‘আমরা কম দামে যে মানের পোশাক রফতানি করি, পৃথবীর অন্য কোনো দেশ তা পারবে না। সে কারণে ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পোশাক কিনবেন- এটা নিশ্চিত করে বলা যায়’।
বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমান বলেন, ‘আমরা নতুন বাজারে নিট পণ্য রপ্তানি করছি। তার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে রপ্তানিতে’।
দেশে স্থিতিশীল রাজনীতি থাকলে আগামীতে নিট পোশাক রফতানি আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, জুলাই-নভেম্বর সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি বেড়েছে ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। ওষুধ রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ১৮ শতাংশ।
তবে হিমায়িত চিংড়ি রফতানি ২৫ দশমিক ২৪ শতাংশ কমেছে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি কমেছে ১ দশমিক ১৪ শতাংশ। কৃষি পণ্য রফতানি কমেছে ২৩ দশমিক ৬২ শতাংশ।২০১৪-১৫ অর্থবছরে রফতানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ১২০ কোটি ডলার। এবার তা ৩ হাজার ৩৫০ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।
সংবাদঃ বিডিনিউজ২৪