২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কর্মসূচি

10106

Published on মার্চ 24, 2019
  • Details Image

২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বাঙালি জাতির ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম ‘বাংলাদেশ’ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের স্ফুলিঙ্গে উজ্জীবিত সশস্ত্র জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের মুক্তির ইতিহাস, স্বাধীনতার ইতিহাস। স্বাধীনতার ইতিহাস ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান আর দুই লক্ষ মা-বোনের ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং কোটি বাঙালির আত্মনিবেদন ও সংগ্রামের গৌরবগাঁথা গণবীরত্বের ইতিহাস।

পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথ বেয়ে উপমহাদেশের জনগণ পেয়েছিল পাকিস্তান ও ভারত নামক দুটি রাষ্ট্র। এরপর শুরু হয় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক বাঙালিদের নতুন করে শোষণ ও পরাধীনতার শৃঙ্খলে বেঁধে রাখার ষড়যন্ত্র। পাকিস্তানি হানাদারদের শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় বাঙালি জাতি। বাঙালি জাতিকে মুক্তির মহামন্ত্রে উজ্জীবিত করে ধাপে ধাপে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পথে এগিয়ে নিয়ে যান ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ’৪৮-এ বাংলা ভাষার দাবীতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের পথ বেয়ে ’৫২-এর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে জয়লাভ, ’৫৬-এর সংবিধান প্রণয়নের আন্দোলন, ’৫৮-এর মার্শাল ’ল বিরোধী আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ’৬৬-এর বাঙালির মুক্তির সনদ ৬-দফার আন্দোলন, ৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ’৬৯-এর রক্তঝরা গণঅভ্যুত্থান, ৬-দফা ভিত্তিক ’৭০-এর ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ খ্যাত কালজয়ী ঐতিহাসিক ভাষণ ও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন প্রভূত ঘটনা প্রবাহের মধ্য স্বাধীনতা অর্জনের চূড়ান্ত লক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠে বাঙালি জাতি।

১৯৭১-এর ২৫ মার্চ কালো রাত্রিতে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির উপর নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করলে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলার মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সর্বস্তরের জনগণ জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের অধিনে পরিচালিত দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বিশ্বমানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের।

বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের এই ধারাবাহিক সংগ্রামে জীবনের ৪ হাজার ৬৭৫ দিন জেলে কাটিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কয়েকবার ফাঁসির কাষ্টের মুখোমুখি হয়েছেন, অসংখ্য মিথ্যা মামলায় অসংখ্যবার কারাবরণ করার পরও স্বাধীনতা অর্জনের প্রশ্নে আপোস করেননি। তিনি বাংলার মানুষকে দিয়েছেন একটি স্বাধীন ভূখণ্ড, একটি পতাকা, একটি মানচিত্র, জাতীয় সংগীত, সংবিধান, বিশ্বের বুকে গর্বিত পরিচয়।

বাংলা, বাঙালি ও বঙ্গবন্ধু একই বৃন্তে তিনটি চেতনার ফুল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে গরিব-দুঃখী-মেহনতী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল বঙ্গবন্ধুর সারা জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। তিনি জেল-জুলুম-হুলিয়া, শত যন্ত্রণা, দুঃখ-কষ্ট-বেদনাকে সহ্য করে বাংলার কৃষক-শ্রমিক জনতার মুখে হাসি ফোটাতে নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের মাঝে বঙ্গবন্ধু চিরদিন অম্লান থাকবেন এবং বাংলার জনতার হৃদয়ে চিরভাস্বর হয়ে থাকবেন।

প্রতিবারের ন্যায় এবারও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সমগ্র দেশবাসীর সাথে একাত্ম হয়ে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন করবে।

২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কর্মসূচি

২৬ মার্চ ২০১৯ মঙ্গলবার
সূর্যোদয় ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় ও দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন।

সকাল ৬.০০ মিনিট জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন। (মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের অব্যবহিত পর)

সকাল ৭.০০ মিনিট বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ।

টুঙ্গীপাড়ার কর্মসূচি
সকাল ১০.০০ মিনিট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ।

২৭ মার্চ ২০১৯ বুধবার
বিকেল ৩-৩০ মিনিট আলোচনা সভা। স্থান : বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র।

সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এমপি।

আলোচনা করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও বরেণ্য বুদ্ধিজীবীগণ।

সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি’র আহ্বান

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি এক বিবৃতিতে আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গৃহীত সকল কর্মসূচি দেশবাসীর সাথে একাত্ম হয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্য সংগঠনের সকল শাখাসহ আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসমূহের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীসহ সর্বস্তরের জনগণ ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তারিখ : ২৩ মার্চ ২০১৯
প্রেস বিজ্ঞপ্তি

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত