মির্জা আব্বাস: নিয়োগ বাণিজ্য এবং সরকারি প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি করে আয় করে শত কোটি টাকা

1185

Published on নভেম্বর 4, 2022
  • Details Image

২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জাাময়াত জোট সরকারের সময় হাওয়া-ভবন সিন্ডিকেটের হয়ে ঢাকার সন্ত্রাসীদের গডফাদার হয়ে উঠেছিল বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস। তাকে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বানিয়ে নিজের স্বজনদের নামে কয়েকশ কোটি টাকার সরকারি জমি বরাদ্দ নেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এছাড়াও প্রভাব খাটিয়ে সরকারি জমি দখল, পানির দামে কোটি টাকার সরকারি প্লট বিক্রি এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ বাণিজ্য করে অবৈধভাবে শত কোটি টাকার মালিক হয় সে। এমনকি তার হরিলুটের নিয়োগ বাণিজ্যে বাধা দিলে, সরকারি কর্মকর্তাদের পোস্টিং করানোটা ছিল তার জন্য এক সেকেন্ডের ব্যাপার।

১৭ জুন ২০০৭ সালের সমকাল পত্রিকা থেকে জানা যায়, ২০০৬ সালের শেষের দিকে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষে ৭১ জনকে দ্রুততার সাথে চাকরি দেয় প্রতিমন্ত্রী আব্বাস। ২০ আগস্ট পত্রিকায় চাকরির বিজ্ঞাপন দেওয়ার পর, শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে ৪ থেকে ৬ লাখ টাকা করে নেয় আব্বাস। কিন্তু এই নিয়োগে বাধা হয়ে দাঁড়ায় সংস্থার চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান। এরপর প্রতিমন্ত্রী আব্বাস তাকে সাভারের লোক প্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রশিক্ষণে পাঠিয়ে দেন এবং নিজের আস্থাভাজন যুগ্মসচিব বিজন কান্তি সরকারকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়। নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব বদিউল আলমকে বাদ দিয়ে উপসচিব মহিউদ্দিনকে ওই পদে বসায়।

এরপর ২০০৬ সালের ৬ অক্টোবর দুই শিফটে নামমাত্র পরীক্ষা নেওয়া হয়। প্রার্থীর নাম লেখার ব্যবস্থা না রেখে শুধু সাদা পাতায় লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। আলাদা কাগজে নাম-রোল লিখে সেটা পিন দিয়ে আটকানো হয় উত্তরপত্রের সাথে। যাতে পরে সেই খাতা ফেলে দিয়ে, সহজেই পছন্দের প্রার্থীদের জন্য নতুন উত্তরপত্র তৈরি করে ফাইলে ঢোকানো যায়। সকালে উপসহকারী প্রকৌশলী ও বিকালে সহকারী প্রকৌশলীদের একই প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে বিজনকান্তি বলেন, 'যে প্রশ্ন করবে, আগের রাতে তার বাসায় বিদ্যুৎ ছিল না। তাই একই প্রশ্নে দুই পদের পরীক্ষা নেওয়া হয়। আর সকালের প্রশ্নে বিকালে পরীক্ষা দিলে সেটাতে প্রশ্নফাঁস বলা যায় না। একজন মন্ত্রীর অধীনে অনেক প্রতিকূলতা নিয়েই কাজ করতে হয়। তবুও কোনো অনিময় হয়নি।'

সংস্থার কর্মকর্তারা জানান, অফিসের স্টাফদের দিয়ে দ্রুত খাতা মূল্যায়ন করানো হয়। ফলে পিওনরাও বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের খাতা মূল্যায়নের সুযোগ পেয়ে যায়। সাত হাজার প্রার্থীর মধ্য থেকে, পরেরদিনই শুধু মন্ত্রীর তালিকার ব্যক্তিদের ভাইভার জন্য ডাকা হয় এবং ২০ অক্টোবর তাদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়। এর তিনদিনের মধ্যেই তারা কর্মস্থলে যোগ দেয়। এমনকি তাদের পোস্টিং উপলক্ষে আরেকদফা টাকা নেওয়া হয় তাদের কাছে।

এবিষয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, প্রশিক্ষণ শেষ করে কর্মস্থলে ফিরে দেখি যা হবার হয়ে গেছে। আমার অবর্তমানে দায়িত্বপালনকারী চেয়ারম্যান কীভাবে এতোটা অনিয়ম করতে পারলেন! এনিয়ে মন্ত্রীর সাথে আমার কতা কাটাকাটিও হয়েছে।'

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত