১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি’র বিবৃতি

8365

Published on জুলাই 29, 2018
  • Details Image

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস-জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক বিবৃতি প্রদান করেছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বিশ্বের ইতিহাসে নির্মমতার এক কালো অধ্যায়। এদিন শুধু সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুই নয়, ঘাতকদের নির্মম বুলেটে প্রাণ হারান বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামালকে। পৃথিবীর এই নৃশংসতম হত্যাকা- থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তাঁর ছেলে আরিফ, মেয়ে বেবি ও নাতি সুকান্ত সেরনিয়াবাত বাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মণি, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি এবং আবদুল নাঈম খান রিন্টু ও কর্নেল জামিল। দেশের বাইরে অবস্থান করার কারণে সেদিন প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ঘাতকেরা শুধু এদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাই করেনি, হত্যা করেছিল বাঙালি জাতির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অগ্রযাত্রা, সমৃদ্ধি ও সুন্দর আগামীর স্বপ্নকে। একটি সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে স্বাধীন করে সোনার বাংলা বিনির্মাণের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন ১৫ আগস্ট খুনিদের বুলেট বাঙালির সেই স্বপ্নকে হত্যা করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শত বছরের একটি পরাধীন জাতিকে স্বাধীনতা দিয়ে বিশ্বের দরবারে বাঙালিদের বীরের জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার মাত্র তিন বছর সাত মাসের মধ্যে দেশী ও বিদেশী চক্রান্তের মাধ্যমে ঘাতকরা জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে বাঙালি জাতির কপালে কলঙ্কের তিলক পরিয়ে দেয়। খুনিরা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রের অন্যতম সহযোগী জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে ঘৃণ্য ইনডেমনিটি আইন জারি করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে দীর্ঘ ২১ বছর জাতি হিসেবে আমরা বিচারহীনতার কলঙ্ককের বোঝা বহন করেছি। জাতির পিতার কন্যা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত সরকার বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নিয়মতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০১০ সালে ঘাতকদের ফাঁসির রায় কার্যকর করার মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেন।

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের অনেকেই এখনও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার সরকার খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকর করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। হত্যাকারীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে সক্ষম হলেও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনাকে কখনো হত্যা করতে পারেনি। হত্যা করতে পারেনি বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নকে। বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জনগণের যে মুক্তির স্বপ্ন দেখেছিলেন তারই কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ আজ সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা ও দারি‌দ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা আজ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যকে জয় করে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে একটি উন্নয়নশীল, মর্যাদাবান জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই। শেখ হাসিনা সকল ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েও ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সম্মুখীন করেছেন।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের এমপি বলেন, আজ বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তাঁর আদর্শ, চেতনা আর রক্তের উত্তরাধিকার শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা রয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনাকে ধারণ করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। বাঙালি জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ‘‘মুজিববর্ষ” হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশে পরিণত করবে। সেই স্বপ্নময় ভবিষ্যতের বিনির্মাণের জন্য জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

বিবৃতিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাত বার্ষিকী, জাতীয় শোক দিবস যথাযথ মর্যাদার সাথে পালনের জন্য দেশবাসী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং তার সকল সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সংস্থাসমূহের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। একইসাথে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডসহ সমস্ত শাখার নেতৃবৃন্দকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ করে দিবসটিকে স্মরণ ও পালন করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন।

তারিখ: ২৯ জুলাই ২০১৮
প্রেস বিজ্ঞপ্তি 

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত