বঙ্গবন্ধুর ডাকে সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয় সারা বাংলায়

3400

Published on মার্চ 4, 2020
  • Details Image

৪ মার্চ, ১৯৭১। জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত এবং আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে পাকিস্তান সরকারের চক্রান্তের প্রতিবাদে গোটা পূর্ব বাংলার মানুষ ফুঁসে ওঠে। বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাংলার মানুষ একবিন্দুতে মিলিত হয়েছিল। যোগ দিয়েছিল অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে।

সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, রেডিও-টেলিভিশনের শিল্পী-কলাকুশলী, সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-শিক্ষক সবাই নেমে এসেছিলেন রাজপথে। সারাদেশে সেনাবাহিনীর গুলিতে বহু মানুষ শহিদ হন। হরতাল চলাকালে খুলনায় ছয় জন শহিদ হন সেনাবাহিনীর গুলিতে। চট্টগ্রামে দুই দিনে প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়ায় ১২১ জনে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদিনে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘চরম ত্যাগ স্বীকার ছাড়া কোনোদিন জাতির মুক্তি আসেনি।’ তিনি উপনিবেশবাদী শোষণ ও শাসন অব্যাহত রাখার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার আহ্বানে সাড়া দেওয়ায় বীর জাতিকে অভিনন্দন জানান। এদিকে জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা ও গণহত্যার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ঢাকাসহ সারা বাংলায় সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। প্রদেশের বেসামরিক শাসনব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে।

বঙ্গবন্ধু ৫ ও ৬ মার্চ হরতাল পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, যেসব সরকারি ও বেসরকারি অফিসে কর্মচারীরা এখনো বেতন পাননি, শুধু বেতন প্রদানের জন্য সেসব অফিস আড়াইটা থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এদিকে আগের দিন বঙ্গবন্ধুর আহ্বানের পর স্বাধিকার আন্দোলনে গুলিতে আহত মুমূর্ষু বীর সংগ্রামীদের প্রাণরক্ষায় সর্বস্তরের হাজার হাজার নর-নারী ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে রক্তদান করেন। এদিন থেকে রেডিও পাকিস্তান ঢাকা কেন্দ্র ‘ঢাকা বেতার কেন্দ্র’ এবং পাকিস্তান টেলিভিশন ‘ঢাকা টেলিভিশন’ হিসেবে সম্প্রচার শুরু করে। বেতার-টেলিভিশনের শিল্পীরা ঘোষণা করেন ‘যতদিন পর্যন্ত দেশের জনগণ ও ছাত্রসমাজ সংগ্রামে লিপ্ত থাকবেন, ততদিন পর্যন্ত বেতার ও টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তারা অংশ নেবেন না।’

 

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত