জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে ময়মনসিংহ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ এর উদ্যোগে শোক সমাবেশ

617

Published on আগস্ট 30, 2021
  • Details Image

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে ময়মনসিংহ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ এর উদ্যোগে রবিবার ২৯ আগস্ট ২০২১ তারিখ বেলা সাড়ে ৩ টায় ঐতিহাসিক রেলওয়ে স্টেশন কৃষ্ণচূড়া চত্বরে এক বিশাল শোক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মাননীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী জননেতা শরীফ আহমেদ এমপি। তিনি বলেন ১৫ আগস্ট বাঙালির বেদনার মাস ও শোকাস্রু বিসর্জনের মাস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কাক ডাকা ভোরে জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হারিয়ে জাতি হয়েছে পিতৃহীন। আজ জাতির পিতার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের জন্য বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করছেন। বাংলাদেশ আজ উন্নত সমৃদ্ধ দেশে উন্নীত হওয়ার পথে এগিয়ে চলছে। কিন্তু জাতির পিতার পলাতক খুনিদের এখনো ফাঁসী হয়নি! তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতির পিতার পলাতক খুনি ও ২১ আগস্টের খুনিদের বিচারের রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে জাতিকে কলংকমুক্ত করার দাবী জানান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি জননেতা নির্মল রঞ্জন গুহ। তিনি বলেন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেটে আমরা স্বপরিবারে হারিয়েছি বাঙালি জাতি রাষ্ট্রের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি বলেন স্বাধীনতার পরাজিত শত্রু,১৫ আগস্ট ও ২১ শে আগস্টের খুনিরা এক ও অভিন্ন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করতে এবং দেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় প্রতিষ্ঠিত করতে পরিকল্পিত ভাবে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে বিশ্ব মানবতার জননী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল খালেদা, তারেক, বাবর, হারিছ চৌধুরী, মুজাহিদ,আব্দুস সালাম পিন্টু জঙ্গিনেতা মুফতি হান্নান ও মাওলানা তাজ উদ্দিন গং। সেদিনের সেই লোমহর্ষক ভয়াবহ নৃশংস গ্রেনেড হামলায় সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় জননেত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে গিয়েছেন বলেই বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশের মেগা প্রকল্প সমুহ বাস্তবায়নের পথে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ আলোকোজ্জ্বল সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলছে।

তিনি আরও বলেন ২১ শে আগস্টের খুনিদের বিচার হয়েছে সত্য কিন্তু মূল পরিকল্পনাকারী তারেক জিয়ার যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে! এটা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না! তারেক জিয়াকে ফাঁসী দিতে হবে। জাতির পিতার পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসীর দন্ড কার্যকর করতে হবে। জাতিকে কলংকমুক্ত করতে হবে। তারেক জিয়া লন্ডনে বসে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি, ষড়যন্ত্রকারী, ঘাতকচক্রকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তাদেরকে কঠিন শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের সকল নেতাকর্মীকে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি চক্রের অপতৎপরতা রুখে দিতে সবসময় সজাগ থাকার নির্দেশ দেন।

প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক জননেতা একেএম আফজালুর রহমান বাবু। তিনি বলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে গিয়ে ২১ বার ষড়যন্ত্রকারী ঘাতকচক্রের হামলার শিকার হয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা শত সহস্র ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছেন। খুনী জিয়াউর রহমান জাতির পিতার খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে যোগ্যতা না থাকা সত্বেও বিভিন্ন দূতাবাসে চাকুরী দিয়েছে! আর খালেদা জিয়া স্বাধীনতার শত্রু নিজামী মুজাহিদদের মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়ীতে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তে ভেজা লাল সবুজের পতাকা তুলে দিয়েছে! জননেত্রী শেখ হাসিনা বিলিয়ন ডলারের লবিস্ট আর বিশ্বমোড়লদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। তাদের বিচার করেছেন। জাতিকে কলংকমুক্ত করেছেন। ২১শে আগস্টের ঘাতক চক্রকে বিচারের আওতায় এনেছেন। তিনি অবিলম্বে জাতির পিতার পলাতক খুনি ও ২১ শে আগস্টের খুনিদের বিচারের রায় কার্যকরের দাবি জানান। পাশাপাশি ঘটনার নেপথ্যে জড়িত থাকা কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচন করে বিচারের আওতায় আনার দাবি করেছেন। তিনি বলেন ষড়যন্ত্রকারী অপশক্তিচক্র এবং ২১শে আগস্টের ঘাতক তারেক জিয়া লন্ডনে বসে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। যেকোন মূল্যে ষড়যন্ত্রকারী অপশক্তি চক্রকে রুখে দিতে হবে। স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রশ্নে যেকোন ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত আছে। যেকোন মূল্যে ষড়যন্ত্রকারী অপশক্তির অপতৎপরতা রুখে দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন স্কুল জীবন থেকেই ছাত্র রাজনীতির সাথে আমার নিবিড় সম্পর্ক। ১৯৮১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশে ফিরে আসলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণসঞ্চার হয়! ছাত্রলীগ কর্মী হওয়ার কারণে আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে রাজনীতি শেখার সুযোগ পাই। তিনি আমাদের রাজনীতির মহান শিক্ষক। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন কিভাবে দূর্যোগে দূর্বিপাকে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয়। বন্যা, ঘূর্ণিঝড় সহ বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক দূর্যোগে তিনি আমাদের সরাসরি দিকনির্দেশনা দিতেন। ১৯৯৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলার প্রধানমন্ত্রী থাকাবস্থায় স্ব শরীরে দূর্গত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তখন মাননীয় নেত্রী নিজে হাতে রুটি বানিয়ে মানুষকে দিয়েছেন। তখন স্যালাইন তৈরী করে মানুষকে দেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। ছাত্রলীগে আমি যে কয়বার পদ পদবী পেয়েছি দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজেই আমাকে দিয়েছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ এর তৃতীয় জাতীয় সম্মেলনে আমাকে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেন। দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই শুরু হয় করোনা মহামারী! সারা পৃথিবীতে শুরু হয় লকডাউন। জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ভয়কে জয় করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মীরা মানুষের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করে।

করোনা মহামারীর শুরু থেকে ময়মনসিংহেও সচেতেনতা সৃষ্টি করতে মাইকিং, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ, দরিদ্র কৃষকের ধান কেটে মাড়াই করে ঘরে তুলে দেওয়া, বৃক্ষরোপন ও বিতরণ, ফ্রি টেলিমেডিসিন সেবা, অ্যাম্বুলেন্স ও অক্সিজেন সেবা, নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ এবং হ্যালো স্বেচ্ছাসেবক লীগের মাধ্যমে মানুষের ঘরে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া অব্যাহত আছে। শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। নদী,পুকুর জলাশয়ে মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়েছে। পবিত্র ঈদ ও পূজায় জননেত্রী শেখ হাসিনার উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মূল্যের ২টি BiPAP machine, মূল্যের ২০ পিস, Hi Flow Mask, মূল্যের ২০ pkt BiPAP Full Face Mask, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, পিপিই, অক্সিজেন মাস্ক সহ অন্যান্য চিকিৎসা সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে। লাশ দাফন টিম ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের লাশ সৎকার টিমের নিকট সৎকার সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে। দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পালন করতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ সব সময় মাঠে আছে এবং থাকবে। এই আঁধার কেটে যাবে, বাংলাদেশ করোনা ভাইরাস মুক্ত হবে ইনশাআল্লাহ। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আলোকোজ্জ্বল সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জননেতা নাজিম উদ্দিন আহমেদ এমপি, ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল এমপি, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জননেতা মোঃ ইকরামুল হক টিটু, ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ আলী পাঠান, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডঃ মোঃ জহিরুল হক খোকা, ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ এহতেশামুল আলম,ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি মোঃ আমিনুল হক শামীম সিআইপি, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সহ সভাপতি মজিবুর রহমান স্বপন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদুর রহমান খান ইরান, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মনি।

আরও উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য গোলাম রাব্বানী, তপো গোপাল ঘোষ,সৈয়দ এহতেশামুল হক সুমন, আবু জাফর। সভাপতিত্ব করেন ময়মনসিংহ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি এড, এবিএম নুরুজ্জামান খোকন ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক উত্তম চক্রবর্তী রকেট।
আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ও ময়মনসিংহ জেলাও মহানগরের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত