২০০১-২০০৬ বিদ্যুৎখাতে বিএনপির লুটপাটের চিত্রঃ বাঘাবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৭০ কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে

1498

Published on অক্টোবর 10, 2022
  • Details Image

এক সরকারের আমলে প্রায় সমাপ্ত প্রকল্প পরের সরকার এসে ব্যয় বাড়িয়ে সংশোধন করেছে - উন্নয়নের এমন নজির বাংলাদেশেই সম্ভব! আর এমনটি ঘটেছে বাঘাবাড়ী ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে। ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্বে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া এই প্রকল্পটি হয়েছিল। কিন্তু একই বছরের অক্টোবরে ক্ষমতায় এসে চারদলীয় সরকার প্রকল্পটি টেনে বড় করে। আর এর মাধ্যমে কমপক্ষে ৭০ কোটি টাকা লুটপাটি হয়েছে বলে অভিযোগ করে আইএমইডি।

২০০৭ সালের ২৫ শে জানুয়ারি প্রথম আলো সংবাদে জানা যায়,,দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে ১০০ মেগাওয়াট গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎ্কেন্দ্র স্থাপনের কাজ ১৯৯৯ সালে একনেক অনুমোদন করে। ১৯৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে দুই বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল । দ্রুততার সঙ্গেই কাজ এগিয়েছে। ১০০ মেগাওয়াট গ্যাস টারবাইন বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপনের কাজ পেয়েছিল ভারসেল ভ্যাল কোম্পানি। তাদের সঙ্গে ১৩৬ কোটি ৪৪ লাখ ৩২ হাজার টাকার চুক্তি সম্পাদন হয়েছিল ২০০০ সালের ৩ মে। চুক্তি অনুসারে ২০০১ সালের ১৯ সেন্টেম্বর কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু বিদ্যুতকেন্দ্রের সিংহভাগ কাজের শেষ পর্যায়ে সরকার পরিবর্তন হয় এবং জোট সরকার ২০০১ সালের অক্টোবর মাসে ক্ষমতায় আসে। নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরই শুরু হয় প্রকল্পকে ঘিরে লুটপাটের পরিকল্পনা।

২০০২ সালের ২৪ নভেম্বর একনেককে অবহিত করা হয় প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ ১৬০ কোটি টাকায় শেষ হয়েছে। নতুন করে একটি গ্যাস বুষ্টার নির্মাণের জন্য আরও ৩২ কোটি টাকা দরকার। তখন বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণের সংশোধিত ব্যয় ২৫৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। একনেক শর্ত সাপেক্ষে ২৫৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা অনুমোদন করে। শর্তটি ছিল ১৫ ডিসেম্বর ২০০২ সালের মধ্যে প্রকল্পটির ব্যয়ের খাত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রকৃত খরচের ভিত্তিতে প্রকল্প ব্যয় পুননির্ধারণ করে পরিকল্পনা কমিশনে পেশ করতে হবে এবং সে অনুযায়ী ২০০২-০৩ অর্থবছরে উন্নয়ন বরাদ্দ দেওয়া হবে। কিন্তু নিদ্দিষ্ট সময়ে ব্যয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ শেষ হয়নি। প্রকল্পের অনুকৃলে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ ছাড় করা হয় যথেচ্ছভাবে।

প্রায় দুই বছর সময় নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের বিদ্যুৎ শাখা প্রকল্পটির ব্যয়ের খ্যত পরীক্ষা- নিরীক্ষা করে প্রকৃত খরচের ভিত্তিতে সংশেধিত প্রকল্প ব্যয় নির্ধারণ করে। তবে সব ধরনের বিধিবিধানকে পাশ কাটিয়ে প্রস্তাবটি পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যের মাধ্যমে না পাঠিয়ে বিদ্যুৎ শাখার উপপ্রধানের মাধ্যমে ২০০৪ সানের ৩০ মার্চ একনেক সভায় উপস্থাপন করা হয়। যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রস্তাবটি না আসায় একনেক সভার আলোচ্যসূচি থেকে তা প্রত্যাহার করা হয় এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবার প্রস্তাবটি পাঠানোর সুপারিশ করা হয়।

তবে সবচেয়ে বেশি অনিয়ম ধরা পড়েছে নির্মাণকাজ ও পরিচালন ব্যয় (ওভারহেড আ্যান্ড এস্টাবলিস্টমেন্ট) খাতে। এ খাতে ২০০২ সালে খরচ সংশোধন করে এক কোটি ৯৩ লাখ টাকা ধরা হলেও প্রকৃত খরচ হিসাবে দেখানো হয়েছে ১১ কোটি ২২ লাখ টাকা। অতিরিক্ত এই নয় কোটি ২৯ লাখ টাকা খরচের কোনো সরকারি অনুমোদন ছিল না।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত