মাত্র ১৩ বছরের কর্মযজ্ঞ: অন্ধকারের পথ পেরিয়ে আলোকিত বাংলাদেশ

2221

Published on মার্চ 19, 2022
  • Details Image

শতভাগ বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সরকার। তাই 'ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, শেখ হাসিনার উদ্যোগ' স্লােগানকে সামনে রেখে- নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে- দেশের প্রতিটি এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। গত ১৩ বছর আগেও যেখানে মাত্র ৪৭ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পেত, সেখানে আজ ৯৯.৮৫ ভাগ মানুষের ঘর আলোকিত হচ্ছে বিদ্যুতের আলোয়।

এই বিদ্যুতের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে ইন্টারনেট-ভিত্তিক কর্মসংস্থান গড়ে উঠেছে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে। লেখাপড়া নিশ্চিত হচ্ছে প্রান্তিক গোষ্ঠীর, কমেছে অন্ধকারের অপরাধ। এমনকি তীব্র গরম মৌসুমেও সেচ কাজে নিশ্চিত হয়েছে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ। ফলে কমেছে কৃষকদের বিড়ম্বনা, বাড়ছে কৃষিজ উৎপাদন। শুধু তাই নয়, শীত মৌসুম ও অফপিক আওয়ারের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ রফতানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পরিকল্পনাও করছে সরকার।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে 'সবার জন্য বিদ্যুৎ' সুবিধাকে দীর্ঘমেয়াদের জন্য নিশ্চিত করতে- পায়রায় চালু করা হচ্ছে- দেশের বৃহত্তম তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ১৩-তম আলট্রা সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহারকারী দেশ। ফলে পরিবেশ ও মানুষের জন্য যাবতীয় জৈব-সুরক্ষা নিশ্চিত করেই দেশের সর্ববৃহৎ এই বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করার সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এখান থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হলে-শিগগিরই- দেশের শতভাগ মানুষ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসবে।

আপনারা জেনে অবাক হবেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে যেখানে সর্বমোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল মাত্র ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট, সেখানে ২০২২ এর ফেব্রুয়ারিতে তা ২৫ হাজার ৫১৪ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। গত ১৩ বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে ৫ গুণেরও বেশি। এই সময় জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে ১৯ হাজার ৬২৬ মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ। মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রতি ঘণ্টায় ২২০ কিলোওয়াট হতে ৫৬০ কিলোওয়াটে উন্নীত হয়েছে। স্বপ্নের মেতা মনে হলেও, এটাই সত্য। এই বাংলাদেশ এক নতুন বাংলাদেশ। নতুন প্রজন্ম আজ জানেই না যে- লোডশেডিং ও বিদ্যুৎহীন জীবনের বিড়ম্বনা কী!

আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত পরিণত করার যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে, তা বাস্তবায়নে আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা-কল কারখানা ও প্রযুক্তি-শিল্পের বিকাশ প্রয়োজন। আর এসব লক্ষ্য পূরণের প্রধান শর্ত হলো বিদ্যুৎ সুবিধা। ফলে সেই লক্ষ্য অর্জনে সরকারেই এই ১৩ বছরেই সারা দেশে ৩ কোটি ১৩ লাখ ঘরে ও প্রতিষ্ঠানে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে ৬০ লক্ষ সোলার হোম সিস্টেম। অনিয়ম কমাতে বসানো হচ্ছে স্মার্ট মিটার। ইতোমধ্যে ৪৬ লক্ষ ৭৭ হাজার প্রি-পেইড মিটার স্থাপনও করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী সরকারগুলো যেখানে গ্রামের আবাদি জমির মধ্যে খাম্বা বা খুঁটি বসিয়ে- বিদ্যুতের প্রলোভন দেখিয়ে- মানুষকে প্রতারিত করেছে। সেখানে আওয়ামী সরকার মাত্র স্বল্পতম সময়ের মধ্যে ৩ লক্ষ ৬১ হাজার কিলোমিটার বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন নির্মাণ করেছে। এসবের মাধ্যমেই গ্রামীণ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে বিদ্যুৎ। এছাড়াও বৈদ্যুতিক কর্ম-পেশায় দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে ৩ হাজার বেকার জনগোষ্ঠীকেও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ফলে বিদ্যুৎ খাতে সেবার মানও বাড়বে।

উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে, আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশে বর্তমানে আরও ১৩ হাজার ২১৯ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে।

দেশের টেকসই উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহতভাবে এগিয়ে নিতে বিদ্যুৎ খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। বিদ্যুৎ খাতের পরিকল্পনাগুলো সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। আপনাদের সহযোগিতা, সরকারের কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা। পাশে থাকুন, উগ্রবাদকে প্রতিরোধ করুন, শিক্ষা ও প্রযুক্তির আলোয় আলোকিত বাংলাদেশ গড়ুন। 

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত