'করোনা-আম্পান' আস্থা, বিশ্বাস, ভরসায় যুবলীগ

4609

Published on মে 26, 2020
  • Details Image

ইঞ্জিনিয়ার মোঃ শামীম খানঃ

যুগে যুগে মানুষের সকল দুঃসময়ে-দুর্দিনে পাশে দাঁড়িয়েছে সৃষ্টির সেরা জীব মানুষই। এক্ষেত্রে কোন মানুষ এককভাবে পাশে দাঁড়িয়ে অল্প কয়েকজনের কষ্টলাঘব করতে পারলেও কোটি কোটি মানুষের কষ্টলাঘব করতে পারে না। কেননা এক্ষেত্রে অনেক প্রতিবন্ধকতা সামনে আসে যা দূর করতে প্রয়োজন বৃহৎ মানুষের একটা রাজনৈতিক প্লাটফর্ম। যেখানে প্লাটফর্মের মূল আসন অলংকৃত করতে হয় সৎ ও মেধাবী নেতৃত্বকে। আমাদের দেশে বর্তমান সময়ে অনেক রাজনৈতিক প্লাটফর্ম আছে যাদের একেকটির ভূমিকা একেক রকম। রাজনৈতিক প্লাটফর্ম হিসেবে কোনও সংগঠনের খারাপ দিক উল্লেখ না করে শুধুমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ভূমিকা দৃষ্টিপাত করতে এ প্রয়াস।

পৃথিবীর বুকে আতঙ্ক ছড়ানো মরনঘাতি ভাইরাসটির নাম ‘করোনা’। চীনের উহান শহরে ছড়িয়ে পরার অনেক সময় পর মার্চ মাসের প্রথমদিকে বাংলাদেশে প্রথম সনাক্ত হলেও সময়ের ব্যবধানে আজ মহামারি আকার ধারন করে কয়কশত মানুষের প্রান কেড়ে নিয়ে ইতিমধ্যে আক্রান্ত করেছে ৩০ হাজার মানুষ। সারা পৃথিবীতে আক্রান্তের এ সংখ্যা ৫০ লাখ ছাড়িয়েছে।

ইতিমধ্যে সরকারের বিভিন্ন নির্দেশনা মেনে সাধারন মানুষ লকডাউনে আছে জীবন বাঁচানোর স্বার্থে। নিম্নআয়ের মানুষ পড়েছে বিভিন্ন সংকটে। ডাক্তার, নার্স, পুলিশ, রাজনৈতিক কর্মী সহ অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়েছে আক্রান্ত ও অসহায় মানুষের পাশে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে আক্রান্ত হয়ে অকালে জীবন দিয়েছে অনেকে। আমরা এদের স্মরন করব চিরদিন শ্রদ্ধায়-ভালবাসায়। বাংলাদেশে যতটি মূল সংগঠন ও সহযোগী সংগঠন আছে তাদের মধ্যে যে সংগঠনের কর্মীরা সবচাইতে বেশি অগ্রণী ভূমিকা রেখে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সেটি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।

৯ মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশের যুদ্ধাহত যুবক মুক্তিযোদ্ধা ও যুবকদের একত্রিত করে বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান গঠন করেছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। যার নেতৃত্বে দিয়েছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ শেখ ফজলুল হক মনি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত দেশের কল্যানে ভূমিকা রেখে চলেছে যুবলীগ।

বিগত সময়ে মাঝেমধ্যে কিছুটা ত্রুটিবিচ্যুতি হলেও আজ যুবলীগ প্রমান করে চলেছে সময়ের শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক কর্মী থাকলে তা যুবলীগেরই আছে। তাইতো এই দুঃসময়ে জাতির পাশে আপনজন হয়ে অগ্রণী রাজনৈতিক সংগঠন যুবলীগ। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যন্ত যুবলীগের রয়েছে লক্ষ লক্ষ কর্মী-সমর্থক।

করোনা ভাইরাসের কারনে দেশের মানুষকে লকডাউনে থাকতে হচ্ছে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জরুরী কাজে বের হতে হচ্ছে।এতে নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যে খাদ্য সংকট দেখা দিচ্ছে। এই সংকট দূরীকরণে সরকারের পাশাপাশি অনেক রাজনৈতিক সংগঠন এগিয়ে আসলেও যুবলীগের ভূমিকা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সাধারন মানুষের মধ্যে সবচাইতে বেশি প্রশংসনীয় হচ্ছে। ইউনিয়নের প্রত্যেকটি ওয়ার্ড থেকে শুরু করে জেলা শহর, রাজধানী শহর পর্যন্ত যুবলীগের নেতা-কর্মীরা তালিকা করে চাল, ডাল, আটা, আলু, তৈল, পিয়াজ সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌছে দিচ্ছে সমাজের পিছিয়ে পড়া লক্ষ লক্ষ মানুষের হাতে। যাতে কোনও মানুষ খাদ্য সংকটে না ভোগে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারন সম্পাদক মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল এর আহবানে যুবলীগের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা যার যার সামর্থ্যানুযায়ী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। যুবলীগের অনেক নেতা-কর্মীরা নিজের বাসায় রান্না করা খাবার ও ইফতার দিয়ে যাচ্ছে সাধারন মানুষের মাঝে।

করোনা সংকটে অগ্রজ যোদ্ধা ডাক্তার সমাজ। বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশে প্রয়োজনের তুলনায় ডাক্তার অনেক কম থাকায় ডাক্তাররা চিকিৎসা দিতে যথারীতি হিমশিম খাচ্ছে। সময়ের বাস্তবতা অনুধাপন করে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ টেলিমেডিসিন সেবা চালু করেছে। যুবলীগের এই টেলিমেডিসিন সেবায় যে সকল ডাক্তাররা কাজ করছে তাদের বেশিরভাগ ডাক্তাররাই যুবলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী-সমর্থক। কয়েকটি টিমে বিভক্ত হয়ে ২৪ ঘন্টা টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট ডাক্তাররা।যেকোন করোনা লক্ষণধারী রোগী যেকোন সময় ফোন দিয়ে চিকিৎসা বিষয়ক পরামর্শ পাচ্ছেন। একমাত্র রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে যুবলীগই এই টেলিমেডিসিন সেবা চালু করেছে।

লকডাউন থাকার কারনে বিভিন্ন রোগীরা হাসপাতালে যেতে বিড়ম্বনায় পড়ছে। মানুষের এই কষ্ট লাঘবের জন্য যুবলীগ রাজধানী সহ কয়েকটি জেলায় ফ্রি এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করেছে। রোগীরা ফোন করে বাসার ঠিকানা বললেই দ্রুত এ্যাম্বুলেন্স চলে যাচ্ছে বাসার সামনে এবং নিয়ে যাচ্ছে প্রয়োজনীয় হাসপাতালে। সার্বিক বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান ও সাধারন সম্পাদক এবং ইতিমধ্যে তারা ঘোষনা দিয়েছেন বর্তমান করোনা পরিস্তিতি সহ ভবিষ্যতেও জাতির পাশে যুবলীগ আছে এবং থাকবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ৫০ নং ওয়ার্ডের সভাপতি ‘সায়েম খন্দকার’ করোনা আক্রান্ত মানুষের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে গিয়ে নিজের জীবন দিয়ে প্রমান করে গেছেন যুবলীগ মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য নিজেদের জীবন দিতেও সদা প্রস্তুত। সায়েম ভাই ভাল থাকবেন পরপারে। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ ‘সায়েম খন্দকার’ এর জন্য সম্মানিত ও গর্বিত।

‘আম্পান’ ঘূর্ণিঝড় এমন সময়ে আমাদের সামনে হাজির হল যখন আমরা করোনা ভাইরাসের মত অন্য আরেকটি দুঃসময়ের মুখোমুখি। কয়েকদিন ধরেই আবহাওয়া অফিস থেকে বলা হচ্ছিল বাংলাদেশে আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় আম্পান। বিভিন্ন জেলায় সর্বোচ্চ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত সহ সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হচ্ছিল কয়েকদিন ধরেই। আম্পান ঘূর্ণিঝড়ে মানুষকে সাইক্লোন সেল্টারে নেয়া সহ প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার ও সতর্কবার্তা পৌছে দিতে সরকারের পাশাপাশি অগ্রণী ভূমিকা রেখে কাজ করেছে যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। বিভিন্ন জেলায় রাত জেগে যুবলীগের নেতা-কর্মীরা মানুষের জীবন বাঁচাতে কাজ করেছে।

কয়েকটি জেলায় যুবলীগের নেতৃবৃন্দ নিজহাতে বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশ ঠিক করতে কাজ করেছে। যুগে যুগে এভাবেই জাতির সকল ক্রান্তিলগ্নে মানুষের পাশে থেকেছে যুবলীগ।বর্তমান সময়ে আওয়ামী লীগের পর সবচাইতে প্রশংসনীয় সংগঠন যুবলীগ হওয়ার একমাত্র কারন সৎ ও সঠিক নেতৃত্ব। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের রক্তের উত্তারাধিকার শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারন সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল যুবলীগের হারানো ইমেজ ফিরিয়ে এনেছেন বহুগুণ। বর্তমান মানসিকতা ও মানবিকতাই হবে ভবিষ্যৎ যুবলীগের অনুপ্রেরণা।

হয়ত একদিন করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার হবে, হয়ত আমরা সিডর-আইলার মতো আম্পান এর কথাও একসময় ভূলে যাব। তবে ঐ সব অসহায় মানুষেরা হৃদয়ে দাগ কেটে মনে রাখবে আমাদের,যুবলীগের নেতা-কর্মীদের যারা সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। ‘করোনা-আম্পান’ এ দুঃসময়ে মানুষের আস্থা, বিশ্বাস ও ভরসায় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।

 

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত