আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

4187

Published on ফেব্রুয়ারি 21, 2021
  • Details Image

১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। সে জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের আন্তরিক সহযোগিতা ও যথেষ্ট অবদান রয়েছে। মনে হতে পারে যে এ সবকিছুই ঘটে গেছে রাতারাতি।

কিন্তু এ দিনটিকে ইউনেস্কোর কাছে তুলে ধরতে, তাৎপর্য বোঝাতে, বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে নিতে জননেত্রী শেখ হাসিনার যে কত প্রতিকূলতা পার হতে হয়েছে, কত কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে, স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কতটা কাজ করতে হয়েছে তা অনেকেরই অজানা।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবার দায়িত্ব পালনের সময় (১৯৯৬-২০০১) জননেত্রী শেখ হাসিনা একুশে ফেব্রুয়ারি এবং বাংলা ভাষা আন্দোলনকে আন্তর্জাতি স্বীকৃতিদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
 
২১শে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলেন কানাডার দু'জন প্রবাসী মিঃ রফিক এবং মিঃ সালাম। তবে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থা বেসরকারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে এ প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারেনি। অনুরোধ / প্রস্তাব একটি সদস্য রাষ্ট্র থেকে জমা দিতে হয়েছিল।
 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন এই বিষয়টি জানতে পেরেছিলেন, তখন খুব বেশি সময় বাকি নেই। আসলে, হাতে ছিল মাত্র ২৪ ঘন্টা। আওয়ামী লীগ সরকার তখন প্রবাসীদের নেতৃত্বাধীন 'মাতৃভাষা সংরক্ষণ কমিটি'র সাথে যোগাযোগ করে এবং প্রস্তাবনাটি ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইউনেস্কোর কাছে প্রেরণ করে। জরুরি ভিত্তিতে আমাদের মিশনগুলিকে অন্যান্য সদস্য দেশগুলোর সাথে যোগাযোগের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল পাশাপাশি এই প্রস্তাবটির জন্য তাদের সমর্থন চাওয়া হয়েছিল।
 
ফলস্বরূপ, '৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনে প্রস্তাবটি পাশ হয়। পরের বছর অর্থাৎ ২০০০ সালে থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।
 
এই অর্জনের পর ভাষা নিয়ে গবেষণায় অবদান রাখার জন্য এবং বিলুপ্তপ্রায় ভাষা সংরক্ষণের জন্য ১৯৯৯ সালেই একটি ইনস্টিটিউট গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০০১ সালে তিনি এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব কফি আনান সেগুনবাগিচায় ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। দুঃখের বিষয় এই যে পরবর্তী বিএনপি সরকার ২০০৩ সালে এর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। ২০০৮ সালে নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু হয় এবং ২০১০ সালে ইনস্টিটিউটটি পুরোদমে চালু হয়।
 
আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয় এই যে যে দিনটিতে ভাষার জন্য বাঙ্গালিরা প্রাণ দিয়েছিলেন, সেই দিনটিই বিশ্বের সমস্ত ভাষার প্রতি সম্মান ও সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি রক্ষার দিন হয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দ্বিতীয় ও তৃতীয় মেয়াদেও সরকারপ্রধান হয়ে মাতৃভাষার এজেন্ডাকে আরও উন্নীত করার দৃঢ়সংকল্প গ্রহণ করেছিলেন। ২০১২ সালে তার সরকার জাতিগতভাবে সংখ্যালঘুদের ভাষায় বিনামূল্যে স্কুল পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
 
২০১৩ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার বাংলার পাশাপাশি চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, সাদ্রি এবং গারো ভাষার পাঠ্যপুস্তকগুলি বিনামূল্যে মুদ্রণ এবং বিতরণ করছে। ২০২০ সালে সরকার প্রায় ১,০০,০০০ জাতিগতভাবে সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের ভাষায় মুদ্রিত ২,৩০,১৩০ পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছে।
 

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত