বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসন: সুপেয় পানির সঙ্কটে নগরাঞ্চলের মানুষের হাহাকার, ফসল উৎপাদন কমে অর্ধেকে নামে গ্রামাঞ্চলে

536

Published on এপ্রিল 10, 2023
  • Details Image

২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সরকারে থাকার সময় বিদ্যুৎ সেক্টরে হরিলুট চালিয়েছে বিএনপি-জামায়াত সরকার। বিদ্যুতের নামে শুধু নিম্নমানের খাম্বা বসিয়ে প্রায় দশ হাজার কোটি টাকা লুটপাট এবং বিদেশে পাচার করে খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান। ফলে আওয়ামী লীগ আমলের সাড়ে চার হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হওয়া বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা আরো কমে যায় খালেদা জিয়ার শাসনামলে। যার ফলে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় গ্রামীণ চাষিরা। এমনকি ঢাকাসহ বড় বড় নগরগুলোতেও সুপেয় পানির সঙ্কট দেখা দেয়। একপর্যায়ে পানির দাবিতে রাস্তায় নেমে আসেন গৃহিণীরা। এসময় বিএনপির এমপিরা তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে সাধারণ জনগণের ওপর নির্মম নির্যাতন চালায়।

এমনকি সারা দেশে সেচ সঙ্কটের কারণে ধানের আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমনকি বৃহত্তর উত্তরাঞ্চলসহ, বৃহত্তর চট্টগ্রামের ফসল উৎপাদন কমে অর্ধেকে নেমে আসে। ফলে দেশজুড়ে শুরু হয় খাদ্য সঙ্কট। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই অভাব-অনটন-আকাল বাড়তে থাকে। এমনকি সরকারের শেষ বছরে এসে বিএনপি-জামায়াত নেতারা লুটপাটে আরো বেপরোয়া হলে দেশজুড়ে শুরু হয় দুর্ভিক্ষ।

২০০৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত সংবাদ থেকে দেখা যায়, খালেদা জিয়ার সরকার দুর্নীতিতে ব্যস্ত থাকায় প্রতিবছর দেশের সাধারণ মানুষের পানির অভাবে রান্না-গোসল থেমে থাকলেও, তা ঠিক করার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বরং রাজধানী ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-চট্টগ্রামের নগরাঞ্চলে সুপেয় পানির সঙ্কট সৃষ্টি হলে বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতাকর্মীরা কয়েকগুণ বেশি দামে পানির ব্যবসা করে লাখ লাক টাকা আয় করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম-নারায়ণগঞ্জে ২০০৪ সালে পানির অভাবে কোটি মানুষের রান্না-গোসল ব্যাহত

২০০৪ সালের ৭ মে তারিখের খবরে দৈনিক জনকণ্ঠ জানায়- তীব্র গরম, অতিরিক্ত লোডশেডিং এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে রাজধানী ঢাকা শহরের মানুষ সুপেয় পানির অভাবে হাহাকার শুরু করেছিল। দিনে পানির ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছিল ৫০ কোটি লিটার।

১৭ এপ্রিলের সংবাদ থেকে জানা যায়, তীব্র গরমে বিদ্যুৎহীনতার কারণে শহরের মানুষদের জন্য সুপেয় পানির সরবরাহ করতে পারেনি বিএনপি-জামায়াত সরকার। দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে তখন টানা তাপপ্রবাহ চলছিল। ফলে গ্রামের মানুষরাও প্রায় সারাদিনই বিদ্যুৎহীনতার কারণে হাহাকার শুরু করে। দোকান-পাট এবং রাস্তাঘাট পর্যন্ত জনশূন্য হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে বৃষ্টির জন্য দোয়া করা ছাড়া সাধারণ মানুষের আর কিছুই করার ছিল না।

৭ জুনের খবরে জানা যায়, বিদ্যুৎ সঙ্কটে এবং তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকারের অবহেলার কারণে পানির অভাবে হাহাকার শুরু হয়েছিল নারায়ণগঞ্জ শহরের মানুষদের। কমপক্ষে দুই লাখ মানুষ টানা এক সপ্তাহ ওয়াসা থেকে এক ফোঁটা পানিও পায়নি। এমনকি পাম্প নষ্ট হলে, তা ঠিক করার উদ্যোগও নেয়নি খালেদা জিয়ার সরকার। পরে বাধ্য হয়ে পানযোগ্য পানির দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে নারী-পুরুষরা।

২০ মার্চের খবর জানায়, উপকূলীয় শহর পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় প্রায় চার লাখ মানুষ সুপেয় পানির অভাবে পুকুর ও নদীর পানি পান করতে বাধ্য হয়েছিল। ফলে পানিবাহিত রোগের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকাই হয়ে ওঠে তাদের নিয়তি। বিএনপি-জামায়াত সরকার এই অঞ্চলের লবণাক্ত পানির বিকল্প উৎস ও পর্যাপ্ত নলকূপ স্থাপন না করায় এই দুরবস্থায় পতিত হয় সাধারণ মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে পানির ব্যবস্থা করার দাবি জানালেও তা কানে তোলেনি খালেদা জিয়ার সরকার।

সারাদিন বিদ্যুতহীনতার কারণে নাকাল হয়েছিল চট্টগ্রামবাসীও। ৩৫ লাখ মানুষের সুপেয় পানির অভাব পূরণের জন্য ওয়াসার পক্ষ থেকে এই তীব্র গরমেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। ১০ কোটি গ্যালন পানির চাহিদা থাকলেও মাত্র ৩ কোটি গ্যালন পানি সরবরাহ করতো চট্টগ্রাম ওয়াসা। এমনকি সরকারের তুমুল দুর্নীতির কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনও হ্রাস পায়। ফলে দিনে যেমন বিদ্যুৎহীন হয়ে গরমে হাঁসফাঁস করতে থাকে মানুষ। তেমনি সন্ধ্যার পর থেকে অন্ধকারে পরিণত হয় চট্টগ্রাম নগরী। ফলে বেড়ে যায় অপরাধ।

২০০৫ সালে বিদ্যুৎ-গ্যাস ও পানির অভাবে বন্ধ হয় কারখানা, সিন্ডিকেট করে পানির ব্যবসায় কোটিপতি বিএনপি নেতারা

২০০৫ সালের ২৫মে জনকণ্ঠ পত্রিকায় বলা হয়, ঢাকা ওয়াশার তৎকালীন এমডি আনহ আখতার স্বীকার করে জানান যে- নারায়ণগঞ্জে প্রতিদিন সুপেয় পানির সঙ্কট ৬ কোটি লিটার। এই শহরে প্রাত্যহিক ১০ কোটি লিটার পানির চাহিদা থাকলেও, বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং বিএনপি-জামায়াত সরকারের সীমাহীন দুর্নীতির কারণে অধিকাংশ এলাকাতেই সুপেয় পানি পৌঁছানো সম্ভভ হয়নি।

২২ সেপ্টেম্বরের জনকণ্ঠ জানায়, রাজধানীর পুরনো ঢাকায় লোডশেডিং এবং পানি সঙ্কটের কারণে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। গড়ে প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকার কারণে বন্ধ হয়ে যায় অনেক কারখানা। এমনকি তীব্র গরমের কারণে ঘরে থাকা অসম্ভব হয়ে ওঠে সেখানকার প্রায় ২০ লাখ সাধারণ মানুষের পক্ষে। গৃহিণীরা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ও পানির দাবিতে নেমে আসে রাজপথে। সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য মোমবাতি ও হারিকেনই পুরান ঢাকার অভিভাবকদের প্রধান ভরসা হয়ে ওঠে এসময়। গৃহিণীরা জানান, অল্প সময়ের জন্য বিদ্যুৎ এলেও লো-ভোল্টেজের কারণে বাসার পাম্প এবং ফ্রিজ নষ্ট হয়ে গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, অনেক এলাকাতে এক মাসের বেশি সময় ধরে ওয়াসার এক ফোটা পানিও পায়নি সাধারণ জনগণ। গাড়িতে করে ঘুরে ঘুরে পানি বিক্রি করেছেন ব্যাসায়ীরা। চড়া দামে সেই পানি খেয়ে বেঁচে ছিলের পুরান ঢাকার মানুষেরা।

২১ এপ্রিলের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তীব্র গরমে নাভিশ্বাস ওঠা সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ ও পানির সঙ্কটের কারণে হাহাকার শুরু হয় রাজধানীবাসীর মধ্যে। বিদ্যুতের অভাবে পানি সঙ্কটের কারণে জিগাতলায় বিক্ষোভ করে স্থানীয়রা। বিদ্যুতের দাবিতে নিউ মার্কেটের দশ হাজার ব্যবসায়ী দোকানে তালা দিয়ে রাজপথে আন্দোলন শুরু করে। জানা গেছে বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণে ওয়াসার পানি উৎপাদনও তলানিতে নেমে যায়। ফলে রাজধানীতে প্রতিদিন কমপক্ষে ৬৭ কোটি লিটার পানির ঘাটতি দেখা দেয়।

১০ মার্চের (২০০৫) সংবাদে জানা যায়, গ্রীষ্মকালকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত সরকারের বিদ্যুৎ খাতের সীমাহীন লুটপাট প্রকাশ্য হয়ে পড়ে। বিদ্যুতের অভাবে সারাদেশের মার্কেটগুলো সন্ধ্যার পর বন্ধ করার নির্দেশ দেয় সরকার। জানানো হয়, সন্ধ্যায় পর নিজ উদ্যোগে জেনারেটর চালিয়ে মার্কেট ও শপিংমল খোলা রাখা যাবে, কোনো বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যাবে না। অন্যদিকে গ্যাসের ঘাটতিও প্রতিদিন ৩০ মিলিয়ন ঘনফুট অতিক্রম করায় বিদ্যুৎ উৎপাদনও হ্রাস পায়। গ্যাসের অভাবে বাসায় বাসায় রান্না পর্যন্ত বিঘ্নিত হয় সাধারণ মানুষের। আবার বিদ্যুৎতের সমস্যার কারণে ওয়াসার পানি উৎপাদন কমপক্ষে দৈনিক ১০ কোটি লিটার কমেছে বলেও জানান ওয়াসার এমডি আনহ আখতার।

২০০৫ সালের ৯ জুনের সংবাদে দেখা যায়, বিদ্যুত সঙ্কটের প্রভাবে পানির সরবরাহ তলানিতে পৌঁছে চট্টগ্রাম নগরীতেও। ফলে পানযোগ্য পানি সংগ্রহের জন্য রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয় গ্রাহকদের মধ্যে। প্রতিদিন বিদ্যুৎ ঘাটতি ছিল প্রায় ১৫০ মেগাওয়াট। ফলে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টার লোডশেডিংয়ে অন্ধকার হয়ে যায় নগরী।

২ জুনের সংবাদে জানা যায়, মোহাম্মদপুরের ১০ লাখ জনসাধারণের জন্য রাতের বেলা মাত্র ২ ঘণ্টা পানি সরবরাহ করতো ওয়াসা। এমনকি প্রায় দুই মাস ধরে এরকম চলার পর এক পর্যায়ে সেই পানি সাপ্লাইও বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ সঙ্কটের পাশাপাশি পাম্প নষ্ট হয়ে যাওয়াকে কারণ হিসেবে অভিহিত করে ওয়াসা। ফলে এক ফোঁটা পানি না পেয়েও, লাইনের জন্য পানির দাম নিয়মিত পরিশোধ করতে হয়েছে গ্রাহকদের; আবার দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে ওয়াসার কর্মচারীদের কাছ থেকে পানি কিনে খেতে হয়েছে তাদের। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে পাম্প নষ্ট এবং সুপেয় পানির অভাবে বাসিন্দারা চরম কষ্টে থাকলেও তা প্রতিকারে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। উল্টো রাজনৈতিক ভিআইপিদের জন্য বাসিতে বিশেষভাবে পানি পৌঁছে দিয়ে সাধারণ জনতার সমস্যা সমাধানে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি তারা। স্থানীয়রা এই পরিস্থিতিকে কারবালার মতো বলে অভিহিত করেন।

পানির অভাবে ২০০৬ সালে ফসল উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসে, পানি চাইলে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা পেটায় জনগণকে

২০০৬ সালের ১ মার্চের জনকণ্ঠ পত্রিকার ছবিতে দেখা যায়, পানি ও বিদ্যুতের দাবিতে কলস ও বালতি নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে আছে ঢাকার বাড্ডার জনসাধারণ। মূলত পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সঙ্কটের কারণে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ১৪ থেকে ১৬ ঘণ্টার লোডশেডিয়ের কারণে তীব্র গরমে এমনিতেই মানুষের প্রাণ যায় যায় অবস্থা, তারমধ্যে মাসের পর মাস ধরে সুপেয় পানির সঙ্কটে অতিষ্ট হয়ে পড়ে রাজধানীবাসী। এরসঙ্গে আবার গ্যাস না থাকায় ঘরের গৃহিণীদের চুলা পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হতো। খালেদা জিয়ার পুরো শাসনামলজুড়ে এই অবস্থা এবং গরমের সময় তা আরো বাড়লেও, পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য সরকার কোনো উদ্যোগ নেয়নি কখনোই।

রাজধানীর পাশাপাশি সারাদেশে বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণে কৃষকদের চাষাবাদ পর্যণ্ত ব্যাহত হয়। উত্তরাঞ্চলের ইরি ও বোরো মৌসুমে সেচ বিপর্যয়ের মুখে পড়ে কৃষকরা। ৪ মার্চের জনকণ্ঠ জানায়, গাইবান্ধার ৭ উপজেলায় গড়ে প্রতিদিন ১২ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ ছিল না, এমনকি বাকি সময় বিদ্যুৎ থাকরেও লো-ভোল্টেজের কারণে টিভি-ফ্রিজ বা পানির পাম্প চালানো সম্ভব হতো না। বিদ্যুৎ ও কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, প্রায় ২০০০ সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে জেলার ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়। কিন্তু সেচের অভাবে অনেক জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। গাইবান্ধায় প্রতিদিন ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও মাত্র ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ হওয়ায়, সেচ সঙ্কটের পাশাপাশি জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।

সিরাজগঞ্জে বিদ্যুৎহীনতা এবং লো-ভোল্টেজের কারণে ১১ হাজার পাম্প মেশিনের অধিকাংশরই মোটর পুড়ে যায়। ৪ মার্চের জনকণ্ঠ থেকে জানা যায়, বিদ্যুতের অভাবে জেলার প্রায় ১৭ হাজার ব্যবসা প্রতিস্ঠান সন্ধ্যা হলেই বন্ধ রাখতে বাধ্য হতেন ব্যবসায়ীরা। ১ লাখ ৩১ হাজারের মতো আবাসিক গ্রাহকের জীবন তীব্র গরমে দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। ১১ হাজার সেচ পাম্পের মাধ্যমে ৬ লাখ ২৫ হাজার বিঘা ইরি-বোরো জমিতে পর্যাপ্ত পানি দিতে না পারায় বিবর্ণ হয়ে যায় ধানের চারা। ফলে আবাদ লক্ষমাত্রা প্রায় ৭ লাখ মেট্রিক টনের অর্ধেকে নেমে যায়।

৭ মার্চের জনকণ্ঠে পাওয়া যায়, সার-ডিজেল-বিদ্যুৎ-পানির দাবিতে নড়াইল-যশোর মহাসড়ক অবরোধ করে কৃষকেরা। বোরো আবাদের ভরা মৌসুমে সেচের পানি না পেয়ে চরম ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে কৃষক-সমাজ। বিদ্যুতের অভাবে মটর বন্ধ থাকা এবং ডিজেলের অতিরিক্ত মূল্যের কারণে জমিতেই শুকিয়ে মরে যায় অর্ধেক বোরো চারা। নড়াইলের মন্ত্রীর পুত্র সরকারি সার উত্তোলন করে স্থানীয় ডিলারের কাছে বিক্রি করে দেওয়ায়, ন্যায্য মূল্যে সার কেনার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হয়ে পড়ে গ্রামের মানুষ। কুড়িগ্রামে এক বস্তা ইউরিয়া সারের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরেও তা জোগাড় করতে পারেনি কৃষিজীবীরা। আর দেশের কোথাও কোথাও সার পাওয়া গেলেও তার মূল্য দ্বিগুণ বা তিনগুণ হওয়ায় অর্থাভাবে ক্রয় করতে পারেনি প্রান্তিক মানুষ।

৭ মের সচিত্র সংবাদে জানা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সুপেয় পানি না থাকায় রাস্তায় বিক্ষোভ করে নগরবাসী। গৃহিণী, শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের সম্মিলিত এই প্রতিবাদ দমাতে শনির আখরায় ক্যাডার বাহিনী দিয়ে হামলা চালায় বিএনপি-জামায়াত সরকার। সংসদ সদস্য সালাউদ্দিনের নির্দেশে শতাধিক সন্ত্রাসী ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলে বিভক্ত হয়ে রাজধানীতে শো-ডাউন দেওয়া শুরু করে। ডেমরায় পানি সঙ্কটের জন্য এমপি সালাউদ্দিনের দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারকে দায়ী করে এলাকাবাসীর বিক্ষোভে গুণ্ডাবাহিনী লেলিয়ে দেওয়ায়, একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতা গণপিটুনি দেয় বিএনপির সেই এমপিকে।

রাজধানীতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়াররাও সেই পানি সঙ্কটের জন্য সালাউদ্দিনের স্বেচ্ছাচারিতাকে দায়ী করেন। কারণ, শনির আখরার পানির পাম্পগুলো দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখে সেগুলো অচক করে দিয়েছিল সালাউদ্দিনের ক্যাডাররা। পানি সঙ্কট সৃষ্টি করে উচ্চমূল্যে জনগণের কাছে গাড়িতে করে পানি বিক্রি করতো তারা।

এমনকি নওগাঁ-নাটোরসহ বৃহত্তর উত্তরবঙ্গের লাখ লাখ চাষির অধিকাংশ ফসলের ক্ষেতই পানির অভাবে শুকিয়ে যায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির ধানের শীষকে মরণের বিষ বলে অভিহিত করেন গ্রামীণ চাষিরা।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত