নির্বাচনী ইশতেহার ২০২৪: গণমাধ্যমের জন্য কী করতে চায় আওয়ামী লীগ

416

Published on ডিসেম্বর 28, 2023
  • Details Image

গণতন্ত্র, সুশাসন, জবাবদিহিতা ও উন্নয়নের সঙ্গে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিবিড়ভাবে জড়িত। গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে স্বীকৃত। তাই মুক্ত গণমাধ্যম ও অবাধ তথ্যপ্রবাহের চর্চাকে পাশ কাটিয়ে বা নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমের মাধ্যমে কোনো রাষ্ট্রের উন্নয়ন ও অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব নয়। জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানোর পাশাপাশি মুক্ত গণমাধ্যম জাতিকে আলোর পথ দেখাতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে। বিগত ১৫ বছরে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। এ ধারা ভবিষ্যতেও বজায় রাখা হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীন, নিরপেক্ষ, গণমুখী ও বিশ্বাসযোগ্য গণমাধ্যম গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত। আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি।’

উন্নয়ন ও অগ্রগতি-

তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন এবং তথ্য কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

সরকারের গণমাধ্যমবান্ধব নীতির সুবাদে সারাদেশে বিপুলসংখ্যক পত্রপত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে। দেশে বর্তমানে মিডিয়াভুক্ত পত্রপত্রিকার সংখ্যা ৭০০ এর বেশি।

গণমাধ্যম নীতির কল্যাণে এ পর্যন্ত ৪৫টি বেসরকারি টিভি চ্যানেল, ২৭টি এফএম বেতার ও ৩১টি কমিউনিটি বেতারকে লাইসেন্স এবং ১৪টি আইপি টিভির অনুমোদন প্রদান করা হয়েছে।

গণমাধ্যমকে আরও গণমুখী করতে জাতীয় অনলাইন নীতিমালা অনুসরণে এ পর্যন্ত ১৮৫টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং দেশের প্রতিষ্ঠিত ১৮২টি দৈনিক পত্রিকার অনলাইন নিউজ ভার্সনকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

বর্তমানে দেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলো সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দেশের পত্রিকা/টিভি চ্যানেলগুলোতে বিরোধী দলের কর্মসূচি, মতামত স্বাধীনভাবে প্রচারিত হচ্ছে। এ ছাড়া টিভি চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারিত টক শো, আলোচনা, বিতর্কসহ নানা অনুষ্ঠানে আলোচকরা স্বাধীনভাবে তাদের মতামত প্রকাশ করেন। এ ধরনের স্বাধীন মতপ্রকাশে সরকার কখনো হস্তক্ষেপ করে না বা কোনো ধরণের বাধার সৃষ্টি করে না।

সকল সাংবাদিক হত্যার দ্রুত বিচার করে প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা এবং সাংবাদিক নির্যাতন, তাদের প্রতি ভয়ভীতি-হুমকি প্রদর্শন ইত্যাদি বন্ধ করা হয়েছে।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের গণমাধ্যম দলীয়করণ এবং গোষ্ঠীবিশেষের একচেটিয়া আধিপত্য প্রতিষ্ঠা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অবাধ তথ্যপ্রবাহের পরিপন্থী ছিল। বিপরীতে বর্তমান সরকারের আমলে রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যমে একতরফা দলীয় প্রচার বন্ধ এবং রাজনৈতিক কারণে কর্মকর্তা-কর্মচারী শিল্পী-কলাকুশলীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের অবসান করা হয়েছে।

সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন বিতরণে বৈষম্যমূলক নীতি, দলীয়করণ বন্ধ এবং সংবাদপত্রকে শিল্প হিসেবে বিবেচনা করে তার বিকাশে সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

গণমাধ্যমকর্মীদের কল্যাণে সরকারি অনুদানে পরিচালিত বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের আওতায় ১৩ হাজার ৫১০ জন সাংবাদিককে প্রায় ৪০ কোটি টাকা সহায়তা দেয়া হয়েছে।

করোনাকালীন আর্থিক সহায়তা হিসেবে ৭ হাজার ৯২৯ জন সাংবাদিককে প্রায় ৮ কোটি টাকা সহায়তা দেয়া হয়েছে।

নির্বাচনে ইশতেহারে আওয়ামী লীগের অঙ্গীকার-

*আওয়ামী লীগ সরকার স্বাধীন ও অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করেছে এবং এই ধারা অব্যাহত রাখবে।

*আওয়ামী লীগ সরকার সাংবাদিক হত্যার বিচার ত্বরান্বিত এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পদক্ষেপ নিয়েছে। সাংবাদিক নির্যাতন, তাদের প্রতি ভয়ভীতি-হুমকি প্রদর্শন এবং মিথ্যা মামলা রোধ করা হবে।

*আওয়ামী লীগ সরকার ডিজিটালাইজেশন নীতির আলোকে সংবাদ প্রবাহে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার সমর্থন করে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে নতুন প্রণীত আইন ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩’ অনুযায়ী ব্যক্তির গোপনীয়তা ও তথ্য সংরক্ষণ করা হবে এবং অপব্যবহার রোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে।

*সাংবাদিকদের জন্য নবম ওয়েজ বোর্ডের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। দশম ওয়েজ বোর্ড গঠনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সময়োপযোগী করার ধারা অব্যাহত থাকবে। ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নে বৈষম্য মেনে নেয়া হবে না।

*সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের আওতায় সাংবাদিকদেরকে আর্থিক ও চিকিৎসা সহায়তাকে আরও সম্প্রসারণ করা হবে।

*জাতীয় প্রেসক্লাবের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ও অন্যান্য সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করা হবে।

*সুষ্ঠু ও সুষম বিজ্ঞাপন বণ্টন নীতি অব্যাহত রাখা হবে।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত