বাংলা ভাষার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু ছিলেন আপোষহীন

এম. নজরুল ইসলামঃ বাঙালির মেরুদণ্ড মাতৃভাষা বাংলা-এই সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য পাকি¯ানের জš§ থেকেই বাঙালিরা ছিল সোচ্চার। ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন করাচীতে শুরু হলে পূর্ব বাংলার প্রতিনিধি ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষার ওপর একটি সংশোধনী প্রস্তাবে বলেন, উর্দু এবং ইংরেজীর সঙ্গে বাংলাকেও গণপরিষদের অন্যতম ভাষা হিসেবে ব্যবহার ক...

বাঙালির সংগ্রামী নেতা মুজিব

শেখ রেহানাঃ ১৯৬৬ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি লাহোরে আমার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ৬-দফা দাবি পেশ করেন। ঢাকায় ফিরে ৬-দফার সমর্থনে জনমত তৈরি করতে সারা দেশে তিনি সভা-সমাবেশ করা শুরু করেন। অল্প সময়ের মধ্যে ৬-দফার পক্ষে ব্যাপক গণজোয়ার সৃষ্টি হয়। স্বৈরশাসক আইয়ুব খান ভীত হয়ে পড়েন। শেখ মুজিবকে রুখতে হবে। তিন মাসের মধ্যে বাবাকে আট বার গ্রেফতার করা হলো। আমার &lsquo...

আত্মপরিচয়ের ঠিকানা জানতে মুজিবকে বুকের ভেতর রাখা জরুরি

হামিদ কায়সারঃ বাংলার মাটি বাংলার জল বাংলার প্রকৃতি রোদ হাওয়া তার আপন প্রয়োজনেই জন্ম দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের, কেননা তাঁর জন্ম না হলে বাংলা মা খুঁজে পেত না নিজের সার্বভৌম ঠিকানা। হ্যা, শেখ মুজিবুর নামের প্রচণ্ড আবেগের বিস্ফোরণেই যেমন অভ্যুদয় হয়েছিল বাংলাদেশ নামে বাঙালির একমাত্র স্বাধীন রাষ্ট্রের, তেমনই এ দেশের প্রকৃতিও যেন নিজ হাতে গোপালগঞ্জের এক সাধ...

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড এবং ইতিহাসের দায়

মো সাখাওয়াত হোসেনঃ সবচেয়ে বিশাল ও ভারি যে লাশটি বাংলাদেশ নিজের বুকের কবরে বয়ে চলেছে, সেটি মুজিবের লাশ'—হুমায়ুন আজাদ এ একটি উক্তির মাধ্যমেই শেখ মুজিবের হত্যাকাণ্ডের প্রগাঢ়তা এবং ব্যাপকতা উল্লেখ করা যায়। বিশ্বের ইতিহাসে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড অসংখ্যবার ঘটেছে, ভবিষ্যতেও হয়তবা ঘটতে পারে কিন্তু শেখ মুজিবের হত্যাকাণ্ডের প্রভাব সারা বিশ্বের মেহনতি এবং শোষিত মানুষের...

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড : রক্তক্ষরণ থামেনি বাঙালির হৃদয়ে

অঞ্জন রায়:  চর্যাপদের কবিদের দ্রোহ থেকে কৈবর্ত্য বিদ্রোহ। ফকির বিদ্রোহ থেকে ফরায়েজী আন্দোলন। বাঁশের কেল্লা নিয়ে রুখে দাঁড়ানো তিতুমীর। কলের বোমা হাতে ক্ষুদিরাম বসু। চট্টলার সেনাপতি সূর্যসেন, প্রীতিলতা। ব্যারাকপুরে ব্রিটিশ শাসকের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানো মঙ্গল পান্ডে। বিনয়-বাদল-দিনেশ থেকে সুভাষ চন্দ্র বসু। রবি ঠাকুরের ছুঁড়ে ফেলা নাইট পদক আর নজরুলের দ্রোহ। সব সাহসের ...

চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু

সন্তোষ গুপ্তঃ   বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবেকে হত্যা করা হয়েছে আজ থেকে বিশ বছর আগে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট। তাঁকে হত্যা যারা করেছে সেদিন তাদের দেয়া যুক্তি আর কিছু রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিকদের দেয়া বিবৃতি ও সভা-সমিতিতে তাদের ভাষণের আশ্বর্য মিল দেখে আমাদের মনে কি কখনাে এ ধারণার সৃষ্টি হয়েছে যে, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের মানসিক সহযােগী আমাদের অনেকের মধ্যে রয়ে গেছে। আর এ...

সেকুলার রাজনীতির ধারায় বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের অভিযাত্রা

মোনায়েম সরকার তত্ত্বগতভাবে সেকুলারিজম-এর ধারণা কয়েক শতাব্দী ধরে পাশ্চাত্যে এবং তারপরে প্রাচ্যে বিকাশ লাভ করেছে। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়া উপমহাদেশে, বিশেষত বাংলাদেশে বাস্তব ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় নীতি হিসাবে সেকুলারিজম-এর স্বীকৃতি বঙ্গবন্ধুরই অবদান। শেখ মুজিব বাস্তব ঘটনাবলি অবলোকন করে বুঝতে পেরেছিলেন যে, সাম্প্রদায়িকতা, জাতিবিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, গণহত্যা, যুদ্ধবিগ্রহ মানুষে...

দেশের নামটি বাংলাদেশ, কে রেখেছিলেন এই নাম

মোহাম্মদ হাননান: বাঙালির নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু এদেশের স্রষ্টাই ছিলেন না, দেশটির নামও তিনি রেখেছিলেন। আর এই জন্যই তিনি 'জাতির পিতা শিরোনামে অভিষিক্ত হন। শত সংগ্রাম, জেল, জুলুম, ফাসির কাষ্ঠ- সবকিছু তুচ্ছ করে তিনি বাঙালি জাতির শত বছরের স্বপ্নের দেশ 'বাংলাদেশ’-কে সত্যে পরিণত করে তোলেন। অনেক পিতা-মাতা তাদের সন্তান জন্ম হওয়ার আগেই সন্তানের নাম...

কেন তিনি জাতির পিতা

কবীর চৌধুরী: জাতির পিতা, 'ফাদার অব দি নেশান', একটি বহুল প্রচলিত শব্দগুচ্ছ। জাতি বলতে সেখানে অবশ্য স্বাধীন সার্বভৌম জাতি রাষ্ট্র বোঝায়, নৃতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো জনগোষ্ঠীর প্রতি ইঙ্গিত করে না। আমরা এ কথাও জানি যে, কোনো একক ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে একটি জাতিরাষ্ট্রের জন্ম দেন না বা প্রতিষ্ঠা করেন না, কেউই শুধু তার একক চেষ্টায় পরাধীনতা বা ঔপনিবেশিকতার শৃঙ্খল ছিন্ন করে ব...

বাংলাদেশের চার মূল নীতি: ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তির ওপরেই জাতীয়তাবাদের বিকাশ

বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম একটি স্তম্ভ হলো ধর্মনিরপেক্ষতা। বিভিন্ন সময় এই 'ধর্মনিরপেক্ষতা' শব্দটিকে বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়। অনেকের ধারণা, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মের অনুপস্থিতি, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা,  এরকম অপপ্রচার বিভিন্ন সময় ছড়ানো হয়েছে। কিন্তু আসলেই কী তাই? নাকি ধর্মনিরপেক্ষতা মানে অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নৈরাজ্য সৃষ্টির পথ বন্ধ ক...

ব্রিটিশ নথিঃ ১৯৬৯ সালের অক্টোবরেই পাকিস্তানের ভাবী প্রধানমন্ত্রী ভাবা হতো শেখ মুজিবকে

মিজানুর রহমান খানঃ   শুধু যুক্তরাষ্ট্রই যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছিল, তা নয়। রেখেছিল ব্রিটেনও। ১৯৭১ সালের জানুয়ারির গােড়ায় বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে বেরিয়ে লন্ডন হয়ে দেশে ফেরেন। তখন তাঁকে সরকারপ্রধানের প্রটোকল দেওয়া হয়েছিল। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ ও তাঁর মন্ত্রিসভার মধ্যে এ নিয়ে কোনাে দ্বিধা ছিল না। কিন্তু ...

পাকিস্তানের সাবেক মেজরের ভাষায়ঃ যে রাতে মুজিব বন্দী হলেন

মেজর জেড এ খান (পরে ব্রিগেডিয়ার) ১৯৭০ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৩ কমান্ডাে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক হিসেবে যােগ দেন। এই ব্যাটালিয়নের অবস্থান ছিল কুমিল্লায়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তারের অভিযান পরিচালনা করেন। বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তারের এ অংশটুকু নেওয়া হয়েছে জেড এ খানের দ্য ওয়ে ইট ওয়াজ (ডাইনাভিস প্রাইভেট লিমিটেড, করাচি, ১৯৯৮) থ...

আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাঃ রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান

মােহাম্মদ শাহজাহান:   ২২ ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। গণআন্দোলনের চাপে ৫১ বছর আগে ১৯৬৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের স্বৈরশাসক জেনারেল আইয়ুব কান কুখ্যাত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার এবং শেখ মুজিবসহ সব অভিযুক্তকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ওই মামলার এক নম্বর আসামি। আইয়ুব...

মুজিব ফুটপাতে খেলেন ফুচকা-চটপটি

অজয় দাশগুপ্ত: জীবন নিবেদিত তাঁর বাংলার মানুষের মুক্তির সংগ্রামে। দাঁড়াবার ফুসরৎ যে নেই। মানুষকে পাকিস্তানি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জাগিয়ে তুলতে ছুটে চলেছেন উল্কার মত, এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে, শহর-বন্দর-গ্রামে। গোয়েন্দারা সর্বক্ষণ লেগে রয়েছে তাঁর পেছনে। আর জেলে থাকার সময়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করার সময়েও সর্বক্ষণ গোয়েন্দারা বসে থাকে। ডায়েরীতে দুঃখ করে তিনি লিখেছেন, ...

বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রবাদপুরুষ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়। নয় মাসের যুদ্ধের কথা বলা হলেও বাঙালি ইতিহাসের পাতায় আবহমানকাল ধরেই পরাধীন জাতি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে। পাকিস্তানের দীর্ঘ চব্বিশ বছরের শাসন ও শোষণের বেড়াজাল ছিন্ন করে বাঙালি স্বাধীনতার সূর্য ছিনিয়ে আনে। স্বাধীনতার এই সূর্যকে ছিনিয়ে আনতে বাঙালিকে হাজার বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। ইতিহাসের নানা বাকে নানা ব্যক্তি ...

মুজিববাদ: জাতীয় মুক্তির রূপরেখা ও মানবিক সমাজের দর্পণ

৯ মাস যুদ্ধের পর দীর্ঘ মুক্তি সংগ্রামের অবসান ঘটলো। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বহুল কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জিত হলো। পাকিস্তানিদের বৈষম্য, শোষণ ও নির্যাতন থেকে মুক্তি পেলো সাত কোটি মানুষ। প্রায় দুই যুগের দাসত্বের অবসান ঘটলো। কিন্তু যুদ্ধবিধ্বস্ত এক দেশে মানুষের ঘরে ঘরে স্বাধীনতার অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুফল পৌঁছানোর কোনো উপায় ছিল না। তাই স্বাধীন দেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি ও জা...

বঙ্গবন্ধুর সংসদ জীবনের শেষ দিনটি-

বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমঃ ২৫ জানুয়ারি, ১৯৭৫ ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংসদ জীবনের সর্বশেষ দিন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা। ঐদিন জাতীয় সংসদে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী বিল পাসের মাধ্যমে দেশে শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটে। নতুন ব্যবস্থায় বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতি হন। দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির প্রয়াসে গঠিত হয় একক জাতীয় দল...

১২ জানুয়ারি ১৯৭২ঃ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহন করেন বঙ্গবন্ধু

১২ জানুয়ারি বঙ্গভবনে বিপুল করতালি, জয় বাংলা ও বঙ্গবন্ধু জিন্দাবাদ ধ্বনির মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শপথ নেওয়ার পর তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে ১১ সদস্যের মন্ত্রিসভার নাম দেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার আগে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী তাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতির জনক ও অবিসংবাদিত নেতা, যার ওপর জনসাধারণের পূর্ণ আস্থা রয়েছে...

স্বাধীনতার স্বদেশ আগমন

ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনঃ ৪৯ বছর আগের এই শুভদিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির পিতা হিসেবে বীরের বেশে বহুমূল্যে কেনা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখলেন। অথচ তিনি যে ফিরবেনই তার কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১, পরাজিত দখলদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের লজ্জা শুরু। কিন্তু বিজয়ী জাতি বাঙালির মনে জন্ম নেয় চরম উৎকণ্ঠা। ন্যায়নীতি, সভ্য আচরণের কোনো মানদণ্ডে...

১০ জানুয়ারি ১৯৭২: বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও বিজয়ের পূর্ণতা

কৃষিবিদ দীপক কুমার বনিক দীপু: ১০ জানুয়ারি ১৯৭২, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বিজয়ের পূর্ণতা আসে এই দিনে। পাকিস্তানের কারাগার থেকে দীর্ঘ সারে নয় মাস পর মুক্তি পেয়ে ৯ জানুয়ারি ১৯৭২, বঙ্গবন্ধু যখন লন্ডনের হিথ্রু বিমানবন্দরে পৌছান, তারপরই বাঙ্গালী জাতি জানতে পারে, তাদের প্রানের নেতা পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে। মুহুর্তেই সুরের মূর্ছনার মত ছড়িয়ে পরে এই...