স্মার্ট বাংলাদেশ: বঙ্গবন্ধুর পথ ধরে শেখ হাসিনার সাহসী অভিযাত্রা

1565

Published on ডিসেম্বর 18, 2022
  • Details Image

তন্ময় আহমেদ: 

২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করা এবং ডিজিটাল রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা। ২০২১ সালের মধ্যে তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। এই সময়ের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র দূর করে দেশের মানুষকে স্বনির্ভর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সব রকমের প্রযুক্তি ও অবকাঠামোগত সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। সেসব সুবিধা কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক জীবন বদলে ফেলেছে বাংলার মানুষ। একইসঙ্গে ডিজিটাল সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে স্মার্ট ভবিষ্যৎপ্রজন্ম সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে আওয়ামী লীগ সরকার। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে এই সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের একটি মৌলিক ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।

কারণ একটি দেশকে স্মার্ট রাষ্ট্র হিসেবে গড়তে হলে, তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা ও অর্থনৈতিক সক্ষমতার পাশাপাশি জ্ঞানভিত্তিক সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। আর সেটি তখনই পুরোপুরিভাবে সম্ভব, যখন সুশিক্ষিত ও আত্মপ্রত্যয়ী মায়েদের কোলে বেড়ে উঠবে একটি প্রজন্ম। উগ্রবাদমুক্ত আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত, স্বাবলম্বী, কর্মঠ নারীদের সন্তানরা ছোট থেকেই ডিজিটাল প্রযুক্তি শিক্ষার মাধ্যমে মূল্যবোধসম্পন্ন, সৃষ্টিশীল ও দেশপ্রমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠলেই অর্জিত হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশ যেমন এক যুগ আগে অসম্ভব মনে হয়েছিল, কিন্তু আজ তা দৃশ্যমান। তেমনি স্মার্ট বাংলাদেশ অর্জনও একটি চলমান প্রক্রিয়া, একটি প্রজন্মকে মনস্তাত্ত্বিক বিবর্তনের ভেতর দিয়ে নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জনের পরিকল্পনা দুঃসাহসী ও বৈপ্লবিক। তবে ভবিষ্যতের জন্য টেকসই জাতি ও রাষ্ট্র গড়ে তুলতে এর কোনও বিকল্প নাই।

একারণে ১২ ডিসেম্বর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস-২০২২’ উদযাপন উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে ডিজিটাল থেকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ রূপান্তরে কাজ করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার। স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি ভিত প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “সরকার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার চারটি ভিত্তি সফলভাবে বাস্তবায়নে কাজ করছে। এগুলো হচ্ছে—স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি। স্মার্ট বাংলাদেশে প্রযুক্তির মাধ্যমে সবকিছু হবে, নাগরিকেরা প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হবে। এর মাধ্যমে সমগ্র অর্থনীতি পরিচালিত হবে। সরকার ও সমাজকে স্মার্ট করে গড়ে তুলতে ইতিমধ্যেই বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পাদিত হয়েছে।”

এর আগে, ‘স্ট্রাইভিং টু রিয়ালাইজ দ্য আইডিয়ালস অব মাই ফাদার’ শিরোনামে লেখা দীর্ঘ প্রবন্ধে টেকসই ও উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার খুঁটিনাটি বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিরক্ষরতা, দারিদ্র্য, স্বৈরাচার, সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদের কড়াল গ্রাস থেকে মানুষকে মুক্ত করে আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথযাত্রা হিসেবে তিনটি বিশেষ ধাপের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। সেগুলো হলো– বঙ্গবন্ধুর আদর্শ উপলব্ধি ও বাস্তবায়নের সংগ্রাম, জনগণের সাতটি মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য পরিকল্পনা ও অক্লান্ত শ্রমের মাধ্যমে বা বাস্তবায়ন করা, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবনমান আধুনিক পৃথিবীর উপযোগী করে তোলার জন্য দেশকে প্রস্তুত করা।

বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনাগুলোকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ কর্মসূচিতে পরিণত করছেন শেখ হাসিনা

নিজের লেখা প্রবন্ধে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা লিখেছেন, ‘আমার বাবার আইডিয়াগুলোকে আমি দেশ গঠনের জন্য বাস্তব কর্মসূচিতে পরিণত করতে পেরেছি। কারণ দেশকে নিয়ে আমার বাবার সারা জীবনের চিন্তা-চেতনা এবং পরিকল্পনাগুলোর ব্যাপারে আমার জানাশোনা ছিল এবং বাবার সংস্পর্শে থাকার কারণে বিষয়গুলো আমি বুঝতে শিখেছিলাম। ফলে বাংলাদেশ পুনর্গঠনের জন্য বাবার দর্শন বাস্তবায়ন করতে সুবিধা হয় আমার। বাবার যে মূলনীতিগুলো আমাকে সবসময় পথ দেখিয়েছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- সবসময় অবিচল থাকা, সহানুভূতিশীল থাকা, কর্মপদ্ধতি ঠিক করা এবং তা বাস্তবায়ন করা।’

আসুন তাহলে, একটু বোঝার চেষ্টা করি– বলা চলে একরম ইন্টারনেটহীন বিশ্বে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে কীভাবে স্মার্ট রাষ্ট্র হিসেবে গড়তে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। মনে রাখবেন, আজ যে ‘স্মার্ট প্রজন্ম’ অর্জনের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ, তার ভিত্তি কিন্তু বঙ্গবন্ধুর হাতের স্থাপন করা। স্বাধীনতাপরবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলার শুরুতেই তিনি তৎকালীন ৮০ শতাংশ জনগণের বসবাসস্থল গ্রামগুলোকে স্বনির্ভর করার উদ্যোগ নেন। এমনকি নতুন প্রজন্মের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা, নারী শিক্ষা, সর্বোস্তরের মানুষের জন্য সাম্যভিত্তিক অর্থনৈতিক মুক্তি, অসাম্প্রদায়িক সমাজব্যবস্থা কায়েম, মানবিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য আমৃত্যু সংগ্রাম করেছেন জাতির পিতা।

এবিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নিজেই জানাচ্ছেন, ‘কীভাবে কৃষিভিত্তিক উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে প্রত্যেকটি গ্রামকে স্বনির্ভর করে তোলা যায়– সেই বিষয়ে তিনি (বঙ্গবন্ধু) বলতেন। তিনি স্বপ্ন দেখতেন- দেশে আধুনিক শিল্পায়ন, সড়ক-নির্মাণ, নদী খনন, রেল সংযোগের পরিধি বাড়ানো, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ বহুমুখী ক্ষেত্রে দ্রুত দেশকে পুনর্গঠিত করার। বঙ্গবন্ধু চাইতেন- প্রতিটি গ্রামে গ্রামে ধানের জমির পাশ দিয়ে ভালো সড়ক হবে, যাতে কৃষকদের প্রতিষ্ঠা পেতে সুবিধা হয়। এছাড়াও গ্রামে গ্রামে স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ সামাজিক জীবনের প্রয়োজনীয় সব সুবিধা গ্রামের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি।’

যুগের চাহিদা মিটিয়ে আজ ডিজিটাল সময়ে এসে একটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার অনুপ্রেরণাও বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-চেতনা থেকে পেয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে তিনি লিখেছেন, ‘আমার বাবার স্বপ্ন ছিল একটি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে সর্বোস্তরের মানুষের জন্য উন্নত জীবন ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে এবং তাদের ভাগ্য পরিবর্তন হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, আমার বাবা বিশ্বাস করতেন যে বিভিন্ন উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশের পরিস্থিতি উন্নতি করা সম্ভব। তার এসব চিন্তা-চেতনা এবং বিশ্বাসগুলোই আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা এবং অনুপ্রেরণা।’

এজন্য ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য পূরণের সাথে সাথে কৃষি, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তিখাতে উদ্ভাবনের ওপরও সমান গুরুত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। ফলে জলবায়ু ও লবণসহনীয় এবং অধিক পুষ্টিকর ধান, সর্বোস্তরের মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণে নতুন জাতের মাছ, বারোমাসি সবজি ও ফলের নতুন জাত উদ্ভাবন- প্রভৃতির মাধ্যমে দেশের উৎপাদন ব্যবস্থা এক নতুন উচ্চতা পেয়েছে আজ। উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে নিশ্চিত হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার। গ্রামের একজন ক্ষুদ্র চাষি পর্যন্ত এখন নিমিষেই খোঁজ রাখতে পারেন পুরো বিশ্বের, ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে বৈষম্যহীন অংশগ্রহণমূলক সমাজ।

যেভাবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ অর্জনের পথে ধাবিত হয়েছে আওয়ামী লীগ

বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নে স্বনির্ভর এবং আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর প্রথমেই গণমানুষের দিন বদলের জন্য সাতটি লক্ষ্য পূরণের উদ্যোগ প্রধানমন্ত্রী নেন শেখ হাসিনা। সেই লক্ষ্যগুলো হলো: কৃষি ও খাদ্যতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এবং সর্বোস্তরের মানুষের জন্য পুষ্টি নিশ্চিত করা, সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা, শতভাগ শিক্ষা, অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষদের জন্য আশ্রয়ণ, নারী এবং পিছিয়ে পড়ে জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিয়ে আসা, শিশুদের জন্য কল্যাণকর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত এবং গণমানুষের আর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। মানুষের জন্য এসব লক্ষ্য অর্জনে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এবং প্রণোদনা দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। ফলে গত এক যুগে পুরোপুরি বদলে গেছে বাংলাদেশ।

গ্রামে গ্রামে পাকা সড়ক, সারা দেশে চার ও ছয় লেনের রাস্তা, ব্রিজ, টানেল এবং প্রচুর অবকাঠামো নির্মাণের ফলে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে যোগাযোগ ব্যবস্থায়। যার ফলে বিশেষভাবে উপকৃত হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতির সঙ্গে দেশের প্রায় ৪৩ শতাংশ মানুষ। এমনকি সর্বোত্র বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া এবং তথ্য-প্রযুক্তির শিক্ষার ব্যবস্থা করায় সৃষ্টি হয়েছে নতুন নতুন কর্মসংস্থান, অর্থনীতির পালে লেগেছে নতুন হাওয়া। এরপর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে অর্থ লেনদেন ব্যবস্থা চালু করায় অর্থনৈতিক অন্তর্ভূক্তি বেড়েছে গণমানুষের। এমনকি করোনার মতো মহামারি মোকাবিলা এবং মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পাঠিয়ে বিশ্বকে চমকে দিয়েছে বাংলাদেশ। ২০০৯ সালের আগের বাংলাদেশের মানুষের জীবনাচার এবং ২০২২ সালে এসে মানুষের চিন্তাধারা ও জীবনযাত্রার পার্থক্য পর্যবেক্ষণ করে দেখুন- মেলাতেই পারবেন না, পুরোটাই বদলে গেছে। একজন প্রান্তিক মানুষের সার্বিক চলনেও কিন্তু আমূল পরিবর্তন এসেছে।

নতুন প্রজন্ম যাতে এই ডিজিটাল সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজেদের কর্মক্ষম করে তুলতে পারে, সেজন্য শুরু থেকেই প্রাইমারি থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত ২ কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন উপবৃত্তি এবং বৃত্তি দিচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার। এরমধ্যে দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীকে কর্মক্ষম ও শিক্ষিত করে তোলার বিষয়টিকে দেওয়া হয়েছে বিশেষ অগ্রাধিকার। স্বাধীনতার পর সমাজের মূলস্রোত থেকে পিছিয়ে পড়া নারীদের শিক্ষিত ও স্বনির্ভর করার জন্যই বাধ্যতামূলক শিক্ষা, উপবৃত্তি ও সরকারি চাকরিতে কোটা সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন বঙ্গবন্ধু। সেই ধারাবাহিকতাতেই পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার নারী নীতি প্রণয়ন করে জাতীয়ভাবে নারীদের বিকশিত হওয়ার সুযোগ সুরক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে।

এই শিক্ষিত ও স্বনির্ভর নারীদের হাত ধরে যে নতুন প্রজন্মের আবির্ভাব ঘটবে, আশা করাই যায় যে– তারা শৈশব থেকেই আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়ে উঠবে। মানবিক, মূল্যবোধসম্পন্ন ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ একটি স্মার্ট রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য ভিত্তি হিসেবে মূল যে কাজগুলো করা প্রয়োজন, আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার বিশেষ তত্ত্বাবধানে তা ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। এজন্য নিজের লেখায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং তার কর্মপরিকল্পনা অনুসরণ করেই আমরা আজ এতোদূর আসতে পেরেছি এবং তার স্বপ্ন পূরণের জন্য এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার দুঃসাহস দেখাতে পারছি।’

স্মার্ট বাংলাদেশ: টেকসই রাষ্ট্র এবং দক্ষ-মানবিক জাতি

হাজার বছরের শোষণ ও শৃঙ্খল থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করার লক্ষ্য নিয়েই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দুই যুগের নিরলস সংগ্রাম ও অজস্র নেতাকর্মীর আত্মদানের বিনিময়, অবশেষে বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে এই দলটিই। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার আন্দোলন, স্বৈরশাসকদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য তুমুল আন্দোলন, স্বাধীনতা অর্জনের পর জাতীয় মুক্তির জন্য অব্যাহত সংগ্রাম চালিয়ে গেছে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী এই দল। এমনকি উগ্রবাদ-জঙ্গিবাদের বিষাক্ত ছোবল থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত রাখতে এবং বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে একটি আত্মমর্যাদাসম্পন্ন গর্বিত জাতি হিসেবে সমুন্নত রাখতে এখনো কাজ করে চলেছে আওয়ামী লীগ।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অনেক বর্ষীয়ান নেতানেত্রীর ত্যাগের বিনিময় উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে এই দলটি। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং বাঙালি জাতির মুক্তির সঙ্গে এই দলের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। অজস্রবার নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েও কখনও দেশপ্রেম ও মানবকল্যাণমূলক ভূমিকা থেকে বিচ্যুত হয়নি এই দলের লক্ষ-কোটি কর্মীরা। বঙ্গবন্ধুর হাতে প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন বাংলাদেশকে হাজারো প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে ডিজিটাল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যেহেতু বাংলাদেশকে টেকসই রাষ্ট্র এবং বাঙালি জাতিকে স্মার্ট জাতি হিসেবে গড়ে তোলার আদর্শিক অভিযাত্রা শুরু করেছেন; সময়ের পরিক্রমায় প্রতিটি দেশপ্রমিক বাঙালি নিশ্চই একদিন নিজ দায়িত্বে নিজেদের স্বার্থে এই আদর্শ বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখবে।

জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।

লেখক: সমন্বয়ক, সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)। সদস্য সচিব, সাইবার মনিটরিং সেল এবং সদস্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত