আমরা মানুষের জীবন বদলে দিয়েছিঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

4601

Published on নভেম্বর 1, 2018
  • Details Image
  • Details Image
  • Details Image

আওয়ামী লীগ সরকারের শুরু করা যেসব প্রকল্পের কাজ এখনো শেষ করা যায়নি, সেগুলো সম্পন্ন করে দেশকে আরও উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য দেশবাসীর কাছে আবারও সুযোগ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৫৬টি জেলায় ৩২১টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, “আমরা দিন বদলের ঘোষণা দিয়েছিলাম। প্রকৃতপক্ষে মানুষের জীবন বদল হয়েছে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “নির্বাচন খুব সামনে। হয়তো যে কোনো সময় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। আবার আমরা জনগণের কাছে আসব, নৌকা মার্কায় ভোট আমরা চাইব।

“আমরা চাইব, যে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে যাচ্ছি সেগুলো যেন আগামী দিনে আমরা এসে সম্পন্ন করতে পারি এবং মানুষের কর্মসংস্থান, জীবন-মানের উন্নয়ন করতে পারি… সে সহযোগিতাও আমি দেশবাসীর কাছে চাই।”

গত দশ বছর ক্ষমতায় থেকে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা এবং বিরোধীদের সহিংস রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মত ‘কঠিন’ পরিস্থিতির মধ্যেও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা অনুষ্ঠানে বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশকে আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে পৌঁছে দিয়েছি। আজকে গ্রামের মানুষেরও ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে, উন্নত হয়েছে, আরো উন্নয়ন হোক সেটাই আমরা চাই। আর সে লক্ষ্য নিয়েই আমাদের কাজ।”
শেখ হাসিনা তার বক্তৃতার একটি বড় অংশজুড়ে অতীত জীবনের স্মৃতিচারণ করেন এবং কঠিন সময়ে তার পাশে থাকার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ত্যাগ ও সংগ্রাম এবং ১৯৭৫ সালে তাকে হত্যার ঘটনা মনে করিয়ে দিয়ে তার মেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “এই হত্যার মধ্য দিয়ে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল এবং যে চেতনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুর ডাকে অস্ত্র হাতে নিয়ে বিজয় অর্জন করেছিল তাকে নস্যাৎ করা শুরু হয়েছিল।

তখন দেশকে ভিন্নপথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়েছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, “উন্নয়নের যে যাত্রা বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন, তা থেমে গেল। দরিদ্র মানুষ দরিদ্রই থেকে গেল, একটা গোষ্ঠীর ভাগ্য পরিবর্তন হল। স্বাধীনতাবিরোধী ও বঙ্গবন্ধুর খুনীদের পুরস্কৃত করা হল।”

১৯৮১ সালে দেশে ফিরে এসে দলের দায়িত্ব নেওয়ার কথা স্মরণ করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “আমার চলার পথ এত সহজ ছিল না। খুনি, যুদ্ধাপরাধী, অপপ্রচার, নানাকিছু আমাকে মোকাবলা করতে হয়েছে। বারবার মুত্যুমুখে পড়তে হয়েছে।”

“বাংলাদেশের মানুষ ও আমার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কঠিন সময়ে কখনো গুলির মুখে, কখনো গ্রেনেড হামলা… সবসময় আমাকে ঘিরে থেকেছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন, তিনি হাতে তুলে তুলে আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন “

শেখ হাসিনা বলেন, “আমি মনে করি, এ বাঁচা বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য, মানুষের আশা আকাঙ্খা পূরণ করবার জন্য। আর আমার পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য। সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।”
প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর বিভিন্ন জেলায় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় সুন্দরবনের একদল জলদস্যু বাগেরহাটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অস্ত্র সমর্পণ করে।

প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনকে ‘দস্যুমুক্ত’ ঘোষণা করে অস্ত্র সমর্পণকারীদের এক লাখ করে অর্থ সহায়তা দেন এবং তাদের পুনর্বাসনের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন, সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেনসহ প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত