বিএনপির নিঃসঙ্গ পদযাত্রা: রাজনীতির ছদ্মবেশে থাকা অপরাধচক্রের প্রতি গণমানুষের আস্থাহীনতা

829

Published on জুলাই 23, 2023
  • Details Image

বিএনপির হত্যাযজ্ঞ, নাশকতা ও সহিংসতার ইতিহাস এতোই জীবন্ত যে, আন্দোলন-সমাবেশ তো দূরের কথা, পদযাত্রার নামেও সাধারণ মানুষকে পাশে টানতে পারছে না তারা। আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি পদযাত্রার নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে জনসমাগম করার চেষ্টা করছে বিএনপি। তাদের নেতারা বারবার বলছে- আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে দেশের গণমানুষ নেই, তারা বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। কিন্তু বাস্তবে টাকা দিয়ে ভাড়া করা লোক এবং কিছু দলীয় নেতাকর্মী ছাড়া কোনো সাধারণ মানুষকে দেখা যায়নি এসব কর্মসূচিতে।

কারণ বাংলার মানুষ বিএনপির দুরভিসন্ধি বুঝে গেছে। বিএনপির নির্মম অগ্নিসন্ত্রাস ও নির্যাতনের শিকার পোড় খাওয়া মানুষরা জানে, বিভিন্ন ছলাকলার আশ্রয় নিয়ে রাস্তায় লোক নামিয়ে বিদেশিদের কাছে নিজেদের জনপ্রিয় দল হিসেবে দেখাতে চায় বিএনপি। ঠিক এই এজেন্ডা বাস্তবায়ন হলেই, আবারো সহিংসতা শুরু করবে তারা। যেমনটা তারা করেছে ২০১৪ এ ২০১৮ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। 

নির্বাচন এলেই বিএনপি গণমানুষের জীবন ছিনিমিনি খেলতে শুরু করে, এটি নতুন কোনো বিষয় নয়। ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে তারা শত শত মানুষের অঙ্গপ্রতঙ্গ কেটে নিয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচন বানচাল করার জন্য, বিএনপি নেতারা বিদেশি প্রভুদের কাছে ধর্না দিয়ে বলেছে- আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো জনসমর্থন নেই। এরপর তারা শত শত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দিয়েছে রাতের অন্ধকারে। পেট্রোল বোমা ও অগ্নিসন্ত্রাস করে হতাহত করেছে সহস্রাধিক নিরীহ মানুষকে। কিন্তু এরপরেও সাধারণ মানুষ তাদের সঙ্গে তো যায়ইনি, বরং এই হত্যাযজ্ঞ ও নাশকতাকে ঘৃণা করে আরো মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বিএনপি থেকে। বিপরীতে আওয়ামী লীগ সরকার পুরো মেয়াদজুড়ে জনগণের সমর্থন ও সাহায্য নিয়ে দেশজুড়ে উন্নয়ন-কার্য পরিচালনা করেছে। 

পরবর্তীতে ২০১৮ সালে নির্বাচনের নামে একেকটি আসনে ২-৩ জনকে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়ে শত কোটি টাকার মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে তারেক রহমান। পরবর্তীতে মনোনয়ন নিয়ে দলের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং বিএনপির নেতৃত্বের প্রতি গণমানুষের আস্থাহীনতার কারণে গোহারা হারে দলটি। এমনকি নির্বাচনের কয়েকদিন আগে থেকে সাধারণ মানুষণকে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার হুমকি দেয়, এরপর বিভিন্ন স্থানে ভোটকেন্দ্র দখল এবং ব্যালট লুট করে জেতার চেষ্টা করে বিএনপি। কিন্তু তাদের লুটতরাজ ও সীমাহীন নিপীড়ন থেকে বাঁচতে দিনব্যাপী আওয়ামী লীগকে ভোট দেয় জনগণ। ভোটে হারার পর জনগণের ম্যান্ডেটকে বিতর্কিত করতে 'রাতের ভোট' নামে একে বিতর্কিত করার সর্বোচ্চ অপচেষ্টা করে বিএনপি নেতারা। 

কিন্তু দিনব্যাপী শত শত গণমাধ্যম এবং বিদেশি পর্যটকদের সামনে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফলকে স্বাগত জানায় দেশের সাধারণ মানুষ। নাগরিক সমাজ বিএনপির ভোট নিয়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্বকে নাকচ করে দেয় এবং আওয়ামী লীগ সরকারকে উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে উদাত্ত চিত্তে সহযোগিতা করতে থাকে। ফলে বিএনপি আবারো জনগণের কাছে প্রত্যাখাত হয়। 

বিএনপির হাইকমান্ড এবার তাই জনগণকে প্রতারিত করতে নতুন কৌশল নিয়ে মাঠে নেমেছে। তারা এবার পদযাত্রার ছদ্মবেশে সাধারণ মানুষকে মাঠে নামানোর নীলনকশা করেছে। তবে বিএনপির রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গে রক্তপাত, হত্যাযজ্ঞ, নিরীহ মানুষের ওপর লুটপাট, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, জঙ্গিবাদ এসব অঙ্গাঙ্গিভাবে লেগে থাকায়; লোকজন বিএনপির পদযাত্রা নামক নাটক থেকে এখন সতর্কভাবে দূরে থাকছে। সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে যে, বিদেশিদের দেখানোর জন্য প্রথমে বিএনপি নেতারা লোক ভাড়া করে রাজপথে জনসমাগম দেখাতে চাইছে। এরপর সেই জনসমাগম থেকেই লাশ ফেলবে তারা; এরপর আবারো হত্যাযজ্ঞ ও নিপীড়নে মেতে উঠবে এই সহিংস চক্র। তাই দেশের সাধারণ মানুষ সমাজের স্থিতিশীলতা, শৃঙ্খলা ও শান্তি নষ্ট করে বিএনপিকে সমর্থন দেওয়া থেকে সচেতনভাবে বিরত থাকছে। 

বিএনপি প্রকৃতপক্ষে কখনোই জনগণের দল ছিল না। দেশের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্য তারা কখনো জনগণের ম্যান্ডেটের ওপর আস্থা ও শ্রদ্ধা রাখেনি, দলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে বরাবরই সন্ত্রাসের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের চেষ্টা করেছে। এবং যখন তাদের নীলনকশা সফল হয়েছে, তখন তারা মেতে উঠেছে মানুষ হত্যা, অঙ্গ কর্তন, নারী নিপীড়ন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, লুটপাট, জবরদখর ও অর্থপাচারের মতো গর্হিত অপরাধে। বারবার এসব দেখতে দেখতে এখন দেশের মানুষ বুঝে গেছে যে- বিএনপি আসলে কোনো রাজনৈতিক দল নয়, রাজনৈতিক দলের ছদ্মবেশে বিএনপি প্রকৃতপক্ষে একটি মাফিয়া চক্র, এরা সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদের আঁখড়া। তাই আধুনিক যুগের শান্তিপ্রিয় সচেতন মানুষ এসব সন্ত্রাসীদের স্থায়ীভাবে প্রত্যাখান করেছে। 

বাস্তবতা হলো, দেশের মানুষের সমর্থন আছে জন্যই আওয়ামী লীগ ২০০৮ থেকে টানা তিন মেয়াদ সরকার পরিচালনা করে আসছে এবং উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অবকাঠামো ও অর্থনীতির আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে। অন্যদিকে, বিএনপির সঙ্গে দেশের গণমানুষের কোনো সংযোগই নেই। নিজেদের দেউলিয়াত্বের শেষ প্রান্তে এসে বিএনপি এখন সুশীলতার ছদ্মবেশে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার এজেন্ডা নিয়ে মাঠে নেমেছে, এরপরের ধাপেই কিন্তু এরা গণমানুষের রক্তে নিজেদের হাত রঞ্জিত করবে। অন্যান্য বারের মতো এবারও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পদযাত্রার আড়ালে সহিংসতার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। সুতরাং এই খুনিদের ফাঁদে পা দেওয়া থেকে সতর্ক থাকুন, নিজের পরিবার ও সমাজকে নিরাপদে রাখুন।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত