1108
Published on জুলাই 23, 2022বিএনপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে এলে চা খাওয়াবেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৩ জুলাই) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের যৌথসভায় এসব কথা বলেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি তো বলে দিয়েছি তারা যদি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে আসে, পুলিশ যেন বাধা না দেয়। বিশেষ করে বাংলা মটরে যে বাধা দেওয়া, সেটা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছি। আসুক না হেঁটে হেঁটে যতদূর আসতে পারে। কোনও আপত্তি নেই। আমি বসাবো, চা খাওয়াবো। কথা বলতে চাইলে শুনবো। কারণ আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। তবে যদি বোমাবাজি ও ভাঙচুর করে বাধা দেবো, উপযুক্ত জবাব পাবে। কিন্তু গণতান্ত্রিক আন্দোলনে কোনও বাধা নেই।
বাংলাদেশে যদি নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোন শৃঙ্খলা এসে থাকে, সেটা আওয়ামী লীগের হাতে এসেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় দেশের জনগণের ভোটের অধিকারে বিশ্বাসী। সেজন্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে যতটা উন্নতি হয়েছে, সেটা আওয়ামী লীগের আমলেই হয়েছে। আমরা দলের পক্ষ থেকে মহাজোটের পক্ষ থেকে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। শুধু তাই না ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, যাতে সিল মেরে বাক্স ভরতে না পারে। সেটার দাবি করেছিলাম।
আওয়ামী লীগ সবসময় মানবতার সেবা করে আসছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, কিছু লোক সারাক্ষণ দোষ ধরা, খুত ধরা চেষ্টায় থাকে। আমরা বিদ্যুতের লোডশেডিং দিচ্ছি কারণ ডিজেলের দাম বেড়ে গেছে। এলএনজির দামসহ প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। যে জার্মানির সুর তুলেছিল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করা যাবে না। তারা কিন্তু আবার সেটাই ফেরত গেছে।
খাদ্য সরবরাহ পুনরায় চালু করতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চুক্তি করায় জাতিসংঘের মহাসচিব ও তুর্কি প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের উদ্যোগ বিশেষ করে জাতিসংঘের মহাসচিবের উদ্যোগের ফলে এখন ইউক্রেন এবং রাশিয়া একটি চুক্তি করেছে। সার, খাদ্যদ্রব্য এগুলো যেতে দেবে। কৃষ্ণ সাগরে যে বন্দর বন্ধ রয়েছে, সেটাতে চলাচলের সুযোগ করে দেবে। খাদ্যদ্রব্য এখন আনা যাবে, কেনা যাবে। আমি মনে করি এটা আমাদের স্বস্তিকর বিষয়।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্বিপাকে আওয়ামী লীগ সবসময় সবার আগে এগিয়ে আসে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় মানবতার সেবায় এগিয়ে আসে। আমরা ক্ষমতায় থাকলে জনগণের সেবা করি। আর বিএনপি ক্ষমতায় থাকা মানে হলো দুর্নীতি, সন্ত্রাস, অর্থপাচার, মানব পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকে। কারণ তারা মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসে।
তিনি বলেন, বিএনপির আমলে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার তালিকা করা হয়েছিল। এটা থাকলে আর ভোট করা লাগতো না। ১০ হোন্ডা, ২০টা গুণ্ডা নির্বাচন ঠাণ্ডা। এই তো ছিল মাগুরার নির্বাচন, ঢাকা-১০ আসনের নির্বাচন। এগুলো আমাদের দেখা আছে।
বৈশ্বিক সংকটের কারণে দেশবাসীকে কৃচ্ছ্রতা সাধনের অনুরোধ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজের সঞ্চয়, উৎপাদন বাড়াতে হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, সবাইকে দেখে ভাল লাগলো। কিন্তু আমি বন্দিখানায় বসে আছি। তাও সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছিল বলেই সবার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি।
এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাকারী, ১০ ট্রাক অস্ত্রের চোরাকারবারি অর্থপাচারকারী বিএনপির নেতা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেতা বানাতে দেশে একটা মানুষও পায়নি তারা। দলটির গঠনতন্ত্রের ৭ অনুচ্ছেদে আছে সাজাপ্রাপ্ত আসামি হলে নেতা হতে পারবে না। কিন্তু বিএনপি তাই করেছে।
আবারও বন্যা হবার আশঙ্কা রয়েছে জানিয়ে সবাইকে প্রস্তুত থাকার অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী।