নেতাকর্মীদের প্রতি শেখ মণি’র ছিল অপরিসীম মমত্ববোধ: শেখ পরশ

840

Published on ডিসেম্বর 3, 2022
  • Details Image

৪ঠা ডিসেম্বর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, মুজিব বাহিনীর প্রধান, স্বনামধন্য লেখক, বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট ও বাংলার যুব আন্দোলনের পথিকৃত শহীদ শেখ ফজলুল হক মণি’র ৮৪ তম জন্মদিন উপলক্ষে আজ ৩ ডিসেম্বর, ২০২২ইং, বেলা ১১টায়, ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য জননেতা জনাব তোফায়েল আহমেদ এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-বিশিষ্ট সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল। সভাপতিত্ব করেন- বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। সঞ্চালনা করেন- সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

সভাপতির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন-নেতাকর্মীদের প্রতি শেখ মণি’র ছিল গভীর প্রেম ও মমত্ববোধ। মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি, সাংবাদিক ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুর্ণগঠন নিয়ে তিনি ভীষণ ভাবতেন। বাবা বাংলাদেশে একটা জ্ঞানভিত্তিক, প্রগতিশীল, বৈষম্যহীন ও অসাম্প্রদায়িক সমাজব্যবস্থা সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন। যে কারণে আমি আমার বাবাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি গর্ববোধ করি সেটা হল তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর সাথে মিলে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধ শুরু করেন।

তিনি আরও বলেন, শেখ মণি আমাদের কাছে বিশ্বস্ততার প্রতীক। ১৫ আগস্টের প্রথম শহীদ হিসাবে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে শেখ মণি আনুগত্য ও বীরত্বের অবিনশ্বর উদাহরণ রেখে গেছেন যা ৫ দশক পরও যুব সমাজের কাছে পথপ্রদর্শক হয়ে আছে। শেখ ফজলুল হক মণি’র অনুসারী এবং সংগঠনের কর্মী হিসাবে আমরাও গর্বের সাথে বুক চাপিয়ে বলতে পারি, ‘যুবলীগের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জন্য সর্বোচ্চ আত্মহুতি দিতে প্রস্তুত।’ শেখ মণি উপলব্ধি করতেন একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক এবং ন্যায়বিচার সম্পন্ন জাতিরাষ্ট্র নির্মাণের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কোন বিকল্প নাই। ঠিক একই ভাবে শেখ মণি’র উত্তরসূরি হিসাবে আমরা আজকের যুবলীগ মনে করি, একটি অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, উন্নয়নশীল এবং আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নাই।

তিনি আরও বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে বাংলাদেশের একটা তথাকথিত বিরোধী দল, বিএনপি-জামাত আজ অপপ্রচারের আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন রকমের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, শেখ হাসিনার জনবান্ধব সরকারকে পরাস্ত করে অবৈধ পথে কিভাবে ক্ষমতায় আসা যায়, কিভাবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা রোধ করা যায়, এই অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে তারা ব্যস্ত থাকে। বিদেশি কোন প্রভুর এজেন্ডা তারা বাস্তবায়ন করছিল তাও আমরা জানি ও বুঝি। তাদের উদ্দেশ্য বাংলাদেশকে একটা পশ্চাদপদ, মৌলবাদী, ব্যর্থ রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করা। বঙ্গবন্ধুকন্যা, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা গত ১৩ বছরে দেশের চেহারা পালটে দিয়ে দৃষ্টান্তমূলক এবং যুগান্তকারী উন্নয়ন সাধণ করাতে তাদের সেই উদ্দেশ্য ভেস্তে গেছে। সরকারের সহযোগিতা ছাড়া বিরোধী দল হিসাবেও তারা আন্দোলন সংগ্রাম করতে পারছে না, সেই রাজনৈতিক শক্তি টুকুও তাদের নাই।

তিনি আরও বলেন, আমি আগেও বলেছি এরা মিথ্যাবাদী দল, প্রতারণা করে জনগণের সাথে। তবে রাজপথে শেখ মণি’র যুবলীগ, এই প্রতিক্রিয়াশীল প্রতিপক্ষদেরকে মোকাবিলা করতে, জনগণের উপর তাদের জুলুম-অত্যাচার ও প্রতারণার জবাব দিতে সর্বদা প্রস্তুত।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য জননেতা তোফায়েল আহমেদ বলেন-আমি যতটুকু হয়েছি তার সবচেয়ে অবদান শেখ ফজলুল হক মণি ভাইয়ের। উনি শুধু নেতা ছিলেন না, নেতা তৈরি করতেন। আমার সৌভাগ্য তার সঙ্গ পেয়েছিলাম। তিনি আরও বলেন-শেখ মণি ভাইয়ের হাত ধরে ছাত্রলীগের সদস্য হয়েছিলাম। আমি যখন ১৯৬১ সালে বরিশাল বিএম কলেজের ছাত্র তখন তিনি কলেজে এসেছিলেন। তিনি তখন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মণি ভাই আমাকে বললেন, ‘তুই ছাত্রলীগ কর।’ যদি মণি ভাইয়ের সংস্পর্শ না পেতাম তাহলে ডাকসুর ভিপি, ছাত্রলীগের সভাপতি, কিছুই হতে পারতাম না। সবই মণি ভাইয়ের অবদান। মণি ভাই মস্ত বড় সংগঠক ছিলেন। একজন আদর্শিক নেতা ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা ৭ মার্চ রেসকোর্সে সভা করেছি, আমাদের নানা আন্দোলনে বড় বড় সভা করেছি। অথচ এখন বিএনপি বলে তাদের পল্টনে সভা করতে দিতে হবে। কারণ ওখানে মাত্র ২০-৩০ হাজার লোক হলেই মঞ্চ ভরে যায়। তিনি আরও বলেন, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। অথচ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল সবকিছু বঙ্গবন্ধুকন্যার কারণে সম্ভব হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এতো উন্নয়ন কেউ কল্পনা করতে পারে না। বিদেশিরাও বলে এতো উন্নয়ন কীভাবে সম্ভব? এটা বঙ্গবন্ধুকন্যার পক্ষে সম্ভব হয়েছে। উন্নয়নমূলক কাজগুলোকে ব্যাঘাত করতে তারা ষড়যন্ত্র করেছে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি সমাবেশের অনুমোদনের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা অনুমতি দিয়েছি, ছাত্রলীগের সমাবেশ ২ দিন এগিয়ে নিয়েছি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছেড়ে দিয়েছি। বিএনপি সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলা করবে এটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুবলীগ সর্তক থাকবেন। যাতে কেউ দেশ নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। মির্জা ফখরুল ইসলাম কথায় কথায় সরকারের পতনের কথা বলে। সরকার পতন এতো সহজ নয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তৃণমূলে বিস্তৃত।

সঞ্চালকের বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, মুজিব বাহিনীর প্রধান শহীদ শেখ ফজলুল হক মণি ছিলেন একজন প্রগতিশীল রাজনীতিবিদ, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বিপথগামী যুবসমাজের পথ প্রদর্শক। শেখ মণি’র চেতনায় ও আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে যুবলীগ দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ যুব সংগঠনে পরিণত হয়েছে। খুনি জিয়ার ষড়যন্ত্রে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বিপথগামী কিছু ঘাতক সেনা সদস্য শেখ মণিসহ বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করে। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্টের খুনিদের বিভিন্নভাবে পুণর্বাসন করেছিলেন। আজ যখন বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে ঠিক সেই সময় খুনি জিয়ার কুলাঙ্গার সন্তান তারেক রহমান লন্ডনে বসে দেশবিরোধী নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বিএনপি-জামাত বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিএনপি-জামাতের সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন-যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. মামুনুর রশীদ, মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এমপি, মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ নবী নেওয়াজ, মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, মোঃ জসিম মাতুব্বর, মোঃ আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সুব্রত পাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা: হেলাল উদ্দিন, মোঃ সাইফুর রহমান সোহাগ, জহির উদ্দিন খসরু, সোহেল পারভেজ, মশিউর রহমান চপল, অ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ জহুরুল ইসলাম মিল্টন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মোস্তাফিজ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা: মোঃ ফরিদ রায়হান, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ হারিছ মিয়া শেখ সাগর, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আব্দুল মুকিত চৌধুরী, ধর্ম সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমান সরদার, মহিলা সম্পাদক অ্যাড. মুক্তা আক্তার, উপ-প্রচার সম্পাদক আদিত্য নন্দী, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাড. শেখ নবীরুজ্জামান বাবু, উপ-অর্থ সম্পাদক সরিফুল ইসলাম দুর্জয়, উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মোঃ রাশেদুল হাসান সুপ্ত, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফজলে রাব্বী স্মরণ, উপ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ মিসির আলি, উপ-কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মোল্লা রওশন জামির রানা, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ গোলাম কিবরিয়া শামীম, উপ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত