চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও সাধারন মানুষের পাশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর

1613

Published on মে 8, 2020
  • Details Image
  • Details Image

করোনায় টিউশন হারিয়ে বিপাকে চবি শিক্ষার্থীরা' শিরোনামে ডেইলি বাংলাদেশে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদন চোখে পড়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজাউল করিমের। ঠিক এমন সময়ে সবাই লকডাউনে ঘরবন্দী আছেন। কিন্তু প্রতিবেদনটি তাকে বেশ নাড়া দেয়। আর ঘরে বসে থাকতে পারলেন না। ফেসবুকে একটি গ্রুপ খুললেন। নাম দিলেন 'এসো মানুষের জন্য কিছু করি'। এরইমধ্যে শত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।

শুরুর গল্পটা শোনা যাক..

মহামারি করোনার প্রথম কিছুদিন নিজে ঘরে অবস্থান নিই। কিন্তু চারিদিকে মানুষের দুরবস্থা নিজেকে বসিয়ে রাখতে পারলাম না। বলছিলেন অধ্যাপক রেজাউল করিম।

তিনি বলেন, বিশেষ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিউশনবিহীন বিপাকে পড়ার সংবাদটা দৃষ্টিগোচর হয় তখন চিন্তার জায়গায় নাড়া দেয় একটু বেশি করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রছাত্রী আছে টিউশন নিজের খরচ চালাতো কিন্তু মহামারির করোনা (কোভিড-১৯) ভাইরাসের কারণে টিউশন বন্ধ, তারা অনেকেই মুখ ফুটে কিছু বলতে যাচ্ছে না। কারণ মধ্যবিত্তের আত্মসম্মান বেশি। এর পর থেকে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য হলেও কিছু করতে হবে। তারই আলোকে 'এসো মানুষের জন্য কিছু করি'র সূচনা।

এই গ্রুপের মাধ্যমে আমরা সেসব শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করছি যারা লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে বলতে পারে না এবং কেউ তাদের নিয়ে তেমন করে ভাবছেও না। সাহায্য নয় তাদের মুখে হাসি ফুটানো। আপাতত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিয়ে এই যাত্রা। ধীরে ধীরে বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং স্কুলের এই অসহায় ছাত্রছাত্রীদের মাঝে আমাদের হাসি ফুটানোর চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

যতো আলো জমা:

'এসো মানুষের জন্য কিছু করি' সংগঠনের পক্ষ থেকে ৩০ এপ্রিল চবিতে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে নিয়োজিত কর্মচারীদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ এবং চবির বিভিন্ন বিভাগের অস্বচ্ছল ২০ শিক্ষার্থীকে নগদ অর্থ প্রদান করা হয়। উক্ত খাদ্যসামগ্রী ও অর্থ প্রদানে উপস্থিত ছিলেন চবি ভিসি প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার।

এর আগে ২৯ এপ্রিল করোনাভাইরাস মোকাবিলায় চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম অস্থায়ী ৬০ শয্যার 'ফিল্ড হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ বিদ্যুৎ বড়ুয়ার কাছে অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়। চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর এলাকার নিম্নবিত্ত প্রায় শতাধিক পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী নিজ হাতে দিয়েছেন এই উদ্যোক্তা অধ্যাপক রেজাউল করিম। ২ মে নগরীর চকবাজার থেকে কিছু ইফতার সামগ্রী নিয়ে চবিতে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের পরিবার পৌঁছে দেন তিনি।

এগিয়ে যাওয়ার জন্য

করোনাকালীন এই দুর্যোগে লকডাউনের কারণে কষ্টে আছেন তাদের পাশে দাঁড়ানোর প্রয়াস নিয়ে তৈরি এই উদ্যোগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন আমেরিকা প্রবাসী ব্যবসায়ী শাহজাহান চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রশিদুল হাসান, কানাডা প্রবাসী আয়েশা আহমেদ, নিউইয়র্ক প্রবাসী রুহুল মাতিনসহ আরো অনেকেই।

এরইমধ্যে এ কার্যক্রমের সঙ্গে স্বেচ্ছায় কাজ করতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ নগরীর বিভিন্ন মানুষ আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

সামনের দিনগুলোতে কেমন চলবে এর কার্যক্রম? প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, এই ধরনের আরো কর্মকাণ্ড আমরা অব্যাহত রাখব। বিশেষ করে অসহায় ছাত্র ছাত্রীদের হাসি ফুটানো। সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার অসহায় মানুষের জন্য নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে চেষ্টা থাকবে।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত