বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিরোধে সর্বদা প্রস্তুত থাকতে সশস্ত্রবাহিনীকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ

699

Published on মার্চ 29, 2022
  • Details Image

বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিরোধে সশস্ত্র বাহিনীকে সবসময় প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, ‌“আমরা কারও সাথে যুদ্ধ করতে চাই না, যুদ্ধ আমরা করব না, জাতির পিতা আমাদের যে পররাষ্ট্র নীতি শিখিয়ে গেছেন ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়’ আমরা সেই নীতিতে বিশ্বাস করি।

“‌কিন্তু আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। কখনও যদি বহিশত্রুর আক্রমণ হয় আমরা যেন তা যথাযথ ভাবে প্রতিরোধ করতে পারি এবং আমরা যেন আমাদের দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারি।”

মঙ্গলবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে শরীয়তপুরের জাজিরায় ‘শেখ রাসেল সেনানিবাস’ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়তে সরকারের নেওয়া কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সশস্ত্র বাহিনীকে আমরা আরও উন্নত-প্রশিক্ষিত, সমৃদ্ধশালী করার পদক্ষেপ নিয়েছি। আমি মনে করি আমাদের সশ্রস্ত্র বাহিনীর প্রজ্ঞা, পেশাগত দক্ষতা, কর্তব্য-নিষ্ঠা দিয়ে আমাদের দেশের সুনাম বৃদ্ধি করবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ এর আলোকে জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ২০১৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেড প্রতিষ্ঠা করা হয়।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এই ব্রিগেড শেখ রাসেল সেনানিবাসের মাওয়া এবং জাজিরা প্রান্তে স্বপ্নের পদ্মা সেতু প্রকল্পের নিরাপত্তা বিধানে সফলভাবে আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এই সেনানিবাসের ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেড ও অধীনস্থ ইউনিটসমূহ নিরলসভাবে পরিশ্রম করে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।”

সরকারপ্রধান বলেন, শেখ রাসেল সেনানিবাস এখন একটি পূর্ণাঙ্গ সেনানিবাসে পরিণত হয়েছে; যেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যদের জন্য সকল প্রকার প্রশিক্ষণ এবং প্রশাসনিক সুবিধা তৈরি করা হয়েছে।

“শুধু এই নির্মাণ নয়, এই সেতুর নিরাপত্তা বিধানও একান্তভাবে প্রয়োজন। আর সেই নিরাপত্তা বিধানের জন্যই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। যেহেতু দ্রুত শুরু হয়ে যাবে যান চলাচল, কাজেই সেতুর নিরাপত্তা একান্তভাবে অপরিহার্য।”

বঙ্গবন্ধুর ছোট ছেলের নামানুসারে নতুন সেনানিবাসের নাম ‌‘শেখ রাসেল সেনানিবাস’ রাখায় সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‌“আমার দুই ভাইই তো আসলে সেনাবাহিনীর সদস্য ছিল (ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল)। ... সবার ছোট রাসেল, তাকেও আমরা হারিয়েছি।

“রাসেলের আকাঙ্ক্ষা ছিল সামরিক অফিসার হবে, হতে পারেনি। আমি সেনাবাহিনীপ্রধান ও সদস্যদের ধন্যবাদ জানাই, আজকে এই সেনানিবাসের নাম শেখ রাসেল সেনানিবাস রাখা হয়েছে। তার আকাঙ্ক্ষা পূরণ না হলেও রাসেলের নামটা সেনাবাহিনীর সাথে যুক্ত থাকল।”

শেখ হাসিনা বলেন, “পদ্মা সেতুর সার্বিক নিরাপত্তা বিধানের পাশাপাশি সেনানিবাসের মাধ্যমে এ অঞ্চলের মানুষের সার্বিক উন্নয়ন হবে। কারণ আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যেখানেই থাকুক, যেখানেই তাদের সেনানিবাস আছে, সাথে সাথে ওই এলাকাগুলোতেও কিন্তু অনেক উন্নতি হয়।

“সেখানে স্কুল-কলেজ, চিকিৎসাকেন্দ্র বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে ওঠে। আশাপাশের মানুষগুলোর আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অনেক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। তারাও লাভবান হয়।”

দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে পদ্মা সেতু নির্মাণের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজকে সেই পদ্মা সেতু আমরা নির্মাণ করেছি এবং তার কাজও প্রায় সম্পন্ন। জাতির কাছে কৃতজ্ঞ তাদের সাহসী ভূমিকা ও সমর্থন পেয়েছি বলেই এটা করা সম্ভব হয়েছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক বন্ধুপ্রতিম দেশও আমাদের সমর্থন দিয়েছে।

‌“এ সেতু নির্মাণের ফলে আমি মনে করি, আমাদের জিডিপিতে অন্তত আরও এক ভাগ থেকে দুই ভাগ প্রবৃদ্ধি সংযুক্ত হবে। অর্থাৎ উন্নয়নের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারব, সেটা আমি বিশ্বাস করি।”

এ সেতুর ফলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি আর্থ সামাজিক উন্নতিও হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

“তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করা বা তাদের যোগাযোগ একটি সেতুর নির্মাণের মধ্যে দিয়ে একটা এলাকা উন্নত হয়। আজকে আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। আমরা প্রতিটি গৃহহারা মানুষকে ঘর তৈরি করে দিচ্ছি।”

শেখ রাসেল সেনানিবাসে এ অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত