বিএনপি-জামাতের শাসনামল: সম্পাদকদের বিরুদ্ধে সাকা চৌধুরীর হয়রানি মামলা, দেশজুড়ে সাংবাদিক নির্যাতন অব্যাহত

1050

Published on মে 6, 2023
  • Details Image

২০০১-২০০৬ সালের বাংলাদেশ ছিল এক অন্য বাংলাদেশ। বাংলাদেশ না, যেন ছিল মিনি পাকিস্তান। সংখ্যালঘু, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, সাংবাদিকদের ওপর হামলা-নির্যাতন, খুন ইত্যাদি ছিল নিত্যদিনের বিষয়। স্বাধীনতাবিরোধি রাজাকারেরা গাড়িতে জাতীয় পতাকা লাগিয়ে বীরদর্পে ঘুরে বেড়িয়েছে। নৌকায় ভোট দেওয়ার কারণে মানুষের বাড়ি-ঘর এমনকি মানুষকেও জ্বালিয়ে দিছিল খালেদা-নিজামীর সন্ত্রাসীরা।

আজ আওয়ামী লীগের আমলে বিএনপির শীর্ষনেতারা সরকারের দোষ খুজে বের করার কষ্ট না করে বরং বানিয়ে বানিয়ে দোষের গল্প করেন আর ব্যর্থ-ব্যর্থ বলে আওয়াজ তোলেন। তারা একটু ভেবে দেখেন না যে নিজেরা কি করে এসেছেন, তারা এটাও চিন্তা করেন না যে তাদের কৃতকর্মের ইতিহাস বানিয়ে বলা লাগেনা, পত্রিকার পাতাতেই সেসব ইতিহাস লিপিবদ্ধ আছে।

মদ-নারী কেলেংকারি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের অপরাধে সাংবাদিককে মারধর করে বিএনপি নেতা

নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জের ভুলতা ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম দৈনিক যুগান্তর ও মানবজমিনের দুই সাংবাদিককে বেদম মারধর করে। ১২ জানুয়ারি ২০০৩ তারিখে দৈনিক প্রথম আলো-তে প্রকাশিত এক সংবাদে এই তথ্য উঠে আসে। মূলত, আমিনুলের মদ ও নারী কেলেঙ্কারি-বিষয়ক সংবাদ প্রকাশের কারনেই সে দুই সাংবাদিকের ওপর চড়াও হয়। যুগান্তরের প্রতিনিধি মিলন ও মানবজমিনের প্রতিনিধি সোহেল বাড়ি ফেরার পথে আক্রমনের শিকার হন। ঘটনাস্থল থেকে আমিনুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

কুখ্যাত রাজাকার সাকা চৌধুরীর করা মামলায় প্রথম আলো-ডেইলিস্টারের সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিলের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা

২০০৩ সালে ওআইসি-এর মহাসচিব পদে প্রার্থী হয়েছিল খালেদা জিয়ার সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ও সাংসদ, কুখ্যাত রাজাকার সাকা চৌধুরী। এর প্রতিবাদে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি পাঠান। চিঠিতে সাকাচৌ'র বিষয়ে দেওয়া বক্তব্যে নাখোশ হয় রাজাকারপুত্র সাকা এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল এবং চিঠিটি প্রকাশের দায়ে প্রথম আলো-ডেইলি স্টারের দুই সম্পাদকের নামে মানহানির মামলা করে।

মামলা করার সময় আদালত তাৎক্ষনিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেননি। কিন্তু সাকা চৌধুরীর আইনজীবি ও সমর্থকেরা তখনই ওয়ারেন্ট জারি করার জন্য আদালতে চাপ প্রয়োগ করে। সাকা চৌধুরীকে রাজাকার বলার কারণে স্বনামধন্য পত্রিকার সম্পাদকদের হয়রানি করতেও দ্বিধা করেনি বিএনপি। আজ তারা টকশো, প্রেস ব্রিফিংয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে নীতিকথা শোনায়।

সাংবাদিকদের কুপিয়ে মেরে, পিটিয়ে আধমরা করেও ক্ষান্ত হয়নি বিএনপি-ছাত্রদল-যুবদলের সন্ত্রাসীরা

 

সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার লক্ষ্মীখোলা গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে বেলাল হোসেন নামক স্থানীয় এক সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যা করে ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা। প্রথম আলোতে প্রকাশিত খবরে বলা হয় ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সাইকেলে করে বাড়ি ফেরার পথে নির্জন মেঠো রাস্তায় পৌঁছালে তাঁর মোবাইলে বার বার মিসকল দিতে থাকে। মোবাইল পরখ করার জন্য দাঁড়ালে সেখানে ওঁতপেতে থাকা ১০-১২ জন সন্ত্রাসী রামদা-চাইনিজ কুড়াল নিয়ে তার ওপর হামলা চালায় এবং বুকে-পিঠে আঘাত করে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে বেলালের পেট চিরে রেখে যায়। এই ঘটনায় ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিককে গ্রেফতার করে পুলিশ।

দৈনিক জনকন্ঠের সাংবাদিক বাশারকে শরীয়তপুরে ছাত্রদল-যুবদলের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ অপহরন করে নিয়ে ব্যাপক মারধর করে। পরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখান থেকেও বের করে দেয় হামলাকারীরা। ২০০৩ সালের ২১ জুন প্রকাশিত সংবাদে বলা হয় সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি নিয়ে রিপোর্ট করার অপরাধে তাঁর ওপর হামলা চালায় বিএনপি'র ক্যাডাররা। এই হামলার পরে প্রশাসন থেকেও কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। হাসপাতালে, বাড়িতে সবখানে হামলাকারীরা এসে শাসিয়ে গেলেও পুলিশ কিংবা জেলা প্রশাসন থেকে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত